সন্দীপ সরকার, কলকাতা: সিলিকোসিস (Silicosis) রোগ নির্ণয়ের জন্য কিট তৈরি করলেন এক বাঙালি গবেষক। তাঁর দাবি, এরফলে রোগের সঠিক চিকিৎসা আরও সহজ হবে। খুব শিগগিরি বাজারে আসতে চলেছে এই কিট।
আরও সহজে ধরা যাবে সিলিকোসিস। এই রোগ নির্ণয়ে কিট (Kit) আবিষ্কার করলেন এক বাঙালি গবেষক। আমদাবাদের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ অকিউপেশনাল হেলথের প্রাক্তন অধিকর্তা, বর্তমানে কলকাতা নাইসেডে কর্মরত কমলেশ সরকারের নিরলস প্রচেষ্টাতেই এই কিট তৈরি সম্ভব হল।
এতদিন পর্যন্ত ফুসফুসের জটিল অসুখ সিলিকোসিস নির্ণয়ে ছিল না কোনও সঠিক পরীক্ষা পদ্ধতি। মূলত বুকের এক্স রে করে, অনুমানের ভিত্তিতে চলত চিকিৎসা। আর তা করতে গিয়ে অনেক সময় সমস্যায় পড়তেন চিকিৎসকরা। কারণ যক্ষ্মার সঙ্গে সিলিকোসিসের খুব একটা তফাত নেই।
গবেষক কমলেশ সরকার বলেন, 'আমাদের কাজ করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে যে লো স্টেজে সিলিকোসিস প্রচুর পরিমাণে আসে। সিলিকোসিসের সঙ্গে টিউবার কিউলোসিস অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে। কোনও রোগীর সিলিকোসিস হলে তাঁর ফুসফুসের ইমিউনিটি পাওয়ার কমে যায়।'
সমস্যার কথা জানতে পেরেই, তা সমাধানের পথ খুঁজতে উদ্যোগী হন কমলেশ সরকার। সঙ্গী হিসেবে পান আরও পাঁচ গবেষককে। ICMR এবং NIOH-এর যৌথ গবেষণায় সিলিকোসিস নির্ণয়ে তৈরি হয়েছে সিলিকো চেক নামে এই বিশেষ কিট। যা প্রাথমিক অবস্থাতেই রোগ চিহ্নিত করতে সাহায্য করবে।
খনি অঞ্চল, পাথর খাদান বা নির্মাণ শিল্পের শ্রমিকদের মধ্যে সিলিকোসিসের প্রবণতা বেশি দেখা যায়। সারা দেশে এক কোটির বেশি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। দীর্ঘদিন ধরে কাশি, শ্বাসকষ্ট, ক্লান্তি বোধ, দুর্বলতা, জ্বর, ওজন কমে যাওয়া, রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় ঘেমে যাওয়ার সঙ্গে বুকে ব্যথাই-মূলত সিলিকোসিসের উপসর্গ।
সিলিকোসিস হলে ক্লাব সেল প্রোটিন ১৬ নামে রক্তের একটি বিশেষ উপাদানের মধ্যে তার প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। সিলিকো চেক সেই উপাদানটিকেই পরীক্ষা করে ফলাফল জানিয়ে দেবে মুহূর্তের মধ্যে। কমলেশ সরকার আরও বলেন, 'এটা একটা প্রেগনেন্সি ডিটেকশনের মতো কিট। এক ফোঁটা রক্ত দিলে ১০ মিনিটের মধ্যে বিভিন্ন ব্যান্ড বের হয়। ফুসফুসের ক্ষয় কতটা হয়েছে তার ওপর প্রত্যেকটি ব্যান্ডের কাজ নির্ভর করে।'
সিলিকো চেক তৈরির বরাত পেয়েছে দিল্লি ও চেন্নাইয়ের দুই সংস্থা। খুব শিগগিরি যা বাজারের মধ্যে আসতে চলেছে। কিটের দাম এখনও ঠিক না হলেও, যাতে তা সাধ্যের মধ্যে থাকে তার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন আবিষ্কর্তা।
আরও পড়ুন: কোন কোন যোগাসন নিয়মিত অভ্যাস করলে দ্রুত মেদ ঝরবে?