কলকাতা: রাত পোহালেই বিশ্ব পরিবেশ দিবস (World Environment Day)। প্রত্যেক বছর, ৫ জুন, বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন করা হয়। পরিবেশের (Environment) ক্ষয়ক্ষতি ও কী ভাবে তা সংরক্ষণ করা সম্ভব, তা নিয়ে আলোচনা করতেই এই উদযাপন। কিন্তু কোথা থেকে এল এই উদযাপনের ভাবনা? কেনই বা ৫ জুন দিনটিকে বেছে নেওয়া হল? বিশ্ব পরিবেশ দিবসের আগে একবার ফিরে দেখা যাক সেই ইতিহাস।


ইতিহাস:
১৯৭২ সালে 'স্টকহোম কনফারেন্স অন হিউম্যান এনভায়রনমেন্ট'-এ ৫ জুন দিনটিকে বিশ্ব পরিবেশ দিবস হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল। ১৯৭৩ সালে প্রথম বার উদযাপন হয়  'বিশ্ব পরিবেশ দিবস।' স্লোগান ছিল, 'ওনলি ওয়ান আর্থ।' স্টকহোম কনফারেন্স থেকে 'ইউনাইটেড নেশনস এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম' বা UNEP নামে একটি আন্তর্জাতিক মঞ্চও তৈরি করা হয়।'ইউনাইটেড নেশনস এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম' বা UNEP  এমন একটি আন্তর্জাতিক মঞ্চ যেখানে, পরিবেশ সংরক্ষণের কাজে ১৪৩টিরও বেশি দেশ অংশগ্রহণ করে। চলতি বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের থিম, প্লাস্টিক-দূষণ মোকাবিলার পথ  সন্ধান করা। এবার তাই ক্যাম্পেনের নামকরণ হয়েছে, 'BeatPlasticPollution'।  রাষ্ট্রপুঞ্জের হিসেব অনুযায়ী, গোটা বিশ্বে গড়ে ৪০ কোটি টনেরও বেশি প্লাস্টিক তৈরি হয়। কিন্তু তার মধ্যে মোটে ১০ শতাংশ পুনর্ব্যবহারযোগ্য, বাকি প্লাস্টিকের বিরাট অংশ জলাশয়, নদী, সমুদ্রে এসে জমে থাকে। এর মধ্যে মাইক্রোপ্লাস্টিক খাবার, জল ও বাতাসের সঙ্গে মিশে যায়। ছড়িয়ে পড়ে নানা ভাবে। কী ভাবে এই প্লাস্টিক-দৈত্যের মোকাবিলা করা যায়, কী ভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও বেশি করে এই নিয়ে কাজ করার জন্য উদ্দীপিত করা যায়, সেটিই এই বারের থিম। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এ বছরই 'বিশ্ব পরিবেশ দিবস' উদযাপনের ৫০তম বছর।  


বাস কন্ডাক্টর থেকে 'দ্য ট্রি ম্যান'..
পরিবেশ সংরক্ষণের লড়াইটা অবশ্য একদিনের নয়। তাই বছরভর যে বা যাঁরা এই লড়াইয়ে সামিল থাকেন, তাঁদেরও অনেকের কথা ঘুরেফিরে আসে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের মুখে। যেমন  মারিমুথু ইয়োগানাথন। নিজের হাতে অন্তত লাখ চারেক গাছের চারা (Sapling) পুঁতেছেন। এখনও, মাসিক বেতনের চল্লিশ শতাংশ বীজ ও গাছের চারা কিনতে খরচ হয়ে যায়। তবে এতেই ঢিলেমি দেওয়ার ইচ্ছা নেই মারিমুথু ইয়োগানাথনের (Marimuthu Yoganathan)। বরং ‘গাছ লাগান, প্রাণ বাঁচান’ স্লোগানের তাৎপর্য কী ভাবে আরও বেশি করে মানুষকে বোঝানো যায়, তাই নিয়েই লড়ে চলেছেন তামিলনাড়ুর (Tamil Nadu) ‘Tree Man’। পেশায় রাজ্য পরিবহণ নিগমের বাস কন্ডাক্টর মারিমুথুর এই উদ্যোগ ইতিমধ্যেই বহু স্বীকৃতি পেয়েছে। এসেছে পুরস্কারও। কিন্তু পুরস্কার বা শিরোপার থেকেও নিজের কাজেই বেশি মগ্ন তিনি। বছরদুয়েক আগেকার কথা। তামিলনাড়ুর ‘দ্য ট্রি ম্যান’ বলেছিলেন,  ‘এক সরকারি আধিকারিক হঠাৎ আমার কাছে জানতে চাইলেন পদ্মশ্রী খেতাব পেয়েছি কিনা। জানি না, আমার নাম কেন তালিকায় ওঠেনি। যদিও পুরস্কার আমার মূল লক্ষ্য নয়, তবে এই ধরনের সম্মান পেলে একটা সুবিধা হত। অন্যান্য রাজ্য থেকেও চারাগাছ পোঁতার জন্য আমার কাছে ডাক আসত। সেটাই আমার স্বপ্ন।'


আরও পড়ুন:এই ৫টি জিনিস স্বপ্নে দেখলেই বিপদ সংকেত! জীবনে আসতে পারে দুর্ভোগ