নয়াদিল্লি : ১২- ১৭ বছরের শিশুদের জন্য ভ্যাকসিনের ছাড়পত্র পেয়েছে জাইডাস ক্যাডিলার ভ্যাকসিন জাইকভ ডি। কিন্তু কবে থেকে মিলতে পারে এই ভ্যাকসিন, সেই নিয়েই চিন্তায় শিশুর মা-বাবারা। সরকারের কোভিড প্যানেলের প্রধান এন কে অরোরা বলেছেন, ১২ থেকে ১৭ বছরের শিশুদের টিকাদানের বিশদ বিবরণ অক্টোবরে জাইডাস ক্যাডিলার ভ্যাকসিন বাজারে আসার আগে থেকেই জানিয়ে দেওয়া হবে। কোন শিশুরা আগে পাবে ভ্যাকসিন, তাও একটা নিয়মের আওতায় আনা হবে। আগেই জানানো হয়েছে, শিশুদের মধ্যে যাঁদের স্বাস্থ্যগত জটিলতা আছে, তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে কী নিয়ম মেনে হবে ভ্যাকসিন, অগ্রাধিকার পাওয়ার ক্ষেত্রে কী কী শর্ত রাখা হবে, সবই জানানো হবে সরকারের তরফে জাইডাস ক্যাডিলা ভ্যাকসিন চালু হওয়ার আগেই। 


তিনি আরও বলেন,  বছরের শেষাশেষি যদি স্কুল চালু করতে হয়, তবে তার আগে শিশুদের ভ্যাকসিনেশন শুরু করা অত্যন্ত জরুরি।  এন কে অরোরা জানান, সাম্প্রতিক সেরো সার্ভে বলছে,  শিশুদের গুরুতরভাবে কোভিড আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম। অরোরা বলেন, অনুমান করা হয় যে ভারতে  ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী প্রায় ১২ কোটি শিশু রয়েছে এবং তাদের মধ্যে ১ শতাংশেরও কম শিশুর গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা আছে। 

 তিনি বলেন, " আমাদের দেশে ওই বয়সী শিশু আছে ১২ কোটি। কিন্তু তাদের করোনা আক্রান্ত হয়ে জটিলতা বা মৃত্যুর সম্ভাবনা খুবই কম। বরং তাঁদের মা-বাবাদের বয়স যদি ১৮ থেকে ৪৫ এর মধ্যে হয়, তাহলে তাঁদের আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সম্ভাবনা ১০-১৫ গুণ বেশি। অতএব, আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে শিশুদের টিকা দেওয়া শুরু করার আগে এই গোষ্ঠীকে টিকা দেওয়া, "


জাইডাস ক্যাডিলা ছাড়াও, আগস্টেই  ভারত বায়োটেকের শিশুদের করোনা ভ্যাকসিনে ছাড়পত্র মিলতে পারে বলে জানা গিয়েছিল। ভারত বায়োটেকের ম্যানেজিং ডিরেক্টরের কথায় তেমনই ইঙ্গিত মেলে ।নাবালকদের ওপর কোভ্যাক্সিনের চূড়ান্ত পর্যায়ের ক্লিনিকাল ট্রায়াল শেষ। অগাস্টের শেষ অথবা সেপ্টেম্বরেই মিলতে পারে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের ছাড়পত্র। দাবি করেছেন ভারত বায়োটেকের ম্যানেজিং ডিরেক্টরের। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ইঙ্গিত, শিশুদের আরেকটি টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফলও ইতিবাচক। জরুরি ভিত্তিতে ওই টিকা ব্যবহারের ছাড়পত্রও দ্রুত মিলতে পারে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে। এই পরিস্থিতিতে আশাবাদী চিকিত্সকরা। 


ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজরি গ্রুপ অন ইমিউনাইজেশনের (National Technical Advisory Group on Immunisation (NTAGI)) চেয়ারম্যান এন কে অরোরার কথায়, “টিকা নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। সারা দেশে ভ্যাকসিন নিয়ে ভুল তথ্য, গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ভ্যাকসিন নিয়ে অনেকের ভয়ও রয়েছে। তাঁদের মনে হয়, ভ্যাকসিন সুরক্ষিত নয় বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে। ভ্যাকসিন ৯৫ থেকে ৯৬ শতাংশ কার্যকরী। এখনও পর্যন্ত ভ্যাকসিন নিয়ে সামান্য জ্বর বা ব্যথা ছাড়া অন্য কোনও সমস্যা হয়নি। যত জন ভ্যাকসিন নিয়েছেন তার মধ্যে ৪ থেকে ৫ শতাংশকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে অ্যালার্জি সংক্রান্ত সমস্যার জন্য।“


এইমস দিল্লির ডিরেক্টর ডা. রণদীপ গুলেরিয়া এএনআইকে বলেন, "জাইডাস ক্যাডিলা ডিএনএ ভ্যাকসিন। এটা একেবারেই ভিন্ন পদ্ধতিতে ব্যবহার করা হয়। আমাদের গর্ব করা উচিত। কারণ এই ধরনের ভ্যাকসিন আগে দেশে কখনই তৈরি হয়নি। ভ্যাকসিন সংক্রান্ত সব তথ্য নিয়ামক সংস্থাকে জানিয়ে প্রয়োগের জন্য আবেদন করবে জাইডাস ক্যাডিলা।"