কলকাতা : গত ৩০ দিনে রাজ্যে করোনার সংক্রমণ বেড়েছে ৩১ গুণ। সংক্রমণের পরিসংখ্যানের গতিপথ আতঙ্ক ধরানো সেই তথ্যই সামনে তুলে ধরেছে। পাঁচ, দশ হাজারের মাত্রা ছাড়িয়ে রাজ্যের দৈনিক করোনা সংক্রমণ এখন পেরিয়ে গিয়েছে ১৫ হাজারের গণ্ডি। রবিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে মারণ ভাইরাসের সংক্রমণে পড়েছেন ১৫ হাজার ৮৮৯ জন। মৃত্যু হয়েছে ৫৭ জনের।
২৫ এপ্রিল রাজ্যে সংক্রমিতের সংখ্যা যেখানে ১৬ হাজার ছুঁইছুঁই, সেখানে ঠিক এক মাস আগে সংক্রমণের সংখ্যাটা ছিল ৩১ গুণ কম। গত ২৫ মার্চ নতুন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছিলেন ৫১৬ জন। একমাস আগে রাজ্যে অ্যাকটিভ করোনা রোগীর সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৯৫০ জন। আর এদিন সেটা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৮৮ হাজার ৮০০ জনে।
সংক্রমণের সুনামি ঠিক কোন পর্যায়ে সেটা আরও একটু পরিষ্কার হয়ে যাবে চিকিৎসকদের কথা শুনলেই। প্রখ্যাত চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার এদিন বলেছেন, 'এই মুহূর্তে সবার টেস্ট করলে হয়তো দেখা যাবে রাজ্যে পাঁচজনের মধ্যে একজন পজিটিভ।' চিকিৎসক কুণাল সরকারের মতে, এই মুহূর্তে সংক্রমিতের সংখ্যাটা রূপক-মাত্র। আক্রান্তের সংখ্যা আরও অনেক বেশি।
তবে শুধু চিকিৎসকদের কথাই নয়, কোভিড পরীক্ষার পরিসংখ্যানও তুলে ধরছে কার্যত একই তথ্য। শনিবার রাজ্যে করোনা পরীক্ষা করিয়েছিলেন ৫৫ হাজার ৬০ জন। যার মধ্যে ১৪ হাজার ২৮১ জন কোভিড পজিটিভ হয়েছেন। তাই করোনা পরীক্ষার বিচারে পজিটিভ হওয়ার শতকরা প্রায় ২৫ শতাংশ। সোজা ভাষায় বললে, পরীক্ষা করানো চারজনের মধ্যে একজন করোনা পজিটিভ।
চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকারও মনে করিয়ে দিয়েছেন, বর্তমান রাজ্যের যা করোনা পরিস্থিতি তাতে কোনও রকম উপসর্গ থাকলেই দ্রুত টেস্ট করানো ছাড়া কোনও উপায় নেই। কারণ করোনা সংক্রমণের প্রথম ৭২ ঘণ্টা গোল্ডেন আওয়ার। সেই সময় থেকে ওষুধ, চিকিৎসা শুরু করা গেলে অনেক রোগীকেই সুস্থ করে তোলা সম্ভব হবে।
এর মাঝে এখনও রাজ্যে বাকি আরও দুই দফার বিধানসভা নির্বাচন। যে পর্ব মিটলে রাজ্যে সংক্রমণের সুনামির ঝাপটা আরও ভয়াবহ হবে বলেই আশঙ্কা সবমহলে।