কলকাতা : তাপমাত্রা নামছে ।  ধীরে ধীরে বইতে শুরু করেছে উত্তুরে হাওয়া । এরইমধ্যে কোনও কোনও সময় প্রকৃতির খেলায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও হচ্ছে।  ফলে আজ গরম তো কাল ঠান্ডা । সেইসঙ্গে হেমন্তের পরশ তো রয়েছেই। এই সময়টা যতটাই মনোরম ততটাই শিশুর শরীরের পক্ষে খারাপ।   দু বছর হতে চলল করোনা থেকে বাঁচতে শিশুদের থাকতে হচ্ছে বাড়িতেই তাই খেলাধুলো মেলামেশা হইহই সবটাই এখন অতীত। তবু পিছু ছাড়ছে না অসুখ । আবহাওয়ার পরিবর্তনের সময় কোনও কোনও রোগের প্রকোপ বাড়ে।  এই নিয়ে এবিপি লাইভকে বিস্তারিত জানাচ্ছেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অগ্নিমিতা গিরি  সরকার।


চিকিৎসক সরকার জানালেন,  শীত পড়ার ঠিক আগে নানারকম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। এখনও পর্যন্ত করেনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ে শিশুদের জড়িয়ে যে শঙ্কাটি ছিল তা দেখা যায়নি । যদিও অন্য কয়েকটি অসুখ এসে বিপদে ফেলেছে পরিবারের খুদেদের । যার মধ্যে কিছু বায়ু বাহিত অসুখ, কিছু জল বাহিত । চিকিৎসক অগ্নিমিতা গিরি সরকার জানালেন, সাম্প্রতিককালে যে যে অসুখে আক্রান্ত হয়েছে শিশুরা তা হল



  • ডেঙ্গি

  • ম্যালেরিয়া

  • টাইফয়েড

  • শ্বাসজনিত অসুখ

  • নিউমোকক্কাল নিউমোনিয়া (pneumococcal pneumonia)

  • পেটের সমস্যা

  • রোটা ভাইরাস ডায়রিয়া প্রভৃতি

    এই বছর অভিভাবকদের ভাবাচ্ছে নানারকম জ্বর। তার মধ্যে আবার RSV infection।  এক থেকে তিন বছর বয়সী বাচ্চাদের মধ্যে ইনফ্লুয়েঞ্জা, রোটা ভাইরাস ডায়রিয়া, আরএসভি ইনফেকশন হচ্ছে খুবই বেশি। চিকিৎসকের কথায়, প্রত্যেক অভিভাবককে মাথায় রাখতে হবে শিশুদের যেকোনও জ্বরকেই শুধুমাত্র ঋতু পরিবর্তনের দরুণ জ্বর বলে ফেলে রাখা যাবে না।

  • প্রথমবার জ্বর এলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুসারে প্রয়োজনীয় প্যারাসিটামল চালু করতে হবে।

  • সঙ্গে শরীরে জলের মাত্রা ঠিক রাখতে হবে ওআরএস দিয়ে।

  • এরপর জ্বর দু-একদিন চললেই চিকিৎসকের কাছে বা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে

  • পরীক্ষা করে দেখতে হবে জ্বরের কারণ ।

    এই মুহূর্তে চিকিৎসকদের হাতে নানা ধরনের জ্বরের রোগী আসছে । কিছু কিছু ক্ষেত্রে শুরু থেকে ওষুধ না দিলে বা যত্ন না নিলে বড় রকম সমস্যা সৃষ্টি করছে । তাই সময় নষ্ট করা একেবারেই যাবে না।

    ফ্লু ভ্যাকসিন : 



  • ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকে রেহাই দিতে পারে ফ্লু ভ্যাকসিন। সাধারণত সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ দিয়ে দেওয়া হয় ।

  •  শিশুর এক বছর বয়সের আগে থেকেই ফ্লু ভ্যাকসিন এর দৌড় শুরু করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা

  • প্রথমে ২ টি ডোজ ও পরবর্তীতে প্রতিবছর একটি করে ডোজ দেওয়া আবশ্যক ।

    কারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস এমন ভাবে নিজেদের পরিবর্তন ঘটায় যে নতুন ভ্যাকসিন না নিলে তা প্রতিহত করা খুবই কঠিন ।


  • করোনাকালে এমনিতেই শিশুরা এখন মাস্ক পরা অভ্যস্ত তাই কোনো কারণে বাইরে যেতে গেলে মাস্ক আবশ্যিক

  • সেইসঙ্গে প্রয়োজন স্যানিটাইজেশন

  • শরীরে জলের মাত্রা ঠিক রাখা

  • ঠিক সময়ে ওষুধ চালু করা

  • পুষ্টিকর খাবার খাওয়া

  • শীতকালীন ফল খাওয়া ইত্যাদি

  •  প্রয়োজনে এমন হাসপাতালে ভর্তি করা দরকার, যেখানে PICU আছে।

  •  এছাড়া দূরত্ব বজায় রাখার অভ্যেসটা জারি রাখতে হবে।

  •  হাঁচি পেলে বড়রাও যেমন মুখ ঢেকে হাঁচেন, তেমন অভ্যেস বড়দের সঙ্গে সঙ্গে শিশুদেরও করতে হবে।

  •  সেই সঙ্গে এঁঠো খাবার দাবার ভাগাভাগি করে না খাওয়ার অভ্যেস করা দরকার।