নয়াদিল্লি : সোমবারের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। তাই বলে এখনই নিশ্চিন্ত হওয়ার কোনও কারণ নেই বলে, বারবার সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা। সেই সঙ্গে জোর দেওয়া হচ্ছে ভ্যাকসিনেশনের উপরেও। 


কারণ, এখনও পর্যন্ত করোনার ওষুধ বাজারে আসেনি। আরএই প্রেক্ষাপটেই আশার আলো দেখাচ্ছে মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা মার্ক ও রিৎব্যাক বায়ো থেরাপিউটিক্স। তাদের দাবি, করোনা থেকে নিরাময়ের ওষুধ আবিষ্কার করেছে তারা। নাম- মলনুপিরাভির (Molnupiravir) । দিনে দু-বার, একসঙ্গে চারটে করে ক্যাপসুল অর্থাৎ ৮টি ক্যাপসুল খেতে হয়। এইভাবে টানা ৫ দিন খেতে হয় ওষুধ।


এই নিয়মে আমেরিকা-সহ বিভিন্ন দেশের মোট ৭৭৫ জন করোনা আক্রান্তকে পরীক্ষামূলকভাবে ‘মলনুপিরাভির’ খাওয়ানো হয়েছে।  ফলাফলে দেখা গেছে, ৭৭৫ জনের মধ্যে মাত্র ৭ শতাংশকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। তবে কারোর মৃত্যু হয়নি। আর বাকি যাদের শুধুমাত্র প্ল্যাসিবো দেওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ১৪ শতাংশকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। এমনকি ৮ জনের মৃত্যুও হয়েছে। যা দেখে দুই ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার দাবি, তাদের ওষুধ করোনা আক্রান্তদের ওপর কাজ করছে। যদিও এ নিয়ে ভিন্ন মত রয়েছে চিকিৎসকমহলে।  কেউ বলছেন, আশার খবর, কেউ আবার বলছেন, এর আগেও অনেক ওষুধ, রেমডেসিভির...এসেছে। ফলে এখনই আশা দেখছি না, আরও সময় দেখতে হবে। 


মার্ক ও রিৎব্যাকের তৈরি এই করোনার ওষুধ এখনও ছাড়পত্র পায়নি।  তবে শুধু এই দুই সংস্থা নয়, করোনার ওষুধ তৈরি করেছে ফাইজার এবং এটিয়া ফার্মাসিউটিকালের মতো সংস্থাও। তাদের ওষুধের ট্রায়াল চলছে। আগামী মাসেই তার ফলাফল জানা যাবে বলে আশাবাদী দুই সংস্থা। 
করোনার কবল থেকে মুক্তি পেতে দেশজুড়ে চলছে ভ্যাকসিনেশন। জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের জন্য এখনও পর্যন্ত ভারতে ৬টি ভ্যাকসিন ছাড়পত্র পেয়েছে। কিন্তু, এটাও দেখা যাচ্ছে, ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও অনেকে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে কতটা কার্যকরী করোনার ভ্যাকসিন? ভ্যাকসিন নিয়ে কতটা লাভ হচ্ছে? এর উত্তর খুঁজতে বিশ্বজুড়ে সমীক্ষা চালিয়েছে Indian Statistical Institute বা ISI. তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রথম ডোজ নেওয়ার পর যাঁরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৯৩ শতাংশের শরীরেই করোনা ভয়াবহ আকার নেয়নি।  বাকি ৭ শতাংশের মধ্যে মাত্র ৩ শতাংশের ক্ষেত্রে অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে হচ্ছে, বা হাসপাতালে পাঠাতে হয়েছে। বাকি চার শতাংশকে বাঁচানো যায়নি। তবে তাঁদের বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই কোমরবিডিটি ছিল বলে দাবি করছেন গবেষকরা। ISI-এর সমীক্ষায় উঠে এসেছে, এখনও পর্যন্ত বিশ্বে যে সমস্ত করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে, প্রথম ডোজের কার্যকারিতা থাকছে ৮ থেকে ৯ মাস। ফলে এই সময়টা সেফ টাইম হলেও, দ্বিতীয় ডোজ না নিলে এক বছরের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। তবে দ্বিতীয় ডোজের কার্যকারিতা কতটা, তা জানতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে বলে মনে করছেন গবেষকরা। 

এই পরিস্থিতিতে করোনার ওষুধের দিকে তাকিয়ে মানুষ ও চিকিৎসকমহল ।