প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউতেই বিপর্যস্ত মানুষ। এরপর চিকিৎসকদের মতে , এসেছে তৃতীয় ঢেউ (Corona Third Wave)। আশঙ্কা কিছুটা ছিলই। তৃতীয় ঢেউতে বেশি করে আক্রান্ত হতে পারে শিশুরা। কিন্তু তৃতীয় ঢেউতে দেশে সামগ্রিক সংক্রমণের হারই বেশি। তারই মধ্যে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যাও কিছু কম নয়। তাই নিয়েই চিন্তার ভাঁজ সকলের কপালে। তবে এরই মধ্যে আশার কতা শোনালেন চিকিৎসকরা। বিস্তারিত আলোচনায় শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রভাসপ্রসূন গিরি ও ডা. অগ্নিমিতা গিরি সরকার। তৃতীয় ঢেউতে আগের থেকে অনেক বেশ আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। গত ৫-৭ দিনে উপসর্গযুক্ত বা উপসর্গহীন বহু শিশুরই করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে , বললেন দুই চিকিৎসকই। তবে আশার কথা এটাই এই অসুস্থতা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভয়াবহ জায়গায় যাচ্ছে না। 



শিশুদের ক্ষেত্রে এই ঢেউ কতটা মারাত্মক হচ্ছে? 
দুই চিকিৎসকই জানালেন, 



  • বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ২-৩ দিনে সুস্থ হচ্ছে শিশু

  • উপসর্গ থাকতেও পারে, নাও থাকতে পারে। 

  • উপসর্গ থাকলে প্রথমে Rapid Antigen Test করাতে পারেন। পজিটিভ এলে আইসোলেশনে যেতে হবে। নেগেটিভ এলে RTPCR করাতে হবে। 

  • পজিটিভ এলে মোটেই ভয় পাবেন না। চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। উপসর্গ অনুযায়ী ওষুধ দিতে হবে। 

  • হাসপাতালে ভর্তি করার মতো অবস্থা হচ্ছে না, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই। 

    কী কী উপসর্গ দেখা দিতে পারে

  • জ্বর , সর্দি , কাশি - মূলত ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। 

  • অনেকক্ষেত্রে গা হাত পায়ে অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে।

  • এই ধরনের উপসর্গ থাকলেই ইদানীং পজিটিভ ফলই আসছে। 

  • সদ্যোজাতদের ক্ষেত্রে জ্বর তো আসছেই, উপরন্তু কান্নাকাটি করছে শিশু। 

  • জ্বর ১০২ বা ১০৪ ডিগ্রি অবধি যেতে পারে। 

  • শ্বাসকষ্ট দেখা যাচ্ছে না বললেই চলে। 

    আরও পড়ুন :

    প্রথমেই স্টেরয়েডে বিগ নো ! দরকার নেই দামী ওষুধও, মৃদু উপসর্গের রোগীদের কী পরামর্শ



    কী করবেন 

  • বাচ্চার উপসর্গ দেখা দিলেই টেস্ট করান

  • পজিটিভ এসে আইসোলেট করুন 

  • জ্বর নিয়ে আতঙ্কিত হবেন না

  • ঠিক সময়ই কমবে 

  • আরাম দেওয়ার জন্য একটু গা স্পাঞ্জ করিয়ে দিতে পারেন। 

  • বমির প্রবণতা থাকলে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে বমির ওষুধ দিতে হবে । 

  • বারবার পায়খানা পেলেও ডাক্তারের পরামর্শ নিন । 

  • উপসর্গ অনুসারে ওষুধ খেতে হবে। 

  • ওকদম ছোট বাচ্চার ক্ষেত্রে নাক বন্ধ হলে, ন্যাজাল স্যালাইন ওয়াটার দিন। একটু বড় বাচ্চাদের ক্ষেত্রে পিডিয়াট্রিক ন্যাজাল ড্রপ ব্যবহার করা যায়। 

  • কাশি বেশি হলে সর্দির সিরাপ দিলে উপকার হতে পারে। 

  • ডিহাইড্রেশন এড়াতে ওআরএস দিতে হবে নিয়মিত। 

  • অযথা ভিটামিন খাওয়াবেন না। কোভিড কিন্তু ভিটামিন খাইয়ে আটকানো যায় না। 

  • কোভিড হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ভিটামিন বা অন্য ওষুধ দিন। 

    কেন টেস্ট করিয়া নেওয়া জরুরি ? 
    অনেক শিশুদের কোভিড পরবর্তী কিছু জটিলতা দেখা যায়। যাকে বলে  Multisystem inflammatory syndrome in children (MIS-C) । তাই টেস্ট করিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। 
    বাড়ির বড়রা উপসর্গ যুক্ত হলে বাচ্চাদের থেকে দূরে থাকুন। ৫ বছরের নিচে যাদের বয়স তাদের রুটিন ভ্যাকসিনেশনে গা ফিলতি করবেন না। 


    ডা. অগ্নিমিতা গিরি সরকার


    ডা. প্রভাসপ্রসূন গিরি