সোশ্যাল মিডিয়ার টাইমলাইনে চোখ রাখলেই ভেসে উঠছে পোস্ট। '' প্লাজমা ডোনার চাই। অমুখ ব্লাড গ্রুপ। গত ৩ মাসের মধ্যে করোনা মুক্ত, ১৮ থেকে ৫০ এর মধ্যে বয়স হলে যোগাযোগ করুন।'' 
আবার কোভিড মুক্ত হয়ে প্লাজমা দান করে সেলফি পোস্ট করার নজিরও বহু। 'আমিও প্লাজমা দিয়েছি, আপনিও দিন।' - এই ধরনের ইন্পিরেশনাল ক্যাপশন। 
২০২০ সাল থেকে করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিতসায় শুরু হয় প্লাজমা থেরাপির প্রয়োগ।


-  কী এই প্লাজমা থেরাপি?

কেউ কোভিড মুক্ত হওয়ার পর তাঁর শরীরে যদি অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে থাকে তাহলে সেই প্রতিরোধক্ষমতা প্লাজমার মারফত আক্রান্তের শরীরে দিয়ে দেওয়াই হল এই থেরাপির মূল কথা। 
গতবছর করোনার প্রথম ঢেউয়ে ভারত যখন জেরবার তখন প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করে কিছু ক্ষেত্রে আশাব্যাঞ্জক ফল পেয়েছিলেন চিকিত্সকরা। কিন্তু করোনায় মৃত্যু ঠেকাতে কনভালেসেন্ট প্লাজমার তেমন কোনও ভূমিকা দেখা যায়নি 'প্লাসিড ট্রায়াল' নামে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর) প্লাজমা থেরাপি ট্রায়ালে। তবুও বিভিন্ন হাসপাতালে এখনও মৃদু উপসর্গধারী থেকে মাঝারি উপসর্গের করোনা রোগীদের উপর প্রথাগত চিকিতসার পাশাপাশি প্লাজমা থেরাপিও করা হচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে।
 
কিন্তু ঠিক কতটা কাজে আসছে প্লাজমা থেরাপি? রোগী ঠিক কী অবস্থায় থাকলে কাজে আসে এই চিকিত্সা পদ্ধতি?

 হালফিলে আইসিএমআরের গবেষণায় উঠে এসেছে একটি তথ্য। তেমন ভাবে  সুফল  আসছে না প্লাজমা থেরাপিতে। তাই এই চিকিৎসা পদ্ধতিটিকে ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট গাইডলাইন থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে। ICMR এবং ন্যাশনাল টাস্কফোর্সের বৈঠকে প্লাজমা চিকিতসায় ফল না মেলার বিষয়টি উঠে এসেছে। 
শহরের বিশিষ্ট চিকিত্সকরা বলছেন, প্লাজমা চিকিত্সায় ক্রিটিক্যাল রোগীদের সেরে ওঠার নজির বেশ কম। 


ডা. দীপ্তেন্দ্র সরকার জানালেন, সামান্য থেকে মাঝারি উপসর্গ হলে প্লাজমা দানে রোগী একটু সুস্থ হতে পারে। কিন্তু ক্রিটিক্যাল রোগীর ক্ষেত্রে প্লাজমাদানে ফল নেই বললেই চলে। করোনাভাইরাস আক্রমণ করলে তাকে প্রতিহত করতে শরীরে ইমিউন স্টর্ম তৈরি হয়। সেই ঝড় সামাল দেওয়া প্লাজমার কাজ নয়। করোনা থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তির প্লাজমা থেকে অ্যান্টিবডি পাল গ্রহীতার শরীর। তা ভাইরাসকে ঘায়েল করার চেষ্টা করে। কিন্তু ইমিউন স্টর্ম আটকাতে পারে না।


অন্যদিকে মেডিকা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের বিশিষ্ট চিকিতসক ডা. দীপাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ও জানালেন এই মুহূর্তে প্লাজমা চিকিতসার তেমন কোনও ইতিবাচক ফল মিলছে না। বিশেষত ভাইরাস যখন শরীরকে রীতিমতো ঘায়েল করে, রোগীর অবস্থা গুরুতর হয়, তখন প্লাজমা দান বিশেষ কাজ হয় না। এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি আইসিএমআর-এর একটি বিবৃতির উল্লেখ করেন। 


ICMR এর বিবৃতিতে স্পষ্টতই উল্লেখ আছে, Convalescent Plasma Therapy বা CPT বা passive immunotherapy অতীতে অন্যান্য ভাইরাল ইনফেকশনের রোগীদের উপর প্রয়োগ করা হয়েছে। যেমন H1N11, Ebola2 and SARS-CoV-13 ইত্যাদির উপর। কোভিড -১৯ এর রোগীদের ক্ষেত্রে অবস্থার উন্নতি, মৃত্যুর হার কমানো, হাসপাতালে থাকার সময় কমিয়ে আনা এগুলো নির্ভর করে যে প্লাজমা দেওয়া হচ্ছে তাতে অ্যান্টিবডির ঘনত্ব ( concentration) এর উপর।
 
