বিশ্বজুড়ে ছড়াচ্ছে নতুন আতঙ্ক। আর এর প্রধান টার্গেটই হল চোখ । ইতিমধ্যেই ১৭ টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই রোগ। মারবার্গ ভাইরাস। এর আক্রমণে প্রাণহানির আশঙ্কা পর্যন্ত তৈরি হচ্ছে। চোখ থেকে রক্তপাত ঘটছে । একে আই ব্লিডিং ভাইরাসও বলা হচ্ছে। তারপর রোগটি এমনভাবে শিকড় বিস্তার করছে যে, প্রাণ যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে। এই বিষয়ে বিশেষ ভাবে সতর্ক করা হচ্ছে, যাঁরা দেশ-বিদেশে ভ্রমণ করেন, তাঁদের।
এখনও পর্যন্ত এই বিপজ্জনক ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের ১৭ টি দেশে। এর সংক্রমণের হারও বেশ বেশি। দ্রুত একজনের থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়াচ্ছে মারবার্গ ভাইরাস। ডেইলি মেইলে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, যে সময় দেশে রোগটি ছড়াচ্ছে, সেই দেশে যাতায়াতকারীদের বিশেষভাবে সতর্ক করা হচ্ছে। কারণ, ইতিপূর্বে দেখা গিয়েছে সংক্রামক ভাইরাসগুলি এভাবে এক দেশ থেকে আরেক দেশে ছড়িয়ে পড়ে।
মারবার্গ ভাইরাসকে সবচেয়ে মারাত্মক ভাইরাসগুলির মধ্যে একটি বলে মনে করছেন ভাইরোলজিস্টদের একাংশ। আফ্রিকার রুয়ান্ডায় ১৫ জনেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন ভাইরাসের আক্রমণে। এই ভাইরাস শরীরের মধ্যে রক্তক্ষরণ ঘটাতে পারে। এই ভাইরাসের প্রথম লক্ষণ হল জ্বর। তারপর ভাইরাস ধীরে ধীরে থাবা চওড়া করে আর তারপর শরীরের ভেতরে রক্তক্ষরণ ঘটে। এতে ভয়াবহ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় অভ্যন্তরীণ অঙ্গ ও রক্তনালী। আক্রান্তদের চোখ, কান এবং মুখ থেকে রক্তপাত হতে দেখা গিয়েছে। সেই সঙ্গে রোগীরা ধুম জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। ক্লান্তি গ্রাস করছে শরীরকে। মারবার্গ ভাইরাসের এখনও কোনো ভ্যাকসিন পাওয়া যায়নি।
এই ভাইরাস দক্ষিণ আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান দেশগুলোতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ব্রাজিল, বলিভিয়া, কলম্বিয়া, কিউবা, ইকুয়েডর, ডোমিনিকান রিপাবলিক, গায়ানা, পেরু এবং পানামায় এর প্রাদুর্ভাব ইতিমধ্যেই ভয়াবহ। ভাইরাস-অ্যাটাকের উপসর্গের মধ্যে রয়েছে মাথাব্যথা, পেশীতে ব্যথা, জয়েন্টে শক্ত হয়ে যাওয়া, আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা এবং বমি । এই ভাইরাসের আক্রমণে এনসেফালাইটিসের মতো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে। প্রাণহানির কারণ হচ্ছে।
বিভিন্ন কারণে যাঁরা বিদেশ ভ্রমণ করেন, তাঁদের বেশি করে সতর্ক থাকতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষভাবে সচেতন হতে হবে এই দেশগুলির কোনওটিতে গেলে। সংক্রমিত এলাকার হাসপাতালে চিকিৎসা করানো এড়িয়ে চলা ভাল। সেখানে কারও অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ না নেওয়া ভাল। এছাড়া এই পরিস্থিতিতে বন্য প্রাণীর সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে। বাদুড় আছে , এমন জায়গায় যাওয়া চলবে না। মশা থেকে বাঁচতে ফুল হাতা জামা পরতে পারলে ভাল। ব্যবহার করতে হবে মশা তাড়ানোর স্প্রে । বিদেশ ভ্রমণের আগে ও পরে , অবশ্যই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান । যেহেতু মারবার্গ ভাইরাসের কোনও ভ্যাকসিন নেই এখনও, তাই সতর্কতাই সর্বোত্তম উপায়।