সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি : বর্ষার শেষ আর পুজোর আগে আগে এই ,সময়টা ২০০৬-১৭ সালে কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠোছিল মনে আছে নিশ্চয়ই। বঙ্গজুড়ে চলছিল ডেঙ্গুর আতঙ্ক। করোনা আবহে আবারও বাড়ছে ডেঙ্গি আতঙ্ক। করোনার মধ্যে চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু। কোন্নগর কানাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে একদিনে তিন জনের শরীরে ডেঙ্গুর অস্তিত্ব ধরা পরেছে। তার মধ্যে একটি তিন বছরের শিশু রয়েছে।


করোনার (Coronavirus) দ্বিতীয় ঢেউ এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কায় প্রহর গুনছে রাজ্য। তার মধ্যেই বাড়ছে ডেঙ্গি (Dengue), ম্যালেরিয়ার (Malaria) মতো মশাবাহিত রোগের প্রকোপ। করোনা আবহের মধ্যেই বৃষ্টির হাত ধরে ডেঙ্গির বিপদ চোখ রাঙাচ্ছে। জমা জল ডেঙ্গির মশার আঁতুড়ঘর।  কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সেই আঁতুড়ঘরের সংখ্যা বাড়ছে বিভিন্ন এলাকায়। 


কোন্নগর বাসাই গ্রাম কানাইপুর কলোনী ও নপাড়ায় ডেঙ্গুর আতঙ্কে ভুগছেন সকলেই। পুজোর আগে তাই চিন্তায় উত্তরপারা-শ্রীরামপুর ব্লক প্রশাসন। ডেঙ্গু ধরা পড়ার খবর পেয়ে আজ জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে এলাকা পরিদর্শনে যান আধিকারিকরা। অতিরিক্ত জেলা শাসক (উন্নয়ন) সন্দীপ ঘোষ, উত্তরপাড়া-শ্রীরামপুর ব্লকের বিডিও দীপাঞ্জন সরকার ও কানাইপুর বিএমওএইচ এস পট্টনায়েক পঞ্চায়েতে বৈঠক করেন। ডেঙ্গুর মশা ও লার্ভা নিধনে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন।জ্বর হলেই রক্ত পরীক্ষা যাতে হয় তা দেখতে বলেন স্বাস্থ্য কর্মীদের।


আরও পড়ুন : Alipurduar Dengue : আলিপুরদুয়ারে বাড়ছে ডেঙ্গির প্রকোপ, একজনের মৃত্যু



কানাইপুর পঞ্চায়েতের প্রধান আচ্ছালাল যাদব জানিয়েছেন, রক্ত পরীক্ষায় তিন জনের ডেঙ্গু ধরা পরেছে। এই ঘটনার পর পঞ্চায়েত তৎপর হয়েছে।বর্ষা গেছে কিন্ত বেশ কিছু জায়গায় জল জমে আছে। সেই জমা জলে যাতে ডেঙ্গু মশা জন্মাতে না পারে তার জন্য স্প্রে করা হচ্ছে। তার জন্য স্প্রে মেশিন কেনা হচ্ছে। সুপারভাইজারদের বলে দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনে আরও বেশি লোক লাগিয়ে কাজ করতে হবে।


পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা সিপিএম এর বিপ্লব বোস বলেন, দুয়ারে সরকার প্রকল্প রূপায়ণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সদস্য এবং কর্মীরা। ফলে পঞ্চায়েতের স্বাভাবিক কাজকর্ম যেমন বর্ষার সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা নজরদারী করা সেসব বন্ধ হয়ে আছে। একশ দিনের কাজে সরকারি বিধিনিষেধের কারনে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। জরুরি ভিত্তিতে জমা জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করতে পারলে অনেকেরই ডেঙ্গু ধরা পড়বে।

জুলাই মাসের শুরুতে, উত্তর ২৪ পরগণায় গতবারের তুলনায় এবার ডেঙ্গির সংক্রমণ যথেষ্ট কম। গতবছরের মতো এবারও করোনা আবহে উত্তর ২৪ পরগনায় কিছু ডেঙ্গির কিছু কেস দেখা গিয়েছে।  তবে জেলা স্বাস্থ্য দফতর দাবি করছে, ২০১৯-২০-র তুলনায় এ বছরের ছবিটা অনেকটাই স্বস্তির। ২০১৯-এ উত্তর চব্বিশ পরগনায় ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছিল ডেঙ্গি। সেবার গোটা জেলায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ২০ হাজারের বেশি মানুষ। এবার আর থেকে অবস্থা অনেকটাই ভাল। ডেঙ্গির দাপট এই বছর কিছুটা কমায় একটু স্বস্তিতে উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দারা।