নয়াদিল্লি: কোভিড থেকে সেরে উঠতে অতিরিক্ত জিঙ্ক সাপ্লিমেন্ট এবং অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার কারণেই বাড়ছে মিউকরমাইকোসিস। সম্প্রতি এমনটাই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি আইএমএ-র প্রাক্তন সভাপতি ডাঃ রাজীব জয়াদেবন জানিয়েছেন, অতিরিক্ত বাষ্প ব্যবহার করা, জিঙ্ক সাপ্লিমেন্ট এবং মিশ্র অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার মিউকরমাইকোসিসের প্রকোপ বাড়াচ্ছে। ডাঃ জয়াদেবনের ট্যুইটে বলা হয়েছে, Azithromycin, Doxycycline and Carbapenem এই তিন অ্যান্টিবায়োটিক মিশ্রণ মিউকরমাইকোসিসের সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। 


এই রোগের নির্দিষ্ট ওষুধ নেই, চিকিৎসকরা তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির দিকেই নজর দিয়েছেন। পাশাপাশি জ্বর ইত্যাদি কমাতে প্যারাসিটামলের পাশাপাশি মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট দেওয়া হয়। তবে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন প্রধান রাজীব জয়দেবনের দাবি, যাঁরা কোভিড সংক্রমণ এড়াতে বেশি মাত্রায় জিঙ্ক সাপ্লিমেন্ট খেয়ে গিয়েছেন, তাঁদের মিউকরমাইকোসিসের মতো ছত্রাকের সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। 


জিঙ্ক শরীরের পক্ষে প্রয়োজনীয় একটি খনিজ। ইমিউনিটি বুস্টার খনিজ হিসেবে  প্রথম সারিতেই রয়েছে এই খনিজ। আয়রনের মতো মানবদেহে জিঙ্কও নিজে থেকে উৎপন্ন হতে পারে না। তাই খাবার বা ওষুধের মাধ্যমেই প্রয়োজনীয় এই খনিজটিকে সাপ্লিমেন্ট হিসেবে শরীরে প্রবেশ করাতে হয়।


সামান্য পরিমাণ জিঙ্ক মানবদেহে প্রবেশ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বাড়াতে সক্ষম বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তবে সম্প্রতি গবেষণা বলেছে জিঙ্কই মিউকরমাইকোসিসি রোগ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। চিকিৎসকরা বলছেন, জিঙ্ক বাদ দিলেই এই মিউকোরমাইকসিসের ঝুঁকি কমানো সম্ভব হবে। 


করোনা আবহেই উদ্বেগ বাড়িয়েছে মিউকরমাইকোসিস। সরকারি হিসাব বলছে দেশে ১১,৭১৭ জনের দেহে এই ছত্রাকের বাড়বড়ান্ত রয়েছে। ২৪ মে পর্যন্ত এই সংখ্যাটা ছিল ৯ হাজার। একের পর এক মৃত্যুর খবরও এসেছে। ইতিমধ্যে কেন্দ্র একে মহামারি আইনের আওতায় এনেছে। 


গতকাল রাজ্যে মিউকরমাইকোসিসে (Mucormycosis) আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছিল ১৩ জন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, আরও ১১ জনের তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত মিউকরমাইকোসিসে মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, আরও ৩ জনের এই কারণে মৃত্যু কি না তা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। সূত্রের খবর, প্রতিটি হাসপাতালকে জানানো হয়েছে, সন্দেহভাজন রোগীদের সম্পর্কে সমস্ত তথ্য নিয়মিত পাঠাতে হবে স্বাস্থ্য দফতরে। সেই সমস্ত তথ্য যাচাই করে দেখবে স্বাস্থ্য দফতর।