লন্ডন: শরীরে মারণ ভাইরাসের বাসা (COVID-19 Infection)। পাঁচ-দশদিন নয়, এক মাসও নয়। একটানা প্রায় দেড় বছর। নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধি যখন আতঙ্ক ধরাচ্ছে মনে, সেই সময় এমনই এক রোগীর হদিশ মিলল (Longest COVID Infection)। একাধিক কোমর্বিডিটিতে আক্রান্ত ওই রোগী অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েন। হ্রাস পায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। তাতেই টানা দেড় বছর কোভিড-১৯ ভাইরাস (Coronavirus) তাঁকে কাবু করে রাখে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের। তাঁদের দাবি, বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম কোভিড সংক্রমণের রেকর্ড গড়েছেন ওই ব্যক্তি। কিন্তু নিভৃতবাসের মেয়াদ পেরনো সকলে কোভিড পরীক্ষা করান না। তাই এই দাবির সত্যাসত্য নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে (Longest Known COVID Infection)। তাঁদের মতে বিজ্ঞানীদের গোচরে এসেছে এমন দীর্ঘতম কোভিড সংক্রমণ বলা যেতে পারে এই ঘটনাকে।


প্রায় ১৬ মাস কোভিড নিয়ে বাঁচা


টানা ৫০৫ দিন ধরে শরীরে করোনা বয়ে বেড়ানো ওই রোগীর ব্রিটেনের বাসিন্দা। যুদ্ধ জিতে ফেরা হয়নি তাঁর। ২০২১ সালেই মারা গিয়েছেন। ওই রোগীর নাম-পরিচয় যদিও খোলসা করেননি বিজ্ঞানীরা। তিনি করোনা প্রতিরোধী টিকা নিয়েছিলেন কিনা, তা-ও জানা যায়নি। তবে আলফা, গামা, ওমিক্রন-সহ করোনার ১০টি রূপ তাঁকে কাবু করেছিল বলে জানানো হয়েছে। এখনও বিষয়টি নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে কিং কলেজ লন্ডন, এবং এনএইচএস ফাউন্ডেশন।


ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, শারীরিক ভাবে দুর্বল, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নেই বললে চলে, এমন নয় রোগীকে নিয়ে গবেষণা চলছে, এইচআইভি, ক্যানসারের মতো গুরুতর কোমর্বিডিটিও রয়েছে যাঁদের। তাঁদের মধ্যে চার জন ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন। অ্যান্টিবডি থেরাপি এবং অ্যান্টিভাইরাল ওষুধে করোনামুক্ত হয়েছেন দু’জন। কোনও রকম চিকিৎসা ছাড়া সুস্থ হয়েছেন দুই রোগী। এক জন রোগী এখনও করোনার সঙ্গে যুঝছেন। শরীরে করোনা সংক্রমণ নিয়ে ৪১২ দিন পার করেছেন তিনি।


আরও পড়ুন: 


বিজ্ঞানীদের দাবি, শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা লোপ পেলে, কোভিডের মারাত্মক প্রভাবের ঝুঁকি বেড়ে যায়। কারণ রোগ প্রতিহত করার যে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, তার কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। সেই অবস্থা থেকে যদি কেউ ফিরেও আসেন, সুস্থ হতে লম্বা সময় লাগে তাঁর। কারণ তাঁদের শরীরের মধ্যেই চরিত্র বদল করতে শুরু করে ভাইরাস। ফলে যত বার ভাইরাস চরিত্র বদলে নতুন রূপ ধারণ করে, সবার আগে তাঁরাই কাবু হন।


দীর্ঘমেয়াদি কোভিডের প্রভাব নিয়ে গবেষণা


দীর্ঘতম সংক্রমণের শিকার ওই রোগীর শারীরিক অবস্থা, গবেষণার বিশদ রিপোর্ট ইতিমধ্যেই ইউরোপীয়ান কংগ্রেস অফ ক্লিনিক্যাল মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিসেস-এ জমা দিয়েছেন গবেষকরা। দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণে মানব শরীরে কী প্রভাব ফেলে, পুরুষ এবং নারীর শরীরে প্রভাব আলাদা হয় কিনা, উপসর্গের কী পার্থক্য থাকে, তা নিয়ে গবেষণার অংশ ওই রিপোর্ট। কোভিডের উপসর্গ ১২ সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে স্থায়ী হলে, তা লং-কোভিড বা দীর্ঘমেয়াদি কোভিড হিসেবে বিবেচিত হয়।