নিউইয়র্ক : কোভিড সংক্রমিতদের শরীরে মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে যে ধরণের অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে, তেমনটাই পাওয়া যায় সাধারণ জ্বর-সর্দি কাটিয়ে ওঠার পরও! মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, সাধারণ জ্বর-সর্দিতে কেউ আক্রান্ত হলে তা সারিয়ে ওঠার পথে শরীরের যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, সেই ধরণেরই অ্যান্টিবডি পাওয়া গিয়েছে মারণ ভাইরাসের প্রকোপ কাটিয়ে ওঠাদের শরীরেও।


স্ক্রিপস রিসার্চ ইনস্টিটিউট নামে এক সংস্থার প্রকাশ করা দাবি, সাধারণ জ্বর-সর্দিতে ভুগলে সেক্ষেত্রে শরীরের মেমোরি বি সেল তৈরি করে একধরণের কার্যকরী অ্যান্টিবডি। শরীরের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা থেকে যা তৈরি হয়ে থাকে। তেমনটা যদি কারোর শরীরে থাকে তাহলে আগের সেই 'স্মৃতি' উসকে কোভিডের সংক্রমণ হলেও শরীরে কার্যকর হচ্ছে অ্যান্টিবডিগুলো। সমীক্ষকদের দাবি, এই সমীক্ষা এগিয়ে নিয়ে গিয়ে ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে নতুন তথ্যের সাহায্য জোগান করতে সক্ষম হবেন তাঁরা।


ইনস্টিটিউটের ইমিউনোলজি ও মাইক্রোবাইলজি বিভাগের অধ্যাপক রাইস আন্দ্রাবি বলেছেন, 'আমরা লক্ষ্য করে পেয়েছি সাধারণ জ্বর-সর্দির ফলে শরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, কোভিডের সংক্রমণের ক্ষেত্রেও মেমোরি বি সেল সেই ক্রস-রিঅ্যাকটিভ অ্যান্টিবডি ফের শরীরে তৈরি করছে।' সমীক্ষকদের দাবি,  ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তাঁরা দেখেছেন, জ্বর-সর্দি হওয়ার পর কেউ কোভিডে আক্রান্ত হলে তাদের শরীর মারণ ভাইরাসের সঙ্গে বেশি লড়াই করতে পারছে এই ধরণের অ্যান্টিবডি শরীরে ফের তৈরি হয়ে যাওয়ায়।


অতিমারির সময় বিভিন্ন কোভিড আক্রান্তের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে দেখেই যে সমীক্ষার প্রাথমিক ফল তারা পেয়েছেন বলেই জানিয়েছেন সমীক্ষকরা। স্ক্রিপস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এই সমীক্ষা প্রকাশিত হয়েছে নেচার কমিউনিকেশন নামের এক জার্নালে। সেখানে বলা হয়েছে, সাধারণ ফ্লু-র দাপট সামলাতে শরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে সেটাই কোথাও গিয়ে করোনার ধাক্কার মুখে পড়লে দ্রুত শরীরকে সামলে তুলতে সাহায্য করছে। সার্স-কোভ ওয়ানের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডিগুলি লড়াই করতে সক্ষম বলেও জানিয়েছে সমীক্ষাটি। সমীক্ষকদের প্রত্যাশা, তারা আরও ইতিবাচক ফল পেলে সেটা ভবিষ্যতে ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে উপকারী ভূমিকা নিতে পারে।