কলকাতা: আশঙ্কা ছিল। এখন যা অবস্থা, তাতে অনেকেরই প্রশ্ন ধীরে ধীরে কি সেই আশঙ্কাই বাস্তবায়িত হতে চলেছে কেরলে (Kerala)? বুধবার রাজ্য়ের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ 'নিপা ভাইরাস'-এ আক্রান্ত আরও একজনের কথা জানান। যার অর্থ এই মুহূর্তে সরকারি ভাবে কেরলে 'নিপা ভাইরাস' (Kerala Nipah Virus Case) আক্রান্তের সংখ্যা ৫। সংক্রমিতদের মধ্যে রয়েছেন কোঝিকোড়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালের ২৪ বছর বয়সী এক স্বাস্থ্যকর্মীও।
সার্বিক ছবি...
সংক্রমিতদের সংস্পর্শে এসেছেন এমন ৭০৬ জনকে চিহ্নিত করতে পেরেছে কেরল প্রশাসন। এঁদের মধ্য়ে ১৫৩ জন স্বাস্থ্যকর্মী, ৭৭ জন 'হাই-রিস্ক ক্যাটেগরি'-ভুক্ত। তবে এখনও পর্যন্ত এই 'হাই-রিস্ক ক্যাটেগরি'-ভুক্তদের কারও কোনও উপসর্গ দেখা যায়নি। পাশাপাশি হাসপাতালে অন্তত ১৩ জনকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে মাথাব্যথার মতো হালকা কিছু উপসর্গ রয়েছে। এই মুহূর্তে সরকারের তরফে 'হাই-রিস্ক' কনট্যাক্টদের বাড়ি থেকে না বেরোনোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, কেরল প্রশাসন ১৯টি কোর কমিটি তৈরি করেছে। 'নিপা-আক্রমণ' মোকাবিলায় যা যা পদক্ষেপ করা হচ্ছে, তার মধ্যে সমন্বয় রাখতেই এই কমিটি। স্থানীয় পুর প্রশাসনের তরফে স্বেচ্ছাসেবী দলও গঠন করা হয়েছে যাতে যাঁরা 'আইসোলেশন'-এ রয়েছেন, তাঁদের প্রয়োজনীয় সব কিছু পৌঁছে দেওয়া যেতে পারে। এর মধ্যেই অন্তত দু'জনের প্রাণ গিয়েছে এই ভাইরাসের সংক্রমণে।
কী কী করা হচ্ছে?
বুধবারই, কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ জানিয়েছিলেন, গবেষণাগারে পরীক্ষার ফলাফল নিশ্চিত হওয়ার আগেই 'প্রোঅ্যাকটিভ ডিটেকশন' বা স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে রোগের লক্ষণ চিহ্নিত করার দিকে জোর দিচ্ছেন তাঁরা। স্বাস্থ্য প্রশাসন 'ক্লিনিকাল সিম্পটম' নজরে রাখছে। পাশাপাশি, সংক্রমিতদের সংস্পর্শে এসেছেন এমন ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। এর মধ্যে যাঁদের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে, তাঁদের আইসোলেশনেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে কোঝিকোড় জেলার বেশ কয়েকটি এলাকাকে কনটেনমেন্ট জোন ঘোষণা করা হয়েছে। এই এলাকাগুলির পড়ুয়ারা যাতে পঠনপাঠনের দিক থেকে পিছিয়ে না পড়ে সে জন্য শিক্ষা দফতরের তরফে তাদের জন্য অনলাইন ক্লাসেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
'নিপা ভাইরাস' কী?
'নিপা ভাইরাস' এক ধরনের জুনটিক ভাইরাস। এটি সাধারণত বাকি প্রাণীদের থেকে মানুষের দেহে সংক্রমিত হয়। সংক্রমিত খাবার থেকে বা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলেও এটি ছড়াতে পারে। আক্রান্তের দেহে একাধিক উপসর্গ থাকতে পারে। কারও কারও কোনও লক্ষণ নাও দেখা যেতে পারে। আবার কেউ কেউ তীব্র শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ও প্রাণঘাতী এনসেফ্যালাইটিসের শিকার হতে পারেন। সংক্রমণ থেকে উপসর্গ ফুটে ওঠার মধ্যে সাধারণত ৪-১৪ দিন পর্যন্ত সময় লেগে থাকে, জানাচ্ছে WHO। সুতরাং, সাবধানতাই এই ভাইরাস মোকাবিলার অন্যতম উপায়।