তরতাজা যুবক। সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠা। জিম -অফিস - বন্ধুদের সঙ্গে জমায়েত। এক কথায় হইহই করে কেটে যাওয়া একটা জীবন। শরীরচর্চাও চলে নিয়মিত। কিন্তু হঠাৎ হৃদরোগ ( Heart Attack ) কেড়ে নিল প্রাণ। কতই বা বয়স? মেরেকেটে ৩০-৩৫। এই ঘটনা কিন্তু বিচ্ছিন্ন নয়। প্রায়শই এমন খবর আসছে চেনা পরিচিতর  গণ্ডি থেকে। কম বয়সেই হৃদরোগের খবর পাওয়া যাচ্ছে। হঠাৎ কি তবে বেড়ে গিয়েছে যুবক - যুবতীদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা ? নাকি আগে থেকেই এমন একটা ট্রেন্ড ছিল? এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ( Apollo Multispecialty Hospital )বিশিষ্ট চিকিৎসক অর্পণ চক্রবর্তী । 


এবিপি লাইভের সঙ্গে আলোচনায় ডা. চক্রবর্তী জানালেন, ইদানীং কম বয়সে হার্টের অসুখ বৃদ্ধির কারণ হিসেবে অনেকে কোভিডের দিকে আঙুল তুলছেন। তবে ২০০০ সালের পর থেকে প্রতিবছরই সারা বিশ্বে ২ শতাংশ হারে বাড়ছে। আর চিন্তার বিষয় হল, সারা পৃথিবীতে কার্ডিওভ্যাসকুলার ডিসিজে যত মৃত্যু হয়, তার  ১/৫ অংশ হয় ভারতেই। আর এই সংখ্যাটা ক্রমেই বাড়ছে। এখন সেটা   ১/৪ এর দিকে এগোচ্ছে। আমেরিকাতে বয়স্ককদের হৃদরোগে মৃত্যু কমলেও, কমবয়সীদের মধ্যে মৃত্যু বাড়ছে। 


কেন এই বৃদ্ধি ? এই নিয়ে নানা আলোচনা হলেও, এখনও চিকিৎসকরা ৬টি কারণকেই প্রধান মনে করছেন। 



  • ধূমপান

  • উচ্চ রক্তচাপ

  • কোলেস্টেরল বেশি থাকা

  • ব্লাড সুগার বেশি থাকা 

  • শরীরচর্চার অভাব, থিতু জীবন 

  • জিনগত কারণ : হয়ত কারও পরিবারে হার্ট অ্যটাকের ইতিহাস রয়েছে। বিশেষ করে বাবার দিকে কারও যদি হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকে, তাহলে পরবর্তী প্রজন্মেরও হতে পারে। সেক্ষেত্রে পূর্বপুরুষদের বেশি বয়সে অ্যাটাক হলেও, পরবর্তী প্রজন্মের ক্ষেত্রে এই বয়সটা এগিয়ে আসতে পারে। 

    হঠাৎ জিমে গেলে হিতে বিপরীতও হতে পারে 

  • পরিবারে অন্য কারও হার্ট অ্যাটাক না হলেও, কম বয়সীদের হতে পারে। চিকিৎসক চক্রবর্তী মনে করছেন, বয়স ২৫ পেরলেই রক্তচাপ, ব্লাড সুগার, ওজন ইত্যাদি নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে। ধূমপান নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আর সারাদিন বসে কাজ হলেও , সময় বের করে শরীরচর্চা করতে হবে। আর শরীর চর্চা মানে কিন্তু হঠাৎ করে জিমে গিয়ে পরিশ্রম নয়। তাহলে হিতে বিপরীতও হতে পারে। প্রথমে শুরু করা দরকার হাল্কা এক্সারসাইজ দিয়ে। তারপর ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েই জিমে যাওয়া উচিত।

  • তাছাড়া বয়স ৪০ পেরলেই হার্টের কোনও সমস্যা হয়েছে কি না, তা পরখ করতে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে কয়েকটি পরীক্ষা করে নেওয়া দরকার। 

    মনে রাখতে হবে, একজন তরতাজা যুবকের হৃদরোগ বা হৃদরোগে মৃত্যু কিন্তু একটা পরিবারকে বড়রকম ক্রাইসিসের মুখোমুখি দাঁড় করাতে পারে। তাই সতর্ক হতে হবে রোগ বড় আকার নেওয়ার আগেই।