প্রস্টেটের অসুখ নিয়ে কমবেশি সকলের মনেই নানা বিভ্রান্তি আছে। বয়স বাড়লে রাতে বারে বারে বাথরুম যেতে হয়, অনেকের আবার প্রস্রাবে সংক্রমণ হবার ঝুঁকি বাড়ে। বেশি বয়সে কি নিয়ম করে প্রস্টেট চেক আপ করানো উচিৎ !  জেনে নেওয়া যাক সিনিয়র কনসাল্ট্যান্ট ইউরোলজিস্ট ডা. অমিত ঘোষ কী বলছেন।  

ইদানীং নিয়ম করে হেলথ চেকআপ করার একটা ট্রেন্ড শুরু হয়েছে। এই সচেতনতা অবশ্যই ভাল। কিন্তু, প্রৌঢ়দের প্রস্টেটের সমস্যা খতিয়ে দেখার জন্য অবশ্যই একজন ইউরোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া দরকার। একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারই প্রস্টেট সংক্রান্ত সমস্যার যথাযথ চিকিৎসা করতে সক্ষম। কয়েকটা ঘটনার কথা জানলে বুঝতে পারবেন।  

ঘটনা - ১) সেদিন চেম্বারে ৭১ বছরের এক প্রৌঢ় এলেন প্রস্টেটের সমস্যা নিয়ে। রাত্তিরে বার চারেক বাথরুমে যেতে হয়, ঘুমোতে পারেন না। তাঁর জিজ্ঞাস্য ছিল প্রস্টেট কি অপারেশন করাতেই হবে ? ওনাকে ভাল করে পরীক্ষা করে এবং কথা বলে জানলাম যে উনি সারাদিনে প্রায় চার লিটার কখনও তারও বেশি জলপান করেন। রাতেও জলপানে বিরতি দেন না। প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের সেইরকম কোনও সমস্যাই নেই। শুধুমাত্র জলপানের প্যাটার্ন আর মাত্রা পাল্টে দিয়েই ওনার সমস্যা চলে গেল। অপারেশন তো দূরের কথা, ওষুধও লাগল না। 

ঘটনা – ২) ভদ্রলোকের বয়স ৮৯ বছর। প্রস্টেটের সমস্যার কারণে দীর্ঘদিন ক্যাথিটার নিয়ে অস্বস্তিকর জীবনযাপন করছিলেন। আমার কাছে যখন এলেন পরীক্ষা করে দেখা গেল, প্রস্টেটের কারণে নয়, ইউরিনারি ব্লাডারে স্টোন থাকায় প্রস্রাব আটকে যায়, সার্জারি দরকার। বয়সের কথা বিবেচনা করে ওনার ছেলেরা  রাজি হচ্ছিলেন না। কিন্তু, রোগী নিজেই সার্জারি করাতে ইচ্ছুক। প্রেশার, সুগার,  হার্ট সব মনিটরিং করে ওনার অস্ত্রোপচার সফল হল। এখন একদম ফিট, ক্যাথিটারের ঝামেলা থেকে নিস্তার পেয়ে আমাকে কৃতজ্ঞতা জানালেন। 

বেশি বয়সে পুরুষদের প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের কাজ কমে যাওয়ায় এটি বড় হয়ে যেতে শুরু করে। ইউরেথ্রা বা মূত্রনালীর চারপাশে প্রস্টেট গ্ল্যান্ড থাকে বলে এটি বাড়তে থাকলে মূত্রনালীতে চাপ পড়ায় প্রস্রাবের সমস্যা শুরু হয়। আবার অনেক সময় ক্যানসারের কারণেও প্রস্টেট গ্ল্যান্ড বড় হয়ে যেতে পারে। তাই ৫০ – ৫৫ বছরের পুরুষদের প্রস্রাবের সমস্যা হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। প্রস্রাবের সমস্যা হলেই যে প্রস্টেটের বড় রকমের অসুখ সবসময় তা নয়। অনেকে আলট্রাসনোগ্রাফি (USG) করিয়ে প্রস্টেট বড় দেখলেই সার্জারির কথা ভাবেন। জেনে রাখুন, প্রস্টেট গ্ল্যান্ড বড় হয়ে যদি উপসর্গ দেখা যায়, তখনই চিকিৎসা দরকার। অভিজ্ঞ ইউরোলজিস্টই মনিটরিং করা প্রস্টেটের সমস্যার জটিলতা আটকাতে সঠিক চিকিৎসা করতে পারেন। যথাযথ ওষুধ দিয়ে প্রস্টেটের অসুখের উপসর্গ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। প্রস্টেট  ক্যানসার ধরা পড়লে অনেক  সময়  শুধুমাত্র নিয়মিত চেকআপ করে অপেক্ষা করতে হয়। প্রয়োজনে র‍্যাডিক্যাল প্রস্টেকটমির সাহায্যে ক্যানসার নির্মূল করা যায়। কোন ধরণের প্রস্টেটের সমস্যায় সার্জারির প্রয়োজন আছে তা স্থির করেন একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক। প্রস্টেটের অসুখ নিয়ে চিন্তা না করে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন, দীর্ঘজীবী হন।

Prostate & Kidney stone Helpline: 9830010004   [Disclaimer: This is a paid feature. ABP Network Pvt. Ltd. and/or ABP Live do not endorse/subscribe to its contents and/or views expressed herein. All information is provided on an as-is basis. The information does not constitute advice or an offer to buy. Consult an expert advisor/health professional before any such purchase. Reader discretion is advised.]