কলকাতা: অ্যালঝাইমার্স। যাঁরা রোগটি সম্পর্কে জানেন, তাঁদের এটাও জানা যে আক্রান্তের পাশাপাশি তাঁর পরিচর্যার দায়িত্বে থাকা মানুষগুলোকেও কষ্ট দেয় এই রোগ।তা সত্ত্বেও প্রিয়জনের কারও অ্যালঝাইমার্স ধরা পড়লে পরিজনেরা তাঁকে বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা ও শুশ্রুষা করার চেষ্টা করেন। বিশেষত প্রবীণ কেউ এতে আক্রান্ত হলে বাড়িতে পরিচর্যার প্রয়োজন আরও বেশি। কী ভাবে করবেন এই পরিচর্যা?


বাড়িতে অ্যালঝাইমার্স আক্রান্তের পরিচর্যা...
প্রথমে মনে রাখা দরকার, রোগের মাত্রা যত বাড়তে থাকে ততই রোগীর দেখভাল কঠিন হয়ে উঠতে পারে। এমন অবস্থায় কী করবেন? আসলে এই রোগ যত বাড়তে থাকে, তার উপসর্গ তত আলাদা হতে থাকে। তাই কোনও পরিচর্যার একটি বা দুটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া সব সময় কাজে দেয় না। এটি মাথায় রাখা জরুরি। উপসর্গ বুঝে সেই মতো এগোলে আক্রান্তকে কিছুটা স্বস্তিতে রাখা যাবে। তবে সে জন্য রোগীর সঙ্গে বোঝাপড়া জরুরি। আর এই বোঝাপড়ার জন্য দেখভালকারীকে কিছু প্রশিক্ষণ নিতে হবে।


কী পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের...
বিশেষজ্ঞরা যেমন বলছেন, শুধু কথার মাধ্যমে বোঝাপড়ার চেষ্টা নয়। পাশাপাশি স্পর্শ, চোখের ইশারা ও শব্দ দিয়েও যোগাযোগ করার চেষ্টা করতে হবে রোগীর সঙ্গে। যদি ভাষা ব্যবহার করতেই হয়, তা হলে একেবারে ছোট বাক্য প্রয়োগ করাই বাঞ্ছনীয়। সহজ ভাবে কথা বলা ও শোনার চর্চা জরুরি। এতে আদানপ্রদান সহজ হয়। না হলেই পরিচর্যাকারী ও আক্রান্তের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হতে বাধ্য। তা ছাড়া, কোনও কারণে রোগী যদি আপনার কথা শুনতে না পান, তা হলে তাঁকে নয় আশপাশের পরিবেশে যে আওয়াজ হচ্ছে সেটা কমানোর চেষ্টা করুন। মোট কথা, কোনও অবস্থাতেই তাঁর সীমিত ক্ষমতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে ছোট করা যাবে না। পাশাপাশি আক্রান্ত ব্যক্তি কী বলছেন, মন দিয়ে শুনুন। তবে একই সঙ্গে কথা না বলেও তাঁরা নানা ভাবে নিজের মনের ভাব বোঝাতে পারেন। সেই দিকেও নজর রাখা দরকার। আরও কিছু বিষয় ধীরে ধীরে কঠিন সমস্যা তৈরি করতে পারে। যেমন, সাধারণভাবে স্নান করা নিয়ে অ্যালঝাইমার্স রোগীদের মধ্যে একটা ভয় তৈরি হয়। কী ভাবে সেই ভীতি কাটিয়ে তাঁকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা যায়, সেটির জন্য একটু ভাবনা দরকার। পরিচ্ছন্ন জামাকাপড় পরা, খাওয়াদাওয়া এমনকী মলমূত্রত্যাগের ক্ষেত্রেও নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এসব ক্ষেত্রে কী ভাবে রোগীকে সাহায্য করবেন, সেটা বুঝতে হলে বিষয়গুলি নিয়ে কিছুটা লেখাপড়া করা থাকলে ভাল। 


এই রোগ যত বাড়ে, তত রোগীর পাশাপাশি প্রিয়জনদের ভোগান্তি বাড়াটাই স্বাভাবিক। কাজেই সেই মতো মানসিক প্রস্তুতি থাকলে লড়াইটা কিছুটা সহজ হতে পারে।


আরও পড়ুন:দুর্গাষষ্ঠী ব্রতপালনের মাহাত্ম্য কী ?