২০২০ তে আইসিএমআর ৩৯টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে Convalescent Plasma Therapy  প্রয়োগ করে দেখে করোনা রোগীদের উপর (PLACID Trial)। তাতে দেখা গেছে প্লাজমা নিয়েছেন এমন রোগী আর প্লেজমা নেননি এমন রোগীদের মধ্যে রোগ থাকে তাড়াতাড়ি সেরে ওঠা বা মৃত্যুর কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বিশেষ পার্থক্য নেই। এই PLACID Trial  সারা পৃথিবীতে সিপিটি নিয়ে করা সব থেকে বড় সমীক্ষা।  
তবু এখনও প্লাজমা চিকিতসা চলছে। সেক্ষেত্রেও বেশ কিছু নির্দেশ স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে আইসিএমআর। 


কারা দিতে পারেন প্লাজমা ? 


- মহিলা বা পুরুষ যে কেউ । 
- বয়স ১৮ থেকে ৬০ এর মধ্যে হতে হবে। 
-শরীরের ওজন ৫০ কেজির বেশি হতে হবে। 
-করোনার উপসর্গ চলে যাওয়ার ১৪ দিন পর থেকেই যে কেউ প্লাজমা দানে উপযুক্ত। তবে রক্ত পরীক্ষা করে দেখে নিতে হবে অন্য কোনও রক্তবাহিত ভাইরাসের অস্তিত্ব আছে কি না । যেমন - 
- HIV
- HBV
- HCV etc.
 এছাড়া রক্তে অ্যান্টিবডির কনসেন্ট্রেশন সংক্রান্ত কিছু টেস্ট করিয়ে নেওয়া হবে প্লাজমা নেওয়ার আগে। 


কাদের প্লাজমা দেওয়া যাবে ? 


-যাঁদের ৩-৭ দিন ধরে উপসর্গ দেখা গেছে। 
- ১০ দিন পেরিয়ে গেলে প্লাজমা দিয়ে লাভ নেই। 
- রোগীর অনুমতি নিয়েই প্লাজমা দিতে হবে।



সোশ্যাল মিডিয়ার টাইমলাইনে চোখ রাখলেই ভেসে উঠছে পোস্ট। '' প্লাজমা ডোনার চাই। অমুখ ব্লাড গ্রুপ। গত ৩ মাসের মধ্যে করোনা মুক্ত, ১৮ থেকে ৫০ এর মধ্যে বয়স হলে যোগাযোগ করুন।'' 
আবার কোভিড মুক্ত হয়ে প্লাজমা দান করে সেলফি পোস্ট করার নজিরও বহু। 'আমিও প্লাজমা দিয়েছি, আপনিও দিন।' - এই ধরনের ইন্পিরেশনাল ক্যাপশন। 
২০২০ সাল থেকে করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিতসায় শুরু হয় প্লাজমা থেরাপির প্রয়োগ।


-  কী এই প্লাজমা থেরাপি?
কেউ কোভিড মুক্ত হওয়ার পর তাঁর শরীরে যদি অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে থাকে তাহলে সেই প্রতিরোধক্ষমতা প্লাজমার মারফত আক্রান্তের শরীরে দিয়ে দেওয়াই হল এই থেরাপির মূল কথা। 
গতবছর করোনার প্রথম ঢেউয়ে ভারত যখন জেরবার তখন প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করে কিছু ক্ষেত্রে আশাব্যাঞ্জক ফল পেয়েছিলেন চিকিত্সকরা। কিন্তু করোনায় মৃত্যু ঠেকাতে কনভালেসেন্ট প্লাজমার তেমন কোনও ভূমিকা দেখা যায়নি 'প্লাসিড ট্রায়াল' নামে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর) প্লাজমা থেরাপি ট্রায়ালে। তবুও বিভিন্ন হাসপাতালে এখনও মৃদু উপসর্গধারী থেকে মাঝারি উপসর্গের করোনা রোগীদের উপর প্রথাগত চিকিতসার পাশাপাশি প্লাজমা থেরাপিও করা হচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে।
 
