কলকাতা: কেরিয়ারের চাপ, অনিয়মিত জীবন। তার সঙ্গেই স্ট্রেস ও অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া। এরকম নানা কারণেই শরীরে জুড়ে বসছে একাধিক রোগ-বালাই। উচ্চ-রক্তচাপ থেকে কোলেস্টেরল-নানা সমস্যায় বাড়ে ঝুঁকি। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, শরীর ভাল রাখতে সবসময় নজর রাখতে হয় খাওয়া-দাওয়ার উপর।  


উচ্চ রক্তচাপ কী?
হাইপারটেনশন (Hypertension) আদতে কী? হাইপারটেনশনের সমস্যা উচ্চ রক্তচাপের (blood pressure) সঙ্গে সম্পর্কিত। মানবদেহের ধমনীর মধ্যে দিয়ে চলাচল করার সময় ধমনীর (blood vessels) গায়ে রক্ত যে পরিমাণ ধাক্কা দেয় সেটাকেই রক্তচাপ বলা হয়। হৃদযন্ত্রের গতি, ধমনীর দেওয়ালের পরিস্থিতি এবং আরও নানা কারণের উপর রক্তচাপের মাপ নির্ভর করে। রক্তচাপ একটি নির্দিষ্ট মাপের উপর গেলেই তাকে হাইপারটেনশন বলা হয়। 


ঝুঁকি কী কী?
কার্ডিওভাস্কুলার (Cardiovascular) রোগ বা হৃদযন্ত্রের যেকোনও সমস্যার সঙ্গে সরাসরি যোগ রয়েছে হাইপারটেনশনের (Hypertension)। হাইপারটেনশনের কারণে স্ট্রোক (stroke), হার্ট অ্যাটাক (heart attack) বা এই ধরনের রোগের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। কারও আগে থেকেই হৃদযন্ত্রের সমস্যা থাকলে অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ বিপদ বাড়িয়ে দিতে পারে। উচ্চ-রক্তচাপের (High Blood pressure) সমস্যা থাকলে ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন। ডাক্তারের পরামর্শ মেনে ওষুধ খেতে হয়।  আবার অনেকসময় পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া এবং জীবনযাপনে সামান্য কিছু পরিবর্তন আনলেই লাগামে রাখা যায় উচ্চ রক্তচাপ। বেশ কিছু খাবার আছে যা আপনার ডায়েটে রাখলে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ফল পাবেন।


বিট (Beetroot)
আমাদের দেশে মূলত শীতকালের পাওয়া যায় বিট। বিভিন্ন তরকারিতে ব্যবহার করা হয় এই সব্জি। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, উচ্চ রক্তচাপ লাগামে রাখতে বিটের রস খুব উপকারী। নিয়মিত বিটের রস খেলে রক্তচাপ বৃদ্ধির সম্ভাবনা কম থাকে। রান্না করা এবং কাঁচা দুভাবেই বিট উপকারী। তবে রস খাওয়ার ক্ষেত্রে কাঁচা বিটের রস সবচেয়ে বেশি কার্যকর।


তরমুজ (watermelon)
বিভিন্ন খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ এই ফল। তরমুজে এমন কিছু যৌগ থাকে যা শরীরের রক্তবাহী নালিকার উপর থাকা চাপ কমায়। যার ফলে রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকতে সাহায্য করে। তরমুজে পর্যাপ্ত জলের পরিমাণ থাকায় তা শরীরে জলের চাহিদাও মেটায়।


ওটস (Oats)
ওজন কমাতে ওটস যে কাজে লাগে তা প্রায় সবাই জানেন। এই ওটসের আরও উপকার আছে। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্যও প্রতিদিনের খাবারে ওটস রাখা উপকারী। ওটসে বেটা গ্লুকন (Beta Glucon) থাকে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ওটসে ফাইবারও থাকে, যা পাচনতন্ত্রকে ঠিক রেখে কোলেস্টেরলকে নিয়ন্ত্রণে রাখে যার ফলে নিয়ন্ত্রণে থাকে উচ্চ রক্তচাপও।


রসুন  (Garlic)
এককোয়া রসুন বহু রোগ দূরে রাখতে পারে। ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকনাশের ক্ষমতা রয়েছে রসুনের। রসুন শরীরে নাইট্রিক অক্সাইড (Nitric Oxide)-এর উৎপাদন বৃদ্ধি করে। যা রক্তবাহী নালিকার উপর চাপ কমিয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে। রসুনের আরও একাধিক উপকার রয়েছে।


ডালিম-বেদানা
রক্তচাপ কমাতে কাজে লাগে বেদানা বা ডালিমের রস। সিস্টোলিক (systolic blood pressue) কমাতে সাহায্য করে ডালিম। হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী এই ফল। এই ফলের রস ফেলে serum angiotensin converting enzyme activity-এর মাধ্যমে সিস্টোলিক রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।   


কলা (Banana)
পটাশিয়ামে ভরপুর হয় কলা। যা উচ্চ রক্তচাপ সামলাতে কার্যকরী। অনেকে বলে থাকেন দিনে একটা করে কলা খেলে রক্তচাপ বৃদ্ধির সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়শনের গবেষকরা জানাচ্ছেন, কলায় পটাশিয়াম থাকায় তা সোডিয়ামের প্রভাব লাগামে রেখে রক্তবাহী নালিকার ভিতরের চাপ কমিয়ে দেয়। 


ডিসক্লেইমার : কপিতে উল্লেখিত দাবি, পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাপদ্ধতি/ডায়েট ফলো করার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ / চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন ও সেইমতো নিয়ম মেনে চলুন।


আরও পড়ুন:  ভায়াগ্রা নিলে হারাতে পারেন দৃষ্টিশক্তি ! বলছে নতুন গবেষণা