নয়াদিল্লি: ভারতীয় মশলা হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণে রাখে, সুস্থ রাখে হৃদযন্ত্রকেও। চেন্নাইয়ের শ্রী রামচন্দ্র ইউনিভার্সিটি বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের হার্বাল অ্যান্ড ইন্ডিয়ান মেডিসিন রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমীক্ষায় উঠে এল এমনই তথ্য। এই সমীক্ষার দুই প্রধান গবেষক হান্নাথ আর বাসন্তী ও আরপি পরমেশ্বরের জমা দেওয়া গবেষণাপত্র অনুসারে এই তথ্য জানা গিয়েছে। 
মশলা শুধু খাদ্যের স্বাদই বাড়ায় না


অধিকাংশ ভারতীয় খাদ্য সামগ্রীর জন্য মশলা খুবই প্রয়োজনীয়। তবে এক্ষেত্রে পরিমাণের হেরফের হয়ে থাকে। ভারতীয় খাবারে আদা, রসুন, দারুচিনি, এলাচ, গোলমরিচ, জিরা, ধনের মতো মশলা ব্যবহার করা হয়। শীতকালে তো ভারতের প্রায় প্রতিটি গৃহেই চায়ের সঙ্গে আদা মিশিয়ে খাওয়া হয়। মাংস রান্নায় তো আদার ব্যবহারের কথা আলাদা করে উল্লেখ করার কিছু নেই। 


সুপ্রাচীন কাল থেকেই মনে করা হয়,এই সব মশলার ওষুধি গুণ রয়েছে। ধারণা রয়েছে যে, এগুলি শুধু খাবারকে সুস্বাদুই করে না, ওষুধি গুণও রয়েছে। আয়ুর্বেদ খাদ্যসামগ্রীকে ওষুধ হিসেবে গন্য করে।


শ্রী রামচন্দ্র ইউনিভার্সিটির গবেষণা অনুসারে,  কোনও কোনও খাবারের কিছু উপাদানে কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি কম হয়। এগুলির মধ্যে রয়েছে ফল, ভেষজ সামগ্রী ও মশলা। কিন্তু এরমধ্যে সবচেয়ে সাধারণ মশলা হল রসুন। এপিডেমিওলজিক স্টাডি অনুসারে, রসুন খাওয়ার সঙ্গে কার্ডিওভাস্কুলার সংক্রান্ত অসুস্থতার বিপরীতমুখী সম্পর্ক রয়েছে। এই অসুস্থতার সঙ্গে যুক্ত কোলেস্টেরলের মাত্রা , এলডিএল ও এলডিএল অক্সিডেশন বৃদ্ধি, হাইপারটেনশন ও ধূমপান। এক্ষেত্রে রসুন এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারে। 


ভারতীয় ও চিনা ওষুধের ক্ষেত্রে হলুদ অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। গ্যাস, কোলিক, দাঁতে ব্যথা, বুকে ব্যথার মতো সমস্যায় হলুদ অ্য়ান্টি-ইনফ্লেমেটরি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে হলুদ। ওই মশলা পাকস্থলী ও লিভারের সমস্যা দূর করতেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ক্ষত সারাতেও হলুদের বহুল ব্যবহার রয়েছে। তা কসমেটিক হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, হলুদে থাকা কারকিউমিন কোলেস্টেরল ও ট্রিগলাইসেরাইড কনসেন্ট্রেশন কমায় এবং এইচডিএল কোলেস্টেরল বাড়ায়। তা এলডিএলের অক্সিডেশন, রক্তে শর্করা, ডায়বেটিসের ক্ষেত্রে কিডনির ক্ষত কমিয়ে দেয়। এছাড়াও গবেষণায় হলুদের আরও গুণের কথা উঠে এসেছে। 



আদাও ওষুধি গাছগাছড়া হিসেবে চিনে, আয়ুর্বেগে ও ইউনানি হার্বাল মেডিসিনে সারা বিশ্বেই ব্যহহৃত হয়ে থাকে। আর্থারাইটিস, রিউম্যাটিজম, স্প্রেনস, পেশীর ব্যথা, যন্ত্রণা, গলা ব্য়থা, টান ধরা, কোষ্ঠকাঠিন্যে, বদহজম, বমি, হাইপারটেনশন, দ্বার, সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে সুপ্রাচীন কাল থেকেই আদার ব্যবহার হয়ে আসছে। আদার সক্রিয় উপাদান জিঙ্জেরোল রক্তজালিকার ক্ষেত্রে উপকারী বলে মনে করা হয়। আদাতে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটারি উপদানও থাকে। এর অর্থ তা হৃদরোগ, ক্যানসার, অ্যালঝাইমার, আর্থারাইটিসের মতো রোগ মোকাবিলায় তা কার্যকর হতে পারে। 


গোলমরিচেও থাকে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। যা হজম ও ওজন হ্রাসে সহায়ক। কারণ, তা ফ্যাট সেল ভাঙতে সহায়ক।