কলকাতা : আকাশে আলোর মেঘ...সেই আলো থেকে রাস্তায় চুঁইয়ে পড়া টুকরো টুকরো রঙ....চাঁদ, সূর্য, গ্রহ, তারা৷ গ্রহের রঙ বদলায়, ঋতুর মত৷ দরজা-জালনা-বারান্দায় আজ অসংখ্য আলোকবিন্দু৷ স্কাইস্ক্র্যাপার আর নিওন সাইন ছাপিয়ে মোম আর প্রদীপের হাজারো ওয়াট৷ দীপাবলি মানে সপ্তাহব্যাপী উৎসব। 


ধনতেরস দিয়ে শুরু হয় পাঁচ দিনের দীপাবলি উৎসব।  আজই  ধনতেরস। এরপর নরক চতুর্দশী। তারপর কালীপুজো। তারপর একদিনের ব্যবধানে ভাইফোঁটা। 


ধনলক্ষ্মীর আরাধনা দিয়ে শুরু হয় উৎসব। কার্তিক মাসের ত্রয়োদশী। এই তিথিতে হয় ধনতেরস উৎসব। ধনদেবীর আরাধনার এক বিশেষ দিন। দীর্ঘদিন ধরে উত্তর ভারতেই এর চল থাকলেও এখন বাংলাতেও বেশ জনপ্রিয় ধনতেরস। সোনা-রুপোর গয়না কিনতে ওই দিন ভিড় জমান মানুষ।


আরও পড়ুন - 


বাংলায় না ইংরেজিতে, দীপাবলিতে কোন ভাষায় শুভেচ্ছা জানাতে চান প্রিয়জনকে? রইল ১০টি অপশন




পরের দিনটিই ‘ভূত চতুর্দশী’। গুজরাত, রাজস্থানে  ‘রূপ চৌদাস’ নামে পালিত হয় উৎসব। দক্ষিণ ভারতেও এই উৎসব উদযাপন হয়।   বাঙালিরা এইদিন বাড়িতে ১৪ টি প্রদীপ জ্বালায়। ১৪ পুরুষের জন্য আলো জ্বালায় দোরে দোরে । বাড়ির প্রতিটি দরজায় জ্বালানো হয় বাতি। কৃষ্ণপক্ষের ১৪ তম দিন অর্থাৎ অমাবস্যার আগের দিন চতুর্দশী। সেই সঙ্গে খাওয়া হয় চোদ্দ শাক।

 

আবার, কারও কারও বিশ্বাস, আমাদের পূর্বপুরুষেরা ওই দিন পরলোক থেকে ইহলোকে নেমে আসেন। তাঁরা দেখতে আসেন, তাঁদের ছেড়ে যাওয়া পরিবার, বাড়ি, দোর দালান। তাঁদের দিশা দিতেই ও আলো দেখিয়ে ফিরিয়ে দিতেই ১৪ প্রদীপ জ্বালার প্রথা।  অনেক বাড়িতে আবার পরলোকগত পূর্বপুরুষের মিষ্টি-জল নিবেদন করা হয়। 

 

বাঙালি পরিবারে বিশ্বাস, ১৪ রকম শাক সহযোগে ভাত খেলে ভূত-প্রেত দূরে থাকে। কেউ কেউ আবার এইদিনটিকে ছোটি দিওয়ালি হিসেবেও পালন করে। চোদ্দ শাকের মধ্যে থাকে আমরুথ পাতা , বেতো শাক, সর্ষে শাক, কাসুন্দে পাতা,  পলতা পাতা, শালুক পাতা, প্রভৃতি। চোদ্দ প্রদীপের আলো যেন সারা রাত না নিভে যায়, খেয়াল রাখতে হবে। সারা রাত ঘর দোর আলোকমালায় সাজিয়ে রাখতে হবে। 


দীপাবলিতেই  রামচন্দ্র ১৪ বছরের বনবাস কাটিয়ে অযোধ্যায় ফিরে এসেছিলেন, বলে বিশ্বাস। অযোধ্যায়  রামচন্দ্রকে স্বাগত জানাতে প্রদীপ জ্বালিয়ে অযোধ্যা নগরীকে সাজানো হয়। সেই থেকে এই প্রথা মানা হয়ে আসছে বলেই অনেকের বিশ্বাস। 

দীপাবলি ও ভূত চতুর্দশী উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে