কলকাতা : একটা সময়ে বলা হত, হার্ট অ্যাটাক হয় বয়স্কদের। কিন্তু, সম্প্রতি হৃদরোগে অল্পবয়সীদের মৃত্যুর হার যেভাবে বাড়ছে, তা দেখে অনেকেরই আতঙ্ক বেড়ে যাচ্ছে। বলিউডেই সম্প্রতি এরকম একাধিক ঘটনা ঘটে গেছে। যার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ সিদ্ধার্থ শুক্লা। 



তরতাজা যুবক। সুঠাম শরীর। ফিটনেস-ফ্রিক বলেই পরিচিত ঘনিষ্ঠ মহলে। সাফল্যও পেয়েছন কম বয়সে। টেলিভিশনের জনপ্রিয় মুখ। বিগবসের সাফল্য। কতকী তাঁর ঝুলিতে। এমন এক ঝকঝকে ব্যক্তিত্বর জীবনে হঠাত্ করেই দাঁড়ি পড়ে যাওয়া। বেবাক ইন্ডাষ্ট্রি। শোকস্তব্ধ অনুরাগীরা। ঠিক কেন ঘটল এমনটা ? কী বলছে চিকিত্সকমহল ? এটা শুধু ভারতের ছবি নয়, গোটা বিশ্বেই এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ২০১৮ সালের একটা সমীক্ষায় দেখা গেছিল, ৩৫ থেকে ৫৪ বছর বয়সীদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের হার ২৭ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩২ শতাংশ।

চিকিৎসক শ্যামাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, এখন নন কমিউনিকেবল অর্থাত্ সংক্রামক নয়, এমন রোগগুলির মধ্যে হার্টের সমস্যা সবচেয়ে চ্যালেঞ্জের। দেখা যাচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে কম বয়সীদেরও হার্টের সমস্যা বেশি মাত্রায় হচ্ছে। মূলত, মানুষের অনেকগুলি কারণে হার্টের সমস্যা হয়। যার মধ্যে জিন অন্যতম কারণ। পরিবারে হার্ট অ্যাটাকের ইতিহাস থাকলে সামলে চলতেই হবে। তার সঙ্গে ডায়াবেটিস, হাই কোলেস্টেরল, হাই ব্লাড প্রেসার ইত্যাদি কোমর্বিডিটিগুলি হার্টের অসুখের অন্যতম কারণ। এছাড়াও সাডেন কার্ডিয়াক ডেথও ঘটছে অনেক তরতাজা তরুণের। এই সাডেন কার্ডিয়াক ডেথ মানে কিন্তু হার্ট অ্যাটাক নয় ! 

চিকিৎসক মনতোষ পাঁজা জানালেন, দেখতে হবে তাঁর অন্য কোনও সমস্যা ছিল কি না। অর্থাত তিনি ডায়াবেটিক বা উচ্চ রক্তচাপে ভুগতেন কি না, কোলেস্টেরল হাই কিনা বা তিনি চেইন স্মোকার ছিলেন কি না। দেখতে হবে তিনি হার্টের ইরেগুলার বিটে ভুগতেন কিনা। সেই সঙ্গে আরও দেখা প্রয়োজন, তাঁর হার্ট ব্লকেজ ছিল কিনা। এক্ষেত্রে কী করণীয় - 

ডা. পাঁজা বলেন - 



  •  হার্টঅ্যাটাকের কোনও পারিবারিক ইতিহাস থাকলে কম বয়সেই চিকিত্সকের পরামর্শ নিয়ে রুটিন চেক আপ করান। 

  • হাই বিপি থাকলে ওষুধ খেতে হবে ডাক্তারের পরামর্শ মতোই। 

  • কার্বোহাইডেট, ফ্যাট, শর্করা জাতীয় খাবার কম খেতে হবে। 

  • নিয়মিত অনন্ত ৪৫ মিনিট হাঁটাহাঁটি করা প্রয়োজন।

  • ওজন রাখতে হবে নিয়ন্ত্রণে


তবে সিদ্ধার্থের মৃত্যুর ক্ষেত্রে সাডেন কার্ডিয়াক ডেথের সম্ভাবনাই বারবার উঠে আসছে চিকিত্সকদের মধ্যে। তাঁদের পরামর্শ, কম বয়সে একটা ইসিজি ও একটা ইকো কার্ডিগ্রাম করে রাখা দরকার।