কলকাতা: উপোস করা বিভিন্ন ধর্মের প্রাচীন প্রথা। অনেকে এখনও উপোসের রীতি মেনে চলেন। অনেকে আবার উপোস থেকে শরীর খারাপ হয় বলে মনে করেন। কিছু ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরাও বলে থাকেন উপোস করলে বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণা অন্য কথা বলছে। উপোস করলেই নাকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে? কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ যৌথভাবে একটি গবেষণা করেছে। তাতে দেখা গিয়েছে, উপোস করলে শরীরের উপকার হচ্ছে!
প্রদাহ নিয়ে গবেষণা
প্রসঙ্গত, এই গবেষণায় শরীরের একটি বিশেষ সমস্যা নিয়ে গবেষণা করা হয়। সমস্যাটির নাম প্রদাহ বা ইনফ্লেমেশন। সাধারণত মেটাবলিজম থেকে ইনফ্লেমেশন তৈরি হয়। এর ফলে আর্থ্রাইটিসের মতো নানা রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে শুরু করে। এই প্রদাহ কমানোর জন্য চিকিৎসকরা জীবনযাপনে বদল আনার পরামর্শ দেন। এই ইনফ্লেমেশনের অন্যতম কারণ হল এনএলআরপি৩ ইনফ্লেমেসাম। আর্থ্রাইটিস ছাড়াও ইনফ্লেমেশন থেকে একদিকে যেমন ওবেসিটি হতে পারে, অন্যদিকে ডিমেনশিয়া বা অ্যালঝাইমার্স ডিজিজের মতো কঠিন রোগও হতে পারে। তার পিছনে দায়ী স্নায়ুর ইনফ্লেমেশন।
২৪ ঘন্টার উপোস!
২১ জন ব্যক্তি নিয়ে এই গবেষণা হয়। গবেষকদের কথায়, তাদের ২৪ ঘন্টা উপোস করতে হয়। ২৪ ঘন্টা আগে ৫০০ ক্যালোরির খাবার খান তাঁরা। ২৪ ঘন্টা পর আবার তাঁদের খাবার দেওয়া হয়। এর মধ্যেই শরীরের গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন দেখা যায়। দেখা যায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বেড়েছে ওই ব্যক্তিদের। খাবার খাওয়ার পরেই রক্তে তার পরিমাণ কমে গিয়েছে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি
৫০০ ক্যালোরি খাবার খাওয়ার পর ২৪ ঘন্টার উপোস করতে হয় ওই ব্যক্তিদের। সেই সময় দেখা যায়, রক্তে আরাকিডোনিক অ্যাসিড নামের একটি বিশেষ উপাদানের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। এটিই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অন্যতম উপাদান। এটি আদতে একধরনের লিপিড। এই লিপিডের পরিমাণ আবার খাবার খেলেই কমে যায়। ২৪ ঘন্টা পর ৫০০ ক্যালোরির খাবার খাওয়ানো হয় ওই ব্যক্তিদের। তখনই আরাকিডোনিক অ্যাসিডের পরিমাণ কমে যায়। এই পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে বিজ্ঞানীদের মতামত, উপোস থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। যা প্রদাহ কমায়। তবে কেন এটা হয়, তার কারণ জানা যায়নি এখনও।
তথ্যসূত্র - কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়
আরও পড়ুন - Real or Fake Milk: ডিটারজেন্টও থাকে দুধে! এই কায়দা জানলেই টের পাবেন