নয়াদিল্লি : করোনার মধ্যেই নতুন আতঙ্ক ছড়াচ্ছে জিকা ভাইরাস। সম্প্রতি কেরলে এই জিকা ভাইরাসের সংক্রমণের কথা জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, কেরলে এখনও পর্যন্ত ১৪ জন মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন জিকা ভাইরাসে। কিন্তু কী এই জিকা ভাইরাস? জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণগুলিই বা কী? সব জেনে নিন। তবেই সাবধানতা মেনে চলতে পারবেন।
কী এই জিকা ভাইরাস?
ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার মতোই জিকা ভাইরাসও মশাবাহিত একটি ভাইরাস। জানা যাচ্ছে, যে এডিস মশার কারণে ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়া প্রভৃতি রোগ ছড়ায়, সেই এডিস মশাই জিকা ভাইরাস বহন করে।
জিকা ভাইরাসের ইতিহাস-
১৯৪৭ সালে আফ্রিকাতে প্রথম জিকা ভাইরাসের স্ট্রেইন দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এই ভাইরাস প্রথম নজরে আসে ২০১৫ সালে যখন তা ব্রাজিলে পাওয়া যায়। এরপর ধীরে-ধীরে এই জিকা ভাইরাস আমাদের দেশেও ছড়িয়ে পড়ে। এই ভাইরাসটি সাধারণত ভাইরাসে আক্রান্ত এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। এছাড়া, যৌন সংসর্গের মাধ্যমেও এই ভাইরাস ছড়ায়। ২০১৬ সালে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন বা হু জিকা ভাইরাসকে পাবলিক হেলথ এমার্জেন্সি হিসেবে চিহ্নিত করে।
জিকা ভাইরাসের লক্ষণ-
জিকা ভাইরাসের প্রথম লক্ষণই হচ্ছে জ্বর, অনেকটাই ডেঙ্গির মতো। আশঙ্কার বিষয় এটাই যে, অনেক রোগীই সাধারণ জ্বরের সঙ্গে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত জ্বরকে আলাদা করতে পারেন না। তবে, চিকিৎসকদের মতে, যদি কোনও রোগীর একটানা এক সপ্তাহ জ্বর, নাক থেকে জল পড়া, মাথা ব্যথার মতো সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা করানো দরকার। শুধু তাই নয়, অনেক রোগীর আবার জ্বর, মাথা ব্যথা, নাক থেকে জল পড়ার পাশাপাশি কনজাংটিভাইটিস, গাঁটে ব্যথাও দেখা দিতে পারে।
জিকা ভাইরাস প্রতিরোধ করবেন কীভাবে-
জিকা ভাইরাসের বাহক এডিস মশা সাধারণত দিনের বেলায় এবং বিকেলবেলার দিকে বেশি সক্রিয় থাকে। তাই এই ভাইরাসের হাত থেকে নিজেকে প্রতিহত করতে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন যে, সেই সময়গুলোয় বাইরে কম বেরোতে। বাইরে বেরোলেও ঢাকা পোশাক পরে বেরোতে এবং অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন মশা না কামড়ায়। আরও একটা বিষয় যেটার দিকে নজর দেওয়া খুবই জরুরি। তা হল, খেয়াল রাখতে হবে, বাড়ির আশেপাশে যেন কোনওভাবেই জল না জমে।
জিকা ভাইরাসে কি মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে?
না, জিকা ভাইরাসে কেউ আক্রান্ত হলেও, মৃত্যুর আশঙ্কা প্রায় থাকে না। বিশ্বজুড়ে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মাত্র এক শতাংশ ব্যক্তির মৃত্যু হয়। ফলে ঠিকমতো চিকিৎসা হলে এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিলে এই রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
জিকা ভাইরাসের চিকিৎসা-
এখনও পর্যন্ত জিকা ভাইরাসের কোনও ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে পারেনি কোনও দেশ। ফ্রান্সে গবেষণা চলছে। ভ্যাকসিনের ট্রায়ালও শুরু হয়েছে।