ডায়াবেটিস সায়লেন্ট কিলার। ভারতে যেন মহামারী হয়ে উঠছে ডায়াবেটিস। ধীরে ধীরে কুরে কুরে খায় শরীর। একের পর এক অরাগান হয় ক্ষতিগ্রস্ত। এরই মধ্যেই নতুন এক গবেষণায় উঠে এল এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। গবেষণায় দাবি, টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মহিলাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি পুরুষদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। আর সেই ধাক্কা আসে কোনও লক্ষণ ছাড়াই। ইউনিভার্সিটি অফ লিসেস্টারের এক গবেষণায় উঠে এসেছে ভয় ধরানো তথ্য। করোনারি মাইক্রোভ্যাসকুলার ডিসফাংশনের (coronary microvascular dysfunction)-এর সমস্যা আসতে পারে ডায়াবেটিসের হাত ধরে। 

গবেষণা বলছে, যে মহিলারা টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তাদের মধ্যে ৪৬ শতাংশের সিএমডি-র (CMD) লক্ষণ পাওয়া যায়।  দেখা গিয়েছে পুরুষদের মধ্যে মাত্র ২৬ শতাংশের মধ্যে এই সমস্যা দেখা যায়। সিএমডি হার্টের একটি বড় ক্ষতি।  যা হৃদয়ের সবচেয়ে সূক্ষ্ম রক্তনালীতে রক্ত ​​প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণে হয় এবং এটি প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো লক্ষণ দেখায় না। হৃৎপিণ্ডের এই সমস্যা সরাসরি প্রাভাবিত করে সূক্ষ্ম রক্তনালীগুলিকে । এর ফলে বুকে ব্যথা হয়। এ ক্ষেত্ে রক্তনালীগুলির ভেতরের দিকের দেওয়ালে ক্ষতি হয়। এর ফলে খিঁচুনি এবং রক্ত প্রবাহ হ্রাস পেতে পারে। পুরুষদের তুলনায় নারীরা করোনারি এমভিডিতে বেশি আক্রান্ত হয়, বিশেষ করে যাদের ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কম। উল্লেখ্য, মেনোপজের পরই মেয়েদের শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমে।এই সময়ই তাই এই অসুখের ঝুঁকি বেশি। 

এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন, অধ্যাপক জেরি ম্যাককান। তিনি জানিয়েছেন, হার্টের এই ধরনের সমস্যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে এমন মহিলাদের ক্ষেত্রে, যাদের আগে কখনও হার্টের কোনও সমস্যা হয়নি।  বুকে ব্যথা বা শ্বাসকষ্টের মতো কোনো লক্ষণ ছাড়েই আসছে ধাক্কা।  

গবেষক, চিকিৎসক গৌরব গুলসিন-এর মতে, গবেষণায় দেখা গেছে যে মহিলাদের এবং পুরুষদের মধ্যে সিএমডি-র কারণ আলাদা হতে পারে। মহিলাদের ক্ষেত্রে এর প্রধান কারণ হল শরীরের ওজন বৃদ্ধি। আর পুরুষদের ক্ষেত্রে এর কারণ উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা।তাই এই রোগ থেকে বাঁচতে একেক জনকে সতর্ক হতে হবে একেক রকম ভাবে। 

এই গবেষণাটি এনআইএইচআর বায়োমেডিকেল রিসার্চ সেন্টারের (NIHR Biomedical Research Centre) একটি বড় সাফল্য হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। এই গবেষণায় কার্ডিওভাসকুলার, লাইফস্টাইল এবং ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞরা একসঙ্গে কাজ করেছেন। এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত আরও কয়েকজন গবেষক জানিয়েছেন, মহিলাদের ক্ষেত্রে ওজন নিয়ন্ত্রণ বং পুরুষদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা , হার্ট ফেইলিউরের আশঙ্কা অনেকাংশে কমাতে পারে।