নিউ ইয়র্ক: শহর হোক বা গ্রাম, মাস্ক পরার চল কি আর আছে ? সরকার যতই বলুক, মাস্কে সাপোর্টের কথা যতই বলুক পুলিশ, মাস্ক পরায় গা ছাড়া ভাব একটা যে চলে এসেছে, রাস্তাঘাটে বেরোলে তা বেশ মালুম হয়। যদিও এর ব্যতিক্রম নিশ্চয়ই আছে। তবে মাস্ক পরলে যে আখেরে উপকারই তা বারবার বলছেন বিশেষজ্ঞরা। একটি গবেষণা বলছে,  মাস্ক পরলে ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা কমে তো যায়ই, একইসঙ্গে আরও একটি উপকার হয়। শ্বাস নেওয়ার সময় যে বাতাস আমাদের ফুসফুসে প্রবেশ করে, তাতে আর্দ্রতা বাড়িয়ে তোলে মাস্ক। আর তাতেই হয় উপকার। 


'বায়োফিজ়িক্যাল জার্নালে' এই সংক্রান্ত একটি সমীক্ষা প্রকাশিত হয়েছে। যে টিমটি এই গবেষণা চালিয়েছে তার শীর্ষে রয়েছেন, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ডায়াবিটিজ় অ্যান্ড ডাইজেস্টিভ অ্যান্ড কিডনি ডিজ়িজের গবেষক অ্যাড্রিয়ান বক্স। সমীক্ষা বলছে, শ্বাসনালীর হাইড্রেশন প্রক্রিয়া শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা নিয়ে থাকে। এবং সেই হাইড্রেশন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে থাকে আর্দ্রতাযুক্ত শ্বাস। যে বাতাস যত বেশি আর্দ্র, তার হাইড্রেশন প্রক্রিয়ার পাশে থাকার ক্ষমতা তত বেশি। অর্থাৎ কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা তাঁদের অনেক কম, যাঁদের ফুসফুসে আর্দ্রতাযুক্ত বাতাস বেশি প্রবেশ করছে।   


বক্স জানান, সংক্রমণ ও ফ্লুয়ের তীব্রতা কমাতে উচ্চস্তরের আর্দ্রতা অনেকাংশে সাহায্য করে থাকে। এবং একই ধরনের পদ্ধতিতে কমতে পারে কোভিড ১৯-এর তীব্রতাও।  


আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি হলে ফুসফুসে ভাইরাসের বিস্তারও বাধাপ্রাপ্ত হয়। চিকিৎসার পরিভাষায় এর নাম মিইকোসিলিয়ারি ক্লিয়ারেন্স (MCC)। এর ফলে ফুসফুসের শ্লেষ্মা মুক্তি ঘটে। এছাড়াও ক্ষতিকারক আরও নানা উপাদানের প্রভাব থেকে স্বস্তি পায় ফুসফুস।    


সমীক্ষাটি করতে গিয়ে গবেষকদলটি চারধরনের মাস্ক ব্যবহার করে। N95 মাস্ক, ত্রিস্তরীয় ডিজ়পোজ়েবল সার্জিক্যাল মাস্ক, দ্বিস্তরীয় কটন-পলিয়েস্টার মাস্ক এবং মোটা সুতির মাস্কের উপর সমীক্ষা চালানো হয়। শ্বাস-প্রশ্বাসের আর্দ্রতা পরিমাপের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল স্টিলের বিশেষ বাক্স।


সমীক্ষায় উঠে আসে, চারধরনের মাস্কেই আর্দ্রতার পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে পৃথক পৃথক মাত্রায়। তাপমাত্রা কম হলে, উপরিউক্ত সমস্ত মাস্কেরই আর্দ্রতাজনিত প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর তাপমাত্রা বাড়িয়ে বা কম করে দেখা গেছে, আর্দ্রতার পরিমাণ সর্বাধিক হচ্ছে  মোটা সুতির মাস্কে। 


অতএব, মাস্ক পরলে উপকারই যখন, তখন তা খুলে ফেলা কেন! ভেবে দেখুন।