Nanoplastic in Human Brain: আমাদের পরিবেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে মাইক্রোপ্লাস্টিক, এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণার একেকটির আকার আবার একটি চুলের থেকেও পাতলা। সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে নিরন্তর আমাদের মস্তিষ্কে জমছে এই মাইক্রোপ্লাস্টিক (Microplastic)। অন্য যে কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের থেকে মস্তিষ্কে এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের সঞ্চয় হচ্ছে সবথেকে বেশি আর এটিই মানুষের জীবনে বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। বাড়তে পারে জীবনের ঝুঁকি। গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন বিগত ৮ বছরে এই ধরনের ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণার মাত্রা আমাদের মস্তিষ্কে ৫০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে।
এ থেকে বোঝাই যায়, আমাদের মস্তিষ্কে প্লাস্টিকের (Microplastic) ঘনত্ব এত ব্যাপকহারে বাড়ছে যে তা আমাদের শরীরে সামগ্রিক বিকাশ রোধ করা এবং নানাবিধ স্নায়বিক রোগের জন্ম দিচ্ছে। সর্বত্র ছড়িয়ে থাকা এই মাইক্রোপ্লাস্টিক খাবারেও আছে, জলেও আছে। এর ব্যাপ্তি ক্রমেই বেড়ে চলেছে। ফলে এই প্লাস্টিক দূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ আশু জরুরি হয়ে পরেছে।
আলবুকার্কের নিউ মেক্সিকো বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সের অধ্যাপক ম্যাথিউ ক্যাম্পেন জানান, 'আমাদের মস্তিষ্কে অনেক বেশি মাত্রায় প্লাস্টিক রয়েছে, যা আমরা কখনও কল্পনাও করতে পারব না এবং যার সঙ্গে আমরা কখনও সুস্থও থাকতে পারব না'। সোমবার নেচার পত্রিকায় এই গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে। এই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, 'যে সমস্ত মস্তিষ্কের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল তাতে গড়ে ৭ গ্রাম করে মাইক্রোপ্লাস্টিক ছিল যা কিনা একটা প্লাস্টিকের চামচের ওজনের কাছাকাছি। ২০২৪ সালের শুরুর দিকে মারা গিয়েছেন এমন ২৪ জন মৃত মানুষের মস্তিষ্ক পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে এবং এর সঙ্গে যখন ২০১৬ সালে মৃত ২৮ জন মানুষের মস্তিষ্ক পরীক্ষা করে দেখা হয়, বোঝা যায় যে এক দশকের কম সময়ের মধ্যেই মস্তিষ্কে মাইক্রো ও ন্যানো প্লাস্টিকের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে ৫০ শতাংশ।
মৃত্যুর আগে ডিমেনশিয়া ধরা পড়েছিল এমন ১২ জন মানুষের মস্তিষ্ক পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে এদের মস্তিষ্কে সঞ্চিত প্লাস্টিকের মাত্রা ৫ গুণ বেশি স্বাভাবিক মানুষের মস্তিষ্কের থেকে। এর থেকেই মাইক্রোপ্লাস্টিকের সঙ্গে নিউরো-ডিজেনারেটিভ রোগের যে সূক্ষ্ম সম্পর্ক থাকতে পারে সেই ইঙ্গিত উঠে আসে। এই পর্যালোচনা আরও নিশ্চিত করতে গবেষকরা ১৯৯৭ সাল এবং ২০১৩ সালের মস্তিষ্ক নমুনা পরীক্ষা করে দেখেন এখানেও প্লাস্টিকের মাত্রা বৃদ্ধি স্পষ্ট। ২০১৬ সালের তুলনায় এই মাত্রা বেড়েছে দ্বিগুণ হারে এবং ২০২৪ সালের তুলনায় ৪ গুণ হারে।
পলিইথিলিন এখনকার যুগের নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রী যা কোনো পণ্য প্যাকেজিংয়ে ব্যবহৃত হয়, এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র দানাগুলি রক্তবাহের দেয়াল ভেদ করে ভিতরে ঢুকে যেতে পারে। তবে কীভাবে এগুলি সোজা মস্তিষ্কে পৌঁছাচ্ছে সেই গতিপথ এখনও অধরা। গবেষকরা ধারণা করছেন যে খাবারের মধ্য দিয়েই এই প্লাস্টিক কণাগুলি মস্তিষ্কে প্রবেশ করে।
আরও পড়ুন: Viral News: স্বামীকে বাঁচাতে ৪০ ফুট গভীর কুয়োয় ঝাঁপ মহিলার, তারপর ? সাহস দেখে অবাক নেটিজেনরা