ঝিলম করঞ্জাই ও সুজিত মণ্ডল, কলকাতা ও নদিয়া: বচসা (conflict)থেকে উত্তেজনা (tension)। অভিযোগ তার জেরেই ত্রিশূল (trishul) ঢুকিয়ে এফোঁড়-ওফোঁড় করার চেষ্টা হয়েছিল নদিয়ার (nadia) গয়েশপুরের যুবককে (youth)। পরে এনআরএস হাসপাতালে (NRS) তাঁর জটিল অস্ত্রোপচার (operation) করে প্রাণ বাঁচানো হয়। তবে পুলিশের অনুমান, পুরনো শত্রুতার জেরে হামলা। যুবকের দুই বন্ধুকে হামলার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কী জেনেছে পুলিশ?
হাসপাতাল সূত্রে খবর, কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজ থেকে রেফার করার পর গত কাল রাত ৩টে নাগাদ এনআরএসের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয় জখম ওই ব্যক্তি। করা হয়। গলায় ত্রিশূল বিঁধে রয়েছে দেখে ওই ব্যক্তিকে তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয় ইএনটি-র জরুরি বিভাগে। সূত্রের খবর, তাঁর মুখে রক্তক্ষরণের চিহ্নও ছিল। চিকিৎসক প্রণবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুতীর্থ সাহার নেতৃত্বে দ্রুত অ্যানাস্থেশিয়া করে একঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করে ত্রিশূল বের করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, গলায় যে ক্ষত হয়েছে, তা সামাল দেওয়া গেছে। ওই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও, তাঁকে আইসিইউ-তে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে অস্ত্রোপচারের পর ত্রিশূল বের করা গিয়েছে। কিন্তু কী করে এই রকম ধারাল অস্ত্র তাঁর গলায় ঢুকল, সেটা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তদন্তে নামে এন্টালি পুলিশ ফাঁড়ি। যদিও ওই ব্যক্তির দাবি, তাঁকে সংজ্ঞাহীন করে ত্রিশূল ঢোকানো হয়েছে। তন্ত্র-যোগ রয়েছে কিনা, তাও অবশ্য খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এর মধ্য়েই পুরনো শত্রুতার তত্ত্ব উঠে এসেছে। তবে যে ভাবে অস্ত্রোপচারের পর সাফল্য এসেছে তাতে ফের এনআরএস হাসপাতালকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন অনেকে। এর আগেও একই ভাবে সাফল্যের আলো দেখিয়েছেন সেখানকার ডাক্তাররা।
আগেও সাফল্য...
গত জানুয়ারি মাসের ঘটনা। জটিল অস্ত্রোপচারে সাফল্যের আলো দেখিয়েছিলেন এনআরএসের ডাক্তাররা। শিশুর খাদ্যনালী থেকে খেলনা বন্দুকের স্প্রিং ও ধাতব অংশ বের করেন সে বার। এক হাসপাতাল ঘুরে এনআরএসে আসে শিশু। মাত্র এক ঘণ্টাতেই সফল অপারেশন হয়। হাঁফ ছেড়ে বাঁচে পরিবার। এর পরের ঘটনা জুলাই মাসে। সে বার খেলাচ্ছলে মায়ের কানের দুল মুখে পুড়েছিল একরত্তি শিশু। আটকে যায় শ্বাসনালিতে। তখন অবশ্য অস্ত্রোপচার করতে লাগেনি। ছুরি-কাঁচি ছাড়াই অসাধ্যসাধন করে দেখান এনআরএসের ইএনটি বিভাগের চিকিৎসকরা। প্রাণ বাঁচে ১ বছর ১০ মাসের শিশুকন্যার। নদিয়ার চাকদার বাসিন্দা শিশুর পরিবার। শুক্রবার রাতে কানের দুল বালিশের তলায় রেখে ঘুমোতে যান মা। সকালে খোঁজ মেলেনি একটি দুলের। সেই সঙ্গে শুরু হয় বাচ্চার কান্না আর কাশি। তড়িঘড়ি শিশুকে নিয়ে যাওয়া হয় কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। পরীক্ষায় দেখা যায়, শিশুর শ্বাসনালির ওপরের অংশে আটকে কানের দুল। শিশুকে নিয়ে আসা হয় এনআরএসে। সেখানেই ইএনটি বিভাগের চিকিৎসকদের তৎপরতায় বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে বের করে আনা হয় দুল।
আরও পড়ুন:'পুরো মন্ত্রিসভাকে জেলে পাঠাতে হবে', কেন বললেন শুভেন্দু?