সন্দীপ সরকার, ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: তাপমাত্রার পারদ চড়ার সঙ্গে সঙ্গে হঠাৎই বাড়ছে জ্বর। আবহাওয়ার পরিবর্তনের এই সময়টায় প্রতি বছরই জ্বরের প্রকোপ বাড়ে। তবে এবার ছোট থেকে বড় সকলেরই জ্বরের সঙ্গে প্রকট হচ্ছে আরেকটি সমস্যা। দেখা দিচ্ছে গা-হাত পা ব্যথা। সেই সঙ্গে ভোগাচ্ছে র্যাশের সমস্যা। পরীক্ষা করালে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ধরা পড়ছে ডেঙ্গি। তাহলে কি এবার বর্ষা পড়ার আগেই থাবা বসাল এই মশাবাহিত রোগ ? তাহলে কি এবার সারাবছরই ডেঙ্গি থেকে কোনও স্বস্তি নেই ?
পরিসংখ্যান কিন্তু সত্যিই ভয় ধরাচ্ছে। মার্চ মাসে রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১০৭ জন। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জয়দের রায় জানালেন, 'আগে বর্ষার সময় ডেঙ্গি হত। এখন অসময়ে ডেঙ্গি হচ্ছে। এর কারণ হতে পারে ভাইরাসের চরিত্র বদলাচ্ছে'
শীত গ্রীষ্ম,বর্ষা - মশার উপদ্রব এখন সর্বক্ষণের সঙ্গী। শহর হোক বা জেলা, প্রায় সারা বছরই ডেঙ্গির আতঙ্ক লেগেই থাকে। বছরের শুরু থেকেই কার্যত ডেঙ্গির উপদ্রব বাড়ছে। জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত পর্যন্ত রাজ্যে মোট ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ৫৬০ জন।
মাইক্রোবায়োলজিস্ট সৌগত ঘোষ জানাচ্ছেন,'ডেঙ্গি সারবছরই থাকে। যখন খুব বেশি হয় তখন সাঙ্ঘাতিক ভাবে ছড়ায় সংক্রমণ। সামান্য জল জমলেই ডেঙ্গির সমস্যা দেখা দেয়। তাই মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে।'
একে ডেঙ্গিতে রক্ষা নেই আবার দোসর অ্যাডিনো ভাইরাস । ২০২৩ এর শুরুতে রীতিমতো ভয়ঙ্কর হয়েছিল বঙ্গে অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণ। এবারও ভয় ধরাচ্ছে অ্যাডিনো। আবহাওয়ার বদলের জেরে বড়দের পাশপাশি জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরাও। জ্বরের সঙ্গে থাকছে গলা ব্যথা, বমি, পেট ব্যথার মতো উপসর্গ। বহু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে শিশু। গতবছর জানুয়ারিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছিল আর এই বছর ফেব্রুয়ারিতে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। অ্যাডিনো ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে এই মুহূর্তে কলকাতার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ২০ জন শিশু। এদের মধ্যে ৮ জন শিশু ICU -তে চিকিৎসাধীন। ২৪ তারিখ পার্ক সার্কাসের শিশু হাসপাতালে অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রমিত ৬ বছর বয়সি এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রভাসপ্রসূন গিরি জানালেন,' গত এক মাসে পার্ক সার্কাসের এই শিশু হাসপাতালে ৮০ থেকে ৯০ জন অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুর চিকিৎসা হয়েছে। আড়াই সপ্তাহ ভেন্টিলেশনে থাকার পর ৬ বছর বয়সের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।'আবহাওয়ার বদলের জন্য শিশুদের মধ্যে এই ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন :