আমাদের বেশিরভাগেরই সকাল শুরু হয় মোবাইলের অ্যালার্ম দিয়ে। যতটা তীব্র স্বর রাখা যায়,ততটাই রাখার চেষ্টা করেন অনেকে। নাহলে নাকি ঘুম ভাঙতেই চায় না। আর দেরি হওয়া মানেই টেনশন। অনেকের তাতেই চরমে ওঠে স্ট্রেসের মাত্রা। তরতর করে বাড়ে ব্লাড প্রেসার। তাই ঠিক সময়ে ঘুম থেকে ওঠা নিশ্চিত করতে অনেকেই অ্যালার্ম ক্লকের উপরে ভারসা করেন। কিন্তু জানেন কি, এই অ্যালার্ম ক্লকের চ্যাঁ-চ্যাঁ শব্দ আপনার হার্টের কত বড় ক্ষতি করতে পারে।
স্নায়ু চিকিৎসকদের একাংশ মনে করছেন এমনটাই। সতর্ক করে দিচ্ছেন, সকালে বারবার অ্যলার্মের চড়া শব্দ, মস্তিষ্ক ও হৃদয়ের বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে। সম্প্রতি হায়দরাবাদের বিশিষ্ট স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ সুধীর কুমার একটি ভিডিওতে এই ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁর মতে , এই অ্যালার্মের তাড়া খেয়ে স্ট্রেস হরমোন ক্ষরণ হতে পারে অতিরিক্ত হারে। বাড়তে পারে রক্তচাপ হৃদস্পন্দনের গতি হঠাৎ বৃদ্ধি পতে পারে। সব মিলিয়ে শরীরের জন্য বিষয়টি হতে পারে খতরনাক।
সবার শরীরের ভেতরেই একটা ঘড়ি আছে। যা ঘুমিয়ে পড়া ও ঘুম থেকে ওঠার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে। একে সার্কাডিয়ান রিদম বলে। এই রিদম ঘুমিয়ে পড়া এবং উঠে পড়ার বিষয়টিকে নিয়ন্ত্রণ করে। ঘুম সম্পূর্ণ হলে, মস্তিষ্ক স্বাভাবিকভাবেই মানুষকে জাগিয়ে দেয়। এতে শরীরে কোনও জার্ক আসে না। কিন্তু অ্যালার্ম ঘড়ির শব্দ এই প্রক্রিয়াটিকে ব্যাহত করে। প্রায়শই শরীরকে গভীর ঘুমের মধ্যেই ভয়ঙ্কর ধাক্কা দিয়ে জাগিয়ে তোলে।
ডাঃ কুমারের মতে, এই অ্যালার্মক্লকের আওয়াজ "স্ট্রেস হরমোন" কর্টিসলের তীব্র বৃদ্ধি ঘটাতে পারে। সাধারণত, সকালে কর্টিসলের মাত্রা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়, যা শরীরকে সতেজ বোধ করতে সাহায্য করে। কিন্তু যখন একটি অ্যালার্ম শরীরকে জোর করে ধাক্কা দিয়ে জাগিয়ে দেয়, তখন কর্টিসলের মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যায়। এতে হৃদযন্ত্রের উপর অপ্রয়োজনীয় চাপ সৃষ্টি হতে পারে।
ডাক্তারের পরামর্শঅ্যালার্ম ছাড়াই ঘুম থেকে ওঠাই স্বাস্থ্যকর। কারণ, শরীর তখনই নিজে থেকে জেগে ওঠে যখন ঘুমের চক্র সম্পন্ন হয়।স্বাভাবিকভাবে হালকা ঘুমের (REM বা N2) সময় ঘুম থেকে ওঠে মানু। তাই শরীরটা সতেজ লাগে। স্বাভাবিকভাবে ঘুম থেকে ওঠা সারা দিন ধরে ভালো মেজাজ ধরে রাখতে সাহায্য করে। বুদ্ধিও কাজ করে ভাল।
▶️স্বাস্থ্যের জন্য ভাল হল, অ্যালার্ম ছাড়াই ঘুম থেকে ওঠা। ▶️যদি আপনাকে অ্যালার্ম ব্যবহার করতে হয়, তাহলে জোরে অ্যালার্মের চেয়ে ধীরে ধীরে ঘুম থেকে ওঠার আলো অ্যালার্ম বা মৃদু প্রগতিশীল শব্দ স্বাস্থ্যকর। ▶️নিয়মিতভাবে, বারবার অ্যালার্ম ব্যবহার না করে, মাঝে মাঝে পরিমাণে ব্যবহার করুন।