হার্টের সমস্যা অনেক সময় সরাসরি বুকে ব্যথার মাধ্যমে জানান দেয় না। বরং অনেক সময় বুক ধড়ফড়, শ্বাস নেওয়ার সমস্যা, হাতের যন্ত্রণা, হাঁপিয়ে পড়া, ইত্যাদির মাধ্যমে ইঙ্গিত দেয়। তবে হৃদরোগের প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যেতে পারে  চোখেও। চোখের রেটিনা যে কারও শরীরের ভাস্কুলার সিস্টেমের অবস্থা প্রতিফলিত করে। তাই চোখের বেশ কিছু সমস্যা দেখে চক্ষুবিশেষজ্ঞরা অনেক সময়ই cardiovascular রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকির ইঙ্গিতও বুঝতে পারেন।  টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত এক আর্টিকল অনুসারে,  বুকে ব্যথা, হাঁসফাঁস করা, উচ্চ রক্তচাপ, ইত্যাদি সমস্যা দেখা যাওয়ার আগেই চোখ বলে দিতে পারে আপনার হার্ট ভাল নেই। চোখের যে যে সমস্যা আপনার হাই ব্লাড প্রেসার, স্ট্রোকের ইঙ্গিত দেয় । সেগুলি হল 

Continues below advertisement

  • hypertensive retinopathy
  • retinal vein occlusion 
  • presence of Hollenhorst plaques  

বেশ কিছু সহজ পরীক্ষাতেই এই সব সমস্যা নির্ণয় করা সম্ভব।  চক্ষু বিশেষজ্ঞরা আপনার চোখের পিছনের অংশ, রেটিনার পরীক্ষা করলেই অনেক কিছু আন্দাজ করতে পারেন।   পিএমসি-তে প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে , নিয়মিত চোখের পরীক্ষা হৃদরোগ সহ শরীরের অনেক বড় অসুখও ধরিয়ে দিতে পারে।  রক্তনালীর অস্বাভাবিকতা, উচ্চ রক্তচাপ বা অন্যান্য কার্ডিওভাসকুলার ঝুঁকির ইঙ্গিত তো চোখের কিছু সমস্যার মধ্যেই পাওয়া যায়। 

চোখের স্ট্রোক: চোখের কিছু অংশে রক্ত ​​প্রবাহ সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেলে চোখেও স্ট্রোক হয়।  এর ফলে রেটিনার উপর ছোট ছোট রক্ত জমাট বাঁধার মতো ছোপ পড়ে। 

Continues below advertisement

রেটিনার ক্ষতি: কিছু ক্ষেত্রে, চোখের রক্তনালীতে সামান্য ক্ষতি হলেও হৃদরোগের সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। এই ধরনের সমস্যা দেখলে চোখের ডাক্তার অনেক সময়ই শরীরের অন্যান্য অবস্থা ঠিক আছে কি না, তার পরীক্ষা করতে দেন। 

হৃদরোগ প্রায়শই কোনও স্পষ্ট লক্ষণ ছাড়াই নীরবে শুরু হয়।  চোখের রক্তনালীগুলি এত সূক্ষ্ম এবং সংবেদনশীল, তাই শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় এগুলিতে আগে ক্ষতি হতে পারে। চোখের রক্তনালীগুলি সংকীর্ণ হয়ে যাওয়া, পাকিয়ে যাওয়া , রেটিনার গঠনে পরিবর্তন , ইত্যাদি দেখলে অনেক সময়ই আপনার চক্ষু বিশেষজ্ঞ   আরও পরীক্ষার জন্য কোনও জেনারেল ফিজিশিয়ান বা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠাতে পারেন। 

টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত এক আর্টিকল অনুসারে, আমেরিকান একাডেমি অফ অফথালমোলজির  রেটিনা বিশেষজ্ঞ ডঃ জোসেফ নেজগোদা বলছেন, চোখের কোনও কোনও ইমেজিং পরীক্ষায় হৃদরোগের লক্ষণ আগে থেকেই খুঁজে পাওয়া যায়। এর ফলে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় করে জীবন বাঁচায়। প্রাথমিক পর্যায়ে হৃদরোগ ধরা পড়লে  অ্যাটাক বা স্ট্রোকের মতো গুরুতর ঘটনা প্রতিরোধ করা যেতে পারে। 

উচ্চ রক্তচাপ আছে, উচ্চ কোলেস্টেরল আছে , টাইপ ২ ডায়াবেটিস আছে,  ধূমপান করেন অথবা অতীতে ধূমপান করেছেন, হৃদরোগের পারিবারিক ইতিহাস আছে , এমন মানুষদের হতে হবে বেশি করে সতর্ক। ৪০ বছরের বেশি যদি আপনার বয়স হয়, তবে, নিয়মিত চোখের পরীক্ষা করান।  রেটিনার  OCT স্ক্যান দেখে চিকিৎসক অনেক কিছু বুঝে যেতে পারেন।  যদি চক্ষু বিশেষজ্ঞ আরও পরীক্ষার পরামর্শ দেন, তাহলে দেরি করা ঠিক নয়। সুষম খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ  চোখ এবং হার্ট উভয়কেই রক্ষা করে।