কলকাতা : দেশে ভয়ঙ্কর হারে বাড়ছে করোনা (Covid 19)। করোনায় দৈনিক সংক্রমণ একলাফে বাড়ল। চারগুণেরও বেশি বাড়ল দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তর সংখ্যা ৫৮ হাজার ০৯৭। গত একদিনে সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যা ১৫ হাজার ৩৮৯। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা ৫৩৪।



এই পরিস্থিতিতে সকলকে সতর্ক করলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার (Dr. Diptendra Sarkar)। তিনি বললেন, আজ যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাফে এতটা বাড়ল, সেখানে আগামীকাল এই লাফটা আরও বড় হতে পারে। দক্ষিণ আফ্রিকার মতে দেশেও যে হারে সংক্রমণ ছড়িয়েছিল, এখানে সেই হারটা আরও বেশি হতেই পারে। ভারতের জনঘনত্ব অনেক বেশি। তাই হয়ত সংক্রমণের মাত্রা বেশি, আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসক সরকার। তিনি জানান, এই সময় মানুষের সতর্ক হওয়া ছাড়া উপায় নেই। ডা. সরকারের মতে - 



  • মাস্ক ব্যবহার করুন । কখনও মাস্ক খোলা যাবে না । 

  • ভিড় এড়িয়ে চলুন।

  • মৃদু উপসর্গ দেখা দিলেই নিজেকে আইসোলেট করুন। 

  • নিভৃতবাসে থাকুন অযথা আতঙ্কিত হবেন না। 

  • প্যারাসিটামলের উপরই ভরসা রাখুন। 

  • Ivermectin, Remdesivir, Tocilizumab এগুলি ব্যবহার করবেন না। এতে হিতে বিপরীত হবে । 

  • ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উপর স্টেরয়েড তেমন ভাবে কাজ করে না, তাই স্টেরয়েড নিয়ে সমস্যা বাড়বে। তাছাড়া প্রথমেই স্টেরয়েড কোনও কাজে লাগে না। সাইটোকাইন স্টর্ম সামলাতে স্টেরয়েডের ব্যবহার আছে। 

  • উপসর্গ দেখা দিলে ফেলে রাখা নয়, সঙ্গে সঙ্গে টেস্ট করানোর প্রয়োজন। 

  • এখন গোষ্ঠী সংক্রমণের পর্যায়ে চলে গিয়েছে বিষয়টি। তাই কনট্র্যাক্ট ট্রেসিং করার সময় এটা নয়। 

  • উপসর্গ দেখার সঙ্গে সঙ্গেই নিজেকে আইসোলেট করুন

  • শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা মাপতে পালস অক্সিমিটার ব্যবহার করতে হবে। 

  • মৃদু উপসর্গ দেখা দিলেই টেস্ট করান।  


আরও পড়ুন : 


বদলাচ্ছে করোনা চিকিৎসা, বাতিল হয়ে গেল কোন কোন ওষুধপত্র?বদলাচ্ছে করোনা চিকিৎসা, বাতিল হয়ে গেল কোন কোন ওষুধপত্র?


 


কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বুধবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দৈনিক পজিটিভিটি রেট ৪.১৮ শতাংশ। অ্যাক্টিভ আক্রান্তর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২ লক্ষ ১৪ হাজার ০০৪। দেশে এখনও পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ সারিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যা ৩ কোটি ৪৩ লক্ষ ২১ হাজার ৮০৩। এখনও পর্যন্ত করোনায় মৃতের সংখ্যা ৪ লক্ষ ৮২ হাজার ৫৫১। এখনও পর্যন্ত দেশে মোট ১৪৭ কোটি ৭২ লক্ষ করোনা টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ওমিক্রন আক্রান্তের যে দৈনিক সংখ্যা প্রকাশ করা হচ্ছে তা নিয়ে বিশেষ মতপ্রকাশ করেছেন ডা. কুণাল সরকার। তাঁর মতে, এখন আরটিপিসিআর করে করোনা ধরা পড়লেই তো তার জেনম সিকোয়েন্সিং হচ্ছে না। তাতে সারাদেশ কত মানুষ ডেল্টা আক্রান্ত, কত মানুষ ওমিক্রন আক্রান্ত, তার নির্দিষ্ট কোনও হিসেব মিলছে না। তাই এই সংখ্যা, যা সামনে আসছে, তা দিয়ে ওমিক্রন-চিত্র পরিষ্কার হচ্ছে না। ডা. দীপ্তেন্দ্র সরকারের কথায়, ওমিক্রন যদি রুগ্ন ভাইরাসও হয়ে থাকে, তাহলেও সতর্ক না হলে মৃত্যুহার বাড়বে। তাই সতর্কতার বিকল্প নেই।