কলকাতা: আজ বিশ্ব এইডস দিবস। HIV এবং AIDS নিয়ে সচেতনতা বিস্তারে প্রত্যেক বছর, এই ১ ডিসেম্বর দিনটিতেই পুরো দুনিয়ায় 'ওয়ার্ল্ড এইডস ডে' উদযাপন করা হয়ে থাকে। কিন্তু প্রশ্ন হল, এত কথা, এত আলোচনার পরও HIV And AIDS নিয়ে কতটা বিজ্ঞানসম্মত ধারণা রয়েছে আমাদের মধ্যে?সমাজের একাংশের মধ্যে এখনও HIV/AIDS আক্রান্তদের নিয়ে এখনও বেশ কিছু ভ্রান্ত ধারণা চালু রয়েছে।
ভ্রান্ত ধারণা ও বৈজ্ঞানিক সত্য...
- যেমন আজও অনেকের বিশ্বাস, HIV/AIDS আক্রান্তদের স্পর্শ করলেই সেখান থেকে রোগ ছড়িয়ে যায়।বিজ্ঞান যদিও সেই কথা বলছে না। দেহরসের আদানপ্রদানের মাধ্যমেই এই রোগের সংক্রমণ ছড়ানো সম্ভব। আরও স্পষ্ট করে বললে কোনও আক্রান্তের রক্ত, সিমেন বা জরায়ু থেকে যে নিঃসরণ হয়, তার সংস্পর্শে এলে এই রোগ ছড়াতে পারে।
- সাধারণ ভাবে আক্রান্তের কফ, সর্দি, কাশি থেকেও এই সংক্রমণ ছড়ায় না। সংক্রমিতের সঙ্গে করমর্দনেও এই রোগের আশঙ্কা নেই। তবে সুস্থ ব্যক্তির ত্বকে কোনও ঘা বা ক্ষত থাকলে, সেখান থেকে ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে।
- HIV ধরা পড়েছে মানেই মৃত্যু অবধারিত, এই ভাবনাও সঠিক নয়। বরং, ঠিকঠাক চিকিৎসা করে 'ভাইরাল সাপ্রেশন' করা গেলে আক্রান্ত ব্যক্তি বহু বছর বেঁচে থাকতে পারেন।
- সন্তানসম্ভবা মা HIV পজিটিভ মানেই গর্ভস্থ সন্তানও HIV পজিটিভ হবে, এমন ভাবার কোনও কারণ নেই। তবে সময়মতো অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল চিকিৎসা ও সি-সেকশন করে সদ্যোজাতের ক্ষেত্রে সংক্রমণের আশঙ্কা ২ শতাংশেরও নিচে নিয়ে আসা যেতে পারে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
- HIV আক্রান্তদের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিফাংগাল মেডিসিন কার্যকরী নয়, এই ভাবনাও ভুল। বহু ক্ষেত্রে দেখা যায়, HIV আক্রান্তদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় নানা ধরনের ব্যাকটিরিয়া ও ফাংগি-র আক্রমণে বেশি কাহিল হয়ে পড়েন তাঁরা। এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ প্রয়োজন।
- দুই বা ততোধিক HIV আক্রান্ত ঘনিষ্ঠ হলে উদ্বেগজনক কিছু নেই, এই ভাবনাও ভুল। কারণ এসব থেকে HIV-র আরও ভয়ানক স্ট্রেন তৈরি হতে পারে।
- উপসর্গ না থাকলেও কোনও ব্যক্তি যে HIV সংক্রমিত নন, তা বলা যায় না। এমনও দেখা গিয়েছে যে, বহু বছর পর এর উপসর্গ দেখা দিল। কারও কারও ক্ষেত্রে আবার পরীক্ষা না করলে ধরাই পড়ত না, এমন উদাহরণও রয়েছে।
- আজও অনেকে মনে করেন, যে HIV সংক্রমিতদের সঙ্গে খাবার, পানীয় জল ও রান্নার বাসন 'শেয়ার' করলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। বিজ্ঞান সে রকম কোনও কথা বলে না। এরকম একাধিক ভ্রান্ত বিশ্বাস আজও মেনে চলেন অনেকে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, সঠিক তথ্য় যাচাই করে সংক্রমিতের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়াই এই সমস্যা মোকাবিলার উপায়।
আরও পড়ুন:শীতের মরশুমে কেন 'গাঁটের ব্যথা' বাড়ে? কীভাবে এর উপশম সম্ভব?