নয়াদিল্লি: বিশ্বজুড়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী করা হয় গ্রিনহাউস গ্যাসকে। জলবায়ু বদলের কারণও সেটাই। শিল্পবিপ্লবের পর থেকে গ্রিনহাউস গ্যাস বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে বেশি কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে শিল্পক্ষেত্রকে। কিন্তু নতুন একটি রিপোর্টে উঠে এল চমকপ্রদ তথ্য। তথ্য বলছে শিল্পক্ষেত্র বা নির্মাণশিল্পের চেয়েও পরিবেশে বেশি গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হয় সারা বিশ্বের মানুষের খাদ্যাভ্যাসের কারণে। গোটা পৃথিবীতে প্রতিবছর যে পরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হয় তার ২১ থেকে ৩৭ শতাংশই আসে এই কারণে।


কারা বলছে?
অ্যানুয়াল স্টেট অফ ইন্ডিয়াস এনভায়রনমেন্ট রিপোর্টে উঠে এসেছে এমনই তথ্য। পরিবেশ, বন এবং জলবায়ু বদল মন্ত্রকের (union ministry of environmentm, forest and climate change) মন্ত্রী ভূপেন্দর যাদব, ২০০২ অনিল আগরওয়াল ডায়লগে প্রকাশ করেছেন এই রিপোর্ট। সম্প্রতি ব্রিটেন এবং আমেরিকার একাধিক বিজ্ঞানী একটি সমীক্ষা করেছিলেন, তার ভিত্তিতেই উঠে এসেছে এমন তথ্য। 


কতটা দায়ী খাদ্যাভ্যাস 
খাদ্য তৈরির প্রক্রিয়া, কৃষিকাজ, খাদ্যবণ্টন এবং তার সঙ্গে যুক্ত বাকি সমস্ত প্রক্রিয়ার ফলে বিশ্বে বাড়ছে গ্রিনহাউস গ্যাসের দাপট। পৃথিবীতে প্রতিবছর যে পরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হয় তার ২১ থেকে ৩৭ শতাংশই আসে এই কারণে। বিশ্বে প্রতিবছর যে পরিমাণ গ্রিনহাউস নির্গত হয় তার মধ্যে ১৪ শতাংশ আসে পরিবহন শিল্প থেকে। শিল্পক্ষেত্র দায়ী ২১ শতাংশের জন্য়। এছাড়া বিদ্যুৎ তৈরির জন্যও ২৫ শতাংশ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হয়। পৃথিবীতে গ্রিনহাউস গ্যাস রোখার জন্য ভরসা করা হয় গাছে। কিন্তু যখন উদ্ভিদ ডিকম্পোজ হয় অর্থাৎ তার পচন হয়, তখন বিপুল পরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হয়। বিশ্বে ক্রমশ বেড়ে চলা জনসংখ্যার জন্য বাড়াতে হচ্ছে চাষের জমির জায়গা। সেই কারণে কাটা পড়ছে গাছ। পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে চাষের জন্য যে যে যন্ত্র ব্যবহার করা হয় তাতে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করা হয়। কৃষিকাজে ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক সারও। এসবের মিলিত কারণেই প্রভাব পড়েছে গ্রিনহাউস গ্য়াস নির্গমণ বৃদ্ধিতে।  


বিশ্বের ১৬টি দেশ থেকে ৩৭ জন বিজ্ঞানী নিয়ে তৈরি হয়েছে EAT-Lancet commision for food. তারা একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিলেন। সেখানে তাঁদের পরামর্শ, খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে জড়িত গোটা প্রক্রিয়া পাল্টাতে পারলে দশ পড়েছে বহু পরিমাণে কমানো যাবে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমণ।


সমস্যা কোথায়?
বিশ্বের বহু মানুষের খাদ্যাভ্যাস বদলানো সহজ নয়। চিরাচরিত পদ্ধতিতে যেভাবে কৃষিকাজ চলে আসছে তাও হঠাৎ করে বদলে ফেলা সহজ নয়। কার্বন নির্গমণ কমাতে গেলে যেভাবে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে তার খরচ সামলানো অধিকাংশ বাসিন্দার পক্ষেই সম্ভব নয়। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, খাদ্যাভ্যাস বা কৃষিকাজের ফলে গ্রিনহাউস গ্যাস উৎপন্ন হয় এটা যেমন সত্যি। তার সঙ্গেই এটাও ঠিক যে যদি কার্বন নির্গমন কমানোর জন্য এর উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয় তাহলে অন্যক্ষেত্রগুলি নিজেদের দায়ভার কমানোর চেষ্টা করতে পারে।


আরও পড়ুন: হলুদ গুঁড়োয় ভেজাল? চিনবেন ঘরোয়া পদ্ধতিতেই


Education Loan Information:

Calculate Education Loan EMI