নয়াদিল্লি: অনেক আনাজই স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল। তবে এর মধ্যে কিছু আনাজের আবার অভিনব কয়েকটি গুণাবলি রয়েছে। এই আনাজগুলি প্রত্যেক হেঁসেলের একেবারে অপরিহার্য। এদের অনন্য গন্ধের জন্য এই আনাজগুলি বিশ্বব্যাপী ভীষণই জনপ্রিয়। যে কোনও সুস্বাদু খাবার তৈরি করতে আনাজগুলির জুড়ি মেলা ভার। এই আনাজগুলির তালিকার শীর্ষে রয়েছে পেঁয়াজ, আদা ও রসুন।
তবে, আজ আমরা এই তিন আনাজের খাবারের বাইরের গুণাগুণগুলি দেখব। আমরা জানব, খাবারের স্বাদ বৃদ্ধির পাশাপাশি, এই তিন আনাজের আক কী কী গুণ রয়েছে। বিশেষ করে, এখন করোনাভাইরাস মহামারীর সময়ে প্রত্যেকের উচিত নিজের শারীরিক রোগ-প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে রাখা। আর সেই দিক দিয়ে এই তিন আনাজের ভীষণই কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে।
গবেষণায় উঠে এসেছে, এই তিন আনাজ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। বলা হয়, এই তিন উপকরণের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে। নিয়মিত সেবনে এই উপাদানগুলি শরীরে গিয়ে তার রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। কীভাবে দেখে নেওয়া যাক--
পেঁয়াজ- পেঁয়াজে প্রচণ্ড রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এতে রয়েছে ভিটামিন সি, সালফার, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারসেতিন। এই পুষ্টির উপাদানগুলি আপনার রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে। কারসেতিনে রয়েছে ফ্লাভোনয়েড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-- যা অ্যান্টি-ভাইরালে ভরপুর। পেঁয়াজে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে, যা সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া রয়েছে সেলেনিয়াম, যা শরীরের রোগ-প্রতিরোধ প্রক্রিয়াকে সচল রাখে। অন্য যে কোনও আনাজের থেকে এটা পেঁয়াজে প্রচুর পরিমাণে থাকে। ভাইরাসের প্রকোপে শরীরে সংক্রমণ বা অ্যালার্জির বিরুদ্ধে লড়াই চালায় এই সেলেনিয়াম। রান্না করে হোক বা কাঁচা, পেঁয়াজ যে কোনও ভাবেই খাওয়া যায়।
রসুন- এই আনাজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম ও সালফারের একাধিক যৌগ। সবকটি জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। অর্থাৎ, রোগ-প্রতিরোধ শক্তিবৃদ্ধিতে এটি অপরিহার্য। ঠাণ্ডা বা জ্বর হলে শরীরে প্রবেশ করা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালায় রক্তের শ্বেত কণিকা। রসুনে থাকা উপাদান সেই শ্বেত কণিকাকে সাহায্য করে। তবে, এই উপাদানের ফল পেতে হলে রসুনকে কাঁচা অবস্থায় খেতে হবে। রান্নার পর সালফার এনজাইমগুলি প্রভাব ফেলতে পারে না, কারণ তাপে সেগুলি অকেজো হয়ে পড়ে। একইভাবে, তাপে রসুনের অ্যান্টিবায়োটিক ক্ষমতাও হ্রাস পায়। রসুনের কোয়ায় এক ধরনের উপাদান থাকে -- অ্যালিয়িন। কাঁচা অবস্থায় এগুলি চিবিয়ে তা পিষে খেলে এই যৌগটি উপাদনটি অ্যালিসিনে পরিণত হয়। এটাই রসুনকে তার রোগ-নিরাময় বৈশিষ্ঠ্য দেয়। এই বৈশিষ্ঠ্যগুলি রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে। আগে লোকে অসুস্থতা, ঠাণ্ডা বা জ্বর থেকে বাঁচতে কাঁচা রসুন খেতেন। এমনকী, অসুস্থ হলেও রোগের তীব্রতা অনেকটাই কমিয়ে দেওয়া এবং দ্রুত সুস্থ করে তোলার ক্ষমতা রয়েছে রসুনের।
আদা- শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইমফ্লেমেটরি বৈশিষ্ঠ্যবলে শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয় আদা। শরীরের রোগ-প্রতিরোধ প্রক্রিয়াকে সঠিক রাখতে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে সক্ষম আদা। এৎর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ঠ্য যা, মানুষের শ্বাসনালীর সংক্রমণে দায়ী ভাইরাস হিউম্যান রেসপিরেটরি সিঙ্কটিক্যাল ভাইরাস (এইচআরএসভি)-র বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।