কলকাতা: কোভিড জয় করে ফিরলেও স্বস্তি নেই। সাম্প্রতিককালে কোভিডে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে অন্য লক্ষণ। আপনার অজান্তে শরীরে বাসা বাঁধছে এই রোগ।


কোভিড রোগীদের মধ্যে মিউকোরমাইকোসিস


করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত বিশ্ব। ভারতে বাগে আনা যাচ্ছে না করোনা পরিস্থিতি। এরকম অবস্থায় নতুন করে চিন্তা বাড়াচ্ছে আরও এক গবেষণা। যেখানে বলা হয়েছে, করোনা রোগী সেরে উঠলেও তাদের দেহে দেখা দিচ্ছে মিউকোরমাইকোসিস-এর মতো রোগ। হাসপাতালে থাকাকালীন বা কোভিড যুদ্ধে জয়ী হলেও এই রোগের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে রোগীর।


এই মিউকোরমাইকোসিস আসলে কী ?


মিউকোরমাইকোসিস আগে জাইগোরমাইকোসিস নামে পরিচিত ছিল। আসলে এই রোগ হল ছত্রাকজনিক সংক্রমণ। মিউকোরমাইসেটস থেকেই এই ধরনের সংক্রমণের সৃষ্টি হয়। যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়, তাদের শরীরেই বাসা বাঁধে এই রোগ। এই রোগের ফলে সংক্রমণের সঙ্গে পাঞ্জা লড়তে পারেন না আক্রান্ত। মিউকোরমাইকোসিসের ফলে কোভিড যুদ্ধে জয়ীদেরও সাইনাস ব্রেইন ও ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়।


কোভিড১৯-এর সঙ্গে মিউকোরমাইকোসিসের সম্পর্ক


Sars Covid-2 ভাইরাস শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতাকে টার্গেট করে। চিকিৎসকরা বলছেন, অনেক কোভিড রোগীর ক্ষেত্রেই কড়া ওষুধ বা স্টেরয়েড দেওয়া হয়। যার ফলে রোগীর দেহে অনেক সময় রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমে যায়। স্টেরয়েড দেওয়ার ফলে অনেকের ব্লাড গ্লুকোজ লেভেল কমে যাচ্ছে। বিশেষ করে এই স্টেরয়েডের ফলে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন ডায়াবেটিস রোগীরা। এই ওষুধগুলি নেওয়ার ফলে ফাঙ্গাল ইনফেকশন হয় রোগীর দেহে।


রিস্ক ফ্যাক্টর


হাই ব্লাড সুগার লেভেল ও রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কম এরকম রোগীর ক্ষেত্রে সহজেই মিউকোরমাইকোসিস শরীরে ঢুকতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে সব কোভিড রোগী সুস্থ হতে স্টেরয়েডের ব্যবহার করছেন, তাদেরও এই মিউকোরমাইকোসিস হতে পারে।


মিউকোরমাইকোসিসের লক্ষণ বা উপসর্গ


মিউকোরমাইকোসিস মূলত নাক, চোখ, মস্তিষ্ক ও সাইনাসকে টার্গেট করে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, সুস্থ হয়ে ওঠার পথে করোনা রোগীর মুখ ফুলে যায়। শরীরে কিছু জায়গা ব্যাথার সঙ্গে সঙ্গে অসাড় হয়ে যায়। নাক দিয়ে প্রায়শই তরল জাতীয় কিছু পড়তে থাকে। সেটা রক্তজাতীয় কিছু তরল বা কালচে বাদামি রঙের তরল হতে পারে। এই সংক্রমণের ফলে চোখ ফুলে যায়।


মিউকোরমাইকোসিসের ট্রিটমেন্ট


কোনওভাবে শরীরে মিউকোরমাইকোসিসের লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বহু ক্ষেত্রেই অ্যান্টি ফাঙ্গাল মেডিসিন এই পরিস্থিতি থেকে রোগীকে সুস্থ করে তোলে। তবে এ বিষয়ে চিকিৎসককে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ হওয়া উচিত। প্রয়োজনে মারাত্মক কিছু ক্ষেত্রে মৃত টিস্যুগুলি তুলে ফেলতে অস্ত্রোপচারের পথে হাঁটতে হয় রোগীকে।