কলকাতা : গত ১১ দিনে এই নিয়ে তিনদিন এই নজির গড়েছে দেশ। দেশের কোভিড ভ্যাকসিনেসনের পরিসংখ্যান বলেছে, সোমবার পর্যন্ত ভারতে মোট করোনা টিকা নিয়েছেন ৬৯,৬৮,৯৬,৩২৮ জন। এরই  মধ্যে কেউ কেউ টিকা ছুট হচ্ছেন। এড়িয়ে যাচ্ছেন ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ। আবার কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, প্রথম ডোজ আর দ্বিতীয় ডোজ যদি ভুলক্রমে দুটি আলাদা ভ্যাকসিনের হয়, তাহলে কী হবে !! ককটেল ভ্যাকসিন কি আদৌ উপকারী ? নাকি বিপদ ভারী ? প্রশ্ন অনেক। উত্তর দিচ্ছেন ডা. দীপ্তেন্দ্র সরকার (Dr Diptendra Sarkar is a Consultant Surgeon, Surgical Oncologist, Breast and Endocrine surgeon)





  • কেউ যদি প্রথম ডোজে একরকম ভ্যাকসিন, পরের ডোজে অন্য ভ্যাকসিন নেন, তাহলে কী ক্ষতি ? 

    উত্তরপ্রদেশে এইরকম একটি ঘটনা ঘটে ১৮ জনের সঙ্গে। এই ঘটনার পর ভারত সরকার ও আইসিএমআর একটি সার্ভে করে। দেখা হয়, দুইরকম ভ্যাকসিন নিয়ে কোনও ক্ষতি হল কি না। দেখা যায়, ওই ১৮ জনের ক্ষতি হয়নি বরং তাঁদের প্রতিরোধক্ষমতা ভালই রয়েছে। এরপর আরও ৪০ জনের উপর সমীক্ষা করা হয়, যাঁরা দুটি একই ভ্যাকসিনের ডোজ নিয়েছেন। তাঁদের পরীক্ষা করে দেখা যায়, এঁদের থেকে দুইরকম ভ্যাকসিনের ডোজ নেওয়া ব্যক্তিদের প্রতিরোধের ক্ষমতা বেশি। কিন্তু এই স্যাম্পল সাইজ যথেষ্ট নয় ! যা স্ট্যাটিসটিক্যালি ইনসিগনিফিকেন্ট ! এরপর ভারত সরকার আরও ৩০০ জনের উপর মিক্স অ্যান ম্যাচ ভ্যাকসিন দিয়ে সমীক্ষা করা হয়েছে।  সেই সমীক্ষার ফল এখনও সামনে আসেনি। এর ফল যদি ইতিবাচক আসে, অর্থাত যদি মিক্স অ্যান ম্যাচ ভ্যাকসিন নেওয়ার ফল যদি ভাল হয়, তাহলে ভ্যাকসিনেশনের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা হবে। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এই ট্রেন্ড এই মুহূর্তে চালু করা বিপজ্জনক হতে পারে। যদিও স্ফুটনিকের ক্ষেত্রে দুটি ডোজ, দুই রকমের। তাই এই ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে ককটেল করা সম্ভবত সম্ভব হবে না। 


  • ভ্যাকসিন কোনটি নেব, কোনটি নেব না, এটি বাছার উপায় কী ? 

    এক্ষেত্রে বাছাবাছির কোনও প্রয়োজনই নেই। সবই উনিশ-বিশ। ভ্যাকসিন নিয়ে ফেলাটা জরুরি। বিশেষত শিশুদের ভ্যাকসিন বাজারে এলেই নিয়ে ফেলাটা খুবই জরুরি। প্রতিটি টিকাই বাজারে আসার আগে পর্যাপ্ত ট্রায়াল হচ্ছে। তাই চিন্তা না করে ভ্যাকসিন নিয়ে ফেলাটা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।


  • ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ না নিলে কী ক্ষতি ? 

    চিকিত্সক সরকার জানালেন, যদি কোভিশিল্ডের প্রসঙ্গে আলোচনা করি, তাহলে দেখা গেছে এই ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজটি নেওয়ার ৩ সপ্তাহ পর আলফা ও বিটা স্ট্রেন থেকে ৫0-৫৫ শতাংশ প্রতিরোধ গড়ে উঠছে। কিন্তু ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে ৩০ শতাংশ প্রতিরোধ দেখা যাচ্ছে সপ্তাহ তিনেক পর। বর্তমানে আলফা ও বিটা স্ট্রেনের থেকে বেশি মাথা ব্যথা ডেল্টা নিয়েই। কারণ দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন বেশিরভাগ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টেই। ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজটি হয়ে গেলে, আলফা-বিটার বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন ৭০ শতাংশ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। ডেল্টার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে ৬০ শতাংশ। তাই কোনওভাবেই মিস করা যাবে না পরের ডোজ। তাই ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এখন দুটি ডোজই সুলভ করে দেওয়া হচ্ছে।