কলকাতা: শীতের শুরু হতে না হতেই হার্টের রোগের হার বাড়তে থাকে (Heart attack in winter)। এই সময় হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর হারও বাড়তে শুরু করে। যেসব ব্যক্তি উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন, তাদের এই সময় সতর্ক থাকতে বলা হয়। একই সঙ্গে উচ্চ মাত্রায় কোলেস্টেরল বা হার্টের কোনও রোগ আগে থেকে থাকলেও একই পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। 


কিন্তু এ তো গেল বড়দের কথা। প্রাপ্তবয়স্ক ও বৃদ্ধদের জন্য এমন পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। কিন্তু শিশুদের ? গত বছরের ডিসেম্বর থেকেই উত্তরপ্রদেশে হার্ট অ্যাটাকে শিশুদের মৃত্যু হচ্ছে। ডিসেম্বর মাসে দুই শিশুর এভাবে মৃত্যু হয়। আবার রাম মন্দিরের উদ্বোধনের দিন সকালে পাঁচ বছরের একরত্তি শিশু কার্টুন দেখতে দেখতে হার্ট অ্যাটাকে মারা যায়। তাহলে শীতকালে শিশুদের হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা কতটা ? কখন তাদের সাবধানে আগলে রাখতে হবে ? এই বিষয়ে এবিপি লাইভের সঙ্গে বিশদে আলোচনা করলেন সিকে বিড়লা হাসপাতালের কার্ডিয়োথোরাসিক সার্জেন চিকিৎসক মনোজকুমার দাগা


শিশুদের হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা কতটা (Heart attack in children) ?


চিকিৎসকের কথায়, শীতকাল হলেও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকটাই কম। এমনকি বিরলও বলা যায়। কিছু শিশুর ক্ষেত্রে একটি হার্টের রোগ দেখা যায়। যার নাম কাওয়াসাকি ডিজিজ (kawasaki disease)। এই রোগে ধমনীগুলির মধ্যে রক্ত জমাট বেঁধে থাকে নানা জায়গায়। তাদের ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বেশি থাকে। সাধারণত হার্টের ধমনীর কোনও সমস্যা থাকলে তবেই হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা থাকে। একে চিকিৎসকদের পরিভাষায় করোনারি অ্যানোমালি বা অ্যাবনর্মালিটি বলা হয়।


কোন বয়সের জন্য এটি প্রযোজ্য ?


১৮ বছর বয়স না পেরোনো সকল বাচ্চার জন্যই এটি প্রযোজ্য। খুব অল্প বয়স যেমন এক-দুই বছর থেকে ১৮ বছরের আগে পর্যন্ত এই হার্টের রোগ খুব কম ক্ষেত্রেই দেখা যায়। যাদের হার্টের সমস্যা থাকে, তাদেরই হার্টে জটিলতা তৈরি হতে দেখা যায়।


হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ (Heart attack symptoms)


হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সময় বেশ কিছু লক্ষণ দেখা যায়। সাধারণত হার্টের সমস্যায় চিকিৎসার জন্য খুব কম সময় পাওয়া যায়। তাই এই লক্ষণগুলির দিকে খেয়াল রাখা জরুরি।



  • বুকের বামদিকে ব্যথা: বুকের বাম পাশে উপরের দিকে টানটান ব্য়থা হতে পারে। কিছু একটা সংকুচিত হচ্ছে, এমন ব্যথা অনুভূত হয়।

  • কাঁধ ও বগলে ব্যথা: এই ব্যথা বাড়লে তা ধীরে ধীরে কাঁধ ও বগলের দিকে ছড়িয়ে যেতে থাকে। অনেক সময় ব্যথা গলার কাছেও হতে শুরু করে।

  • ক্লান্তিভাব: এই ব্যথা হতে শুরু করলে ক্লান্ত লাগে। দুর্বলতার কারণে অনেকে শুয়েও পড়েন। যার ফলে বিপদ আরও বাড়ে।

  • শ্বাসকষ্ট: শ্বাসকষ্টের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। রক্তে অক্সিজেন কমতে শুরু করায় এই সমস্যা হয়।

  • ঘাম হয়: কারও কারও হার্ট অ্যাটাকের সময় ঘাম হতে থাকে।


কী করণীয় ?


হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলি বুকে ব্যথারও লক্ষণ। এই লক্ষণগুলি খুদের মধ্যে দেখলে তাকে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। অনেক সময় খুদে নিজে থেকে এই উপসর্গের কথা বলতে পারে না। সেক্ষেত্রে খেলাধুলো বা পড়াশোনার সময় ওর গতিবিধির উপর নজর রাখতে হবে। ক্লান্তিভাব, হঠাৎ করেই ঘাম হতে থাকার মতো উপসর্গ দেখলে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।


আরও পড়ুন: Weight Loss: ব্রিস্ক ওয়াকিং না জগিং? ওজন ঝরাতে কোনটা ভাল? কোনটাই বা বিপদের