কিন্তু ঠিক কতটা কাজে আসছে প্লাজমা থেরাপি? রোগী ঠিক কী অবস্থায় থাকলে কাজে আসে এই চিকিত্সা পদ্ধতি?
- হালফিলে আইসিএমআরের গবেষণায় উঠে এসেছে একটি তথ্য। তেমন ভাবে  সুফল  আসছে না প্লাজমা থেরাপিতে। তাই এই চিকিৎসা পদ্ধতিটিকে ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট গাইডলাইন থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে। ICMR এবং ন্যাশনাল টাস্কফোর্সের বৈঠকে প্লাজমা চিকিতসায় ফল না মেলার বিষয়টি উঠে এসেছে। 
শহরের বিশিষ্ট চিকিত্সকরা বলছেন, প্লাজমা চিকিত্সায় ক্রিটিক্যাল রোগীদের সেরে ওঠার নজির বেশ কম। 


ডা. দীপ্তেন্দ্র সরকার জানালেন, সামান্য থেকে মাঝারি উপসর্গ হলে প্লাজমা দানে রোগী একটু সুস্থ হতে পারে। কিন্তু ক্রিটিক্যাল রোগীর ক্ষেত্রে প্লাজমাদানে ফল নেই বললেই চলে। করোনাভাইরাস আক্রমণ করলে তাকে প্রতিহত করতে শরীরে ইমিউন স্টর্ম তৈরি হয়। সেই ঝড় সামাল দেওয়া প্লাজমার কাজ নয়। করোনা থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তির প্লাজমা থেকে অ্যান্টিবডি পাল গ্রহীতার শরীর। তা ভাইরাসকে ঘায়েল করার চেষ্টা করে। কিন্তু ইমিউন স্টর্ম আটকাতে পারে না।


অন্যদিকে মেডিকা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের বিশিষ্ট চিকিতসক ডা. দীপাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ও জানালেন এই মুহূর্তে প্লাজমা চিকিতসার তেমন কোনও ইতিবাচক ফল মিলছে না। বিশেষত ভাইরাস যখন শরীরকে রীতিমতো ঘায়েল করে, রোগীর অবস্থা গুরুতর হয়, তখন প্লাজমা দান বিশেষ কাজ হয় না। এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি আইসিএমআর-এর একটি বিবৃতির উল্লেখ করেন। 


ICMR এর বিবৃতিতে স্পষ্টতই উল্লেখ আছে, Convalescent Plasma Therapy বা CPT বা passive immunotherapy অতীতে অন্যান্য ভাইরাল ইনফেকশনের রোগীদের উপর প্রয়োগ করা হয়েছে। যেমন H1N11, Ebola2 and SARS-CoV-13 ইত্যাদির উপর। কোভিড -১৯ এর রোগীদের ক্ষেত্রে অবস্থার উন্নতি, মৃত্যুর হার কমানো, হাসপাতালে থাকার সময় কমিয়ে আনা এগুলো নির্ভর করে যে প্লাজমা দেওয়া হচ্ছে তাতে অ্যান্টিবডির ঘনত্ব ( concentration) এর উপর।
 
২০২০ তে আইসিএমআর ৩৯টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে Convalescent Plasma Therapy  প্রয়োগ করে দেখে করোনা রোগীদের উপর (PLACID Trial)। তাতে দেখা গেছে প্লাজমা নিয়েছেন এমন রোগী আর প্লেজমা নেননি এমন রোগীদের মধ্যে রোগ থাকে তাড়াতাড়ি সেরে ওঠা বা মৃত্যুর কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বিশেষ পার্থক্য নেই। এই PLACID Trial  সারা পৃথিবীতে সিপিটি নিয়ে করা সব থেকে বড় সমীক্ষা।  
তবু এখনও প্লাজমা চিকিতসা চলছে। সেক্ষেত্রেও বেশ কিছু নির্দেশ স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে আইসিএমআর। 


কারা দিতে পারেন প্লাজমা ? 


- মহিলা বা পুরুষ যে কেউ । 
- বয়স ১৮ থেকে ৬০ এর মধ্যে হতে হবে। 
-শরীরের ওজন ৫০ কেজির বেশি হতে হবে। 
-করোনার উপসর্গ চলে যাওয়ার ১৪ দিন পর থেকেই যে কেউ প্লাজমা দানে উপযুক্ত। তবে রক্ত পরীক্ষা করে দেখে নিতে হবে অন্য কোনও রক্তবাহিত ভাইরাসের অস্তিত্ব আছে কি না । যেমন - 
- HIV
- HBV
- HCV etc.
 এছাড়া রক্তে অ্যান্টিবডির কনসেন্ট্রেশন সংক্রান্ত কিছু টেস্ট করিয়ে নেওয়া হবে প্লাজমা নেওয়ার আগে। 


কাদের প্লাজমা দেওয়া যাবে ? 


-যাঁদের ৩-৭ দিন ধরে উপসর্গ দেখা গেছে। 
- ১০ দিন পেরিয়ে গেলে প্লাজমা দিয়ে লাভ নেই। 
- রোগীর অনুমতি নিয়েই প্লাজমা দিতে হবে। z