নয়াদিল্লি: অ্যান্টি বায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার ভারতের করোনা-পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে পারে। এমনটাই উঠে এসেছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ বা ICMR-এর পরীক্ষায়। দেশজুড়ে ১০টি হাসপাতালে ১৭ হাজার ৫৩৪ জন করোনা রোগীর উপর পরীক্ষা চালায় ICMR। তাতে দেখা যাচ্ছে, করোনা আক্রান্ত রোগী যাঁদের অন্য জীবাণু বা ছত্রাকঘটিত সংক্রমণ হচ্ছে, তাঁদের অর্ধেকের বেশির মৃত্যু ঘটছে।


দ্বিতীয় এই সংক্রমণটি হয়েছে, করোনার চিকিৎসা চলাকালীন বা চিকিৎসা শেষ হওয়ার পর। গবেষণায় দেখা গেছে, ১৭ হাজার রোগীর মাত্র চার শতাংশেরই এই দ্বিতীয় কোনও জীবাণু বা ছত্রাকঘটিত সংক্রমণ হচ্ছে। এঁদের অনেকেই ১০দিনের বেশি হাসপাতালে ছিলেন। চিকিৎসকদের মতে, ব্যাক্টেরিয়াগুলি অ্যান্টি বায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে উঠছে। তার ফলে, ব্যাক্টেরিয়াগুলি এমন ভাবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, যাতে চিকিৎসা করা কঠিন হচ্ছে।


উল্লেখ্য, সম্প্রতি জানা গিয়েছে, কোভিড থেকে সেরে উঠতে অতিরিক্ত জিঙ্ক সাপ্লিমেন্ট এবং অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার কারণেই বাড়ছে মিউকরমাইকোসিস। সম্প্রতি এমনটাই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি আইএমএ-র প্রাক্তন সভাপতি ডাঃ রাজীব জয়াদেবন জানিয়েছেন, অতিরিক্ত বাষ্প ব্যবহার করা, জিঙ্ক সাপ্লিমেন্ট এবং মিশ্র অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার মিউকরমাইকোসিসের প্রকোপ বাড়াচ্ছে। ডাঃ জয়াদেবনের ট্যুইটে বলা হয়েছে, Azithromycin, Doxycycline and Carbapenem এই তিন অ্যান্টিবায়োটিক মিশ্রণ মিউকরমাইকোসিসের সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। 


এই রোগের নির্দিষ্ট ওষুধ নেই, চিকিৎসকরা তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির দিকেই নজর দিয়েছেন। পাশাপাশি জ্বর ইত্যাদি কমাতে প্যারাসিটামলের পাশাপাশি মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট দেওয়া হয়। তবে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন প্রধান রাজীব জয়দেবনের দাবি, যাঁরা কোভিড সংক্রমণ এড়াতে বেশি মাত্রায় জিঙ্ক সাপ্লিমেন্ট খেয়ে গিয়েছেন, তাঁদের মিউকরমাইকোসিসের মতো ছত্রাকের সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। 


গতকাল রাজ্যে মিউকরমাইকোসিসে (Mucormycosis) আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছিল ১৩ জন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, আরও ১১ জনের তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত মিউকরমাইকোসিসে মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, আরও ৩ জনের এই কারণে মৃত্যু কি না তা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। সূত্রের খবর, প্রতিটি হাসপাতালকে জানানো হয়েছে, সন্দেহভাজন রোগীদের সম্পর্কে সমস্ত তথ্য নিয়মিত পাঠাতে হবে স্বাস্থ্য দফতরে। সেই সমস্ত তথ্য যাচাই করে দেখবে স্বাস্থ্য দফতর।