ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: ভারতে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে, এই আশঙ্কা করছেন চিকিত্‍সকরা। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ৷ এরই মধ্যে আবার রবি ও সোমবার দোলযাত্রা এবং হোলি উৎসব ৷ করোনা আবহে অনেক রাজ্যেই হোলি পার্টিগুলির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে ৷ তাই নিষেধাজ্ঞা থাকুক বা না থাকুক, ঝুঁকি এড়াতে এ বছর রং উৎসবে শামিল না হওয়াই ভাল ৷ যদি দোল একান্তই খেলেন, তাহলে করোনার বিধিনিষেধগুলো অবশ্যই মেনে চলুন ৷ মনে রাখবেন, সামান্য অসাবধানতাই সমস্ত আনন্দ মাটি করে দিতে পারে ৷


দোল-হোলির প্রাককালে জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গল-এর আবেদন- দোল-হোলি আসছে। রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এই উৎসব প্রাক-ভোট জনসংযোগের সুযোগ। এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছে না কোনও রাজনৈতিক দল। করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনার চেয়ে এরা অনেক বেশি চিন্তিত ভোট পাওয়া না-পাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে। আর এই সম্ভাবনার সঙ্গে যেখানে ধর্মীয় আবেগ জড়িত সেখানে অন্য সবকিছু গৌণ।


এ রাজ্যে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন মহলে আর্জি জানানো হয়েছে, ভয়ঙ্কর সম্ভাবনার আশঙ্কার কথা সব রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন-- সবার কাছে পৌঁছে দিয়েছি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ আমাদের নজরে আসে নি। পাশাপাশি মনে রাখতে হবে মহারাষ্ট্রে এখন ভয়ঙ্কর ভাবে কোভিড সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। দ্বিতীয় দফার সংক্রমণের ঢেউয়ে মহারাষ্ট্রের জনজীবন আবার প্রবল অনিশ্চয়তার সম্মুখীন। 


মহারাষ্ট্র থেকে ভারতের অন্যান্য রাজ্যে সংক্রমণের সম্ভাবনায় অবিলম্বে বাঁধ দিতে না পারলে দেশের পক্ষে তা অতি বিপজ্জনক হবে।


 আমাদের অনুরোধ


১। অবিলম্বে মহারাষ্ট্র থেকে এবং মহারাষ্ট্রের দিকে মানুষের যাতায়াতের পথ বন্ধ করা হোক। আমাদের মতে এটি এই সময়ে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ।



২। এ বছরের মত প্রকাশ্যে হোলি খেলা রংও আবির দেওয়া নেওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হোক।



৩। মাস্