দেশে দিনে দিনে বেড়েই চলেছে স্থূলতার সমস্যা, আর তাই এবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তরফে এক ভয়ঙ্কর সতর্কতা জারি করা হল। বলা হয়েছে যে সিঙাড়া এবং জিলিপি খেলেও সিগারেট ধোঁয়ার মত সমান ক্ষতি হয় শরীরে। সিগারেটের প্যাকেটে যেমন ক্যানসারের সতর্কবার্তা লেখা থাকে, তেমনি এবার থেকে সিঙাড়া ও জিলিপির ক্ষেত্রেও এমন স্বাস্থ্যহানির সতর্কবার্তা লেখার নিদান দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

সংবাদসূত্র থেকে জানা গিয়েছে যে, এইমস নাগপুরের মত কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে যে এবার থেকে পাবলিক প্লেস ও ক্যাফেটারিয়াগুলিতে ‘তেল ও চিনির মাত্রা সূচক বোর্ড’ লাগাতে হবে। এই পোস্টারগুলিতে জনপ্রিয় বিভিন্ন খাবারে থাকা ফ্যাট ও চিনির মাত্রা তুলে ধরবে। সিগারেটের প্যাকেটে থাকা স্বাস্থ্য সতর্কীকরণ লেবেলের মত কাজ করবে এই পোস্টারগুলি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, এই উদ্যোগটি উচ্চমাত্রার ক্যালরি, ডিপ-ফ্রায়েড ও চিনিযুক্ত খাবার যেমন জিলিপি, সিঙাড়া ইত্যাদিকেও সরকারি স্বাস্থ্য সতর্কতার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ভারতে ক্রমবর্ধমান লাইফস্টাইল ডিজিজ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে এই পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র সরকার। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা স্থূলতা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগের জন্য চিনি ও ট্রান্স ফ্যাটকে প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কার্ডিওলজিক্যাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ার নাগপুর শাখার প্রধান ডঃ অমর আমলে এই বিষয়ে জানান যে সিগারেট ও তামাকের মতই এই ট্রান্স ফ্যাট ও চিনিতে ভরপুর খাবারগুলি শরীরের পক্ষে একইরকম ক্ষতিকর। 

অনুমান করা হচ্ছে, ২০৫০ সালের মধ্যে ৪৪ কোটি ৯০ লক্ষেরও বেশি ভারতীয় অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতার শিকার হতে পারেন যা ভারতকে সারা বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থূলতার দেশে পরিণত করতে পারে। যদিও সরকার স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে এটি কোনও নিষেধাজ্ঞা নয়, এই প্রচারের মূল লক্ষ্য হল জনসাধারণকে তথ্য দিয়ে সতর্ক করা। এই উদ্যোগ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ফিট ইন্ডিয়া অভিযানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যেখানে তেলের ব্যবহার ১০ শতাংশ কমানোর মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার বিকল্প বেছে নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে নাগরিকদের।  

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২৪ সালের প্রতিবেদন অনুসারে ভারতের ৬০ শতাংশেরও বেশি মানুষ স্থূলতার শিকার। একইসঙ্গে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ১০ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে। এই কারণেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় FSSAI-এর সহযোগিতায় একটি নতুন নীতি তৈরি করেছে যার অধীনে এই খাদ্যদ্রব্যের প্যাকেজিংয়ে সতর্কতার লেবেল লাগানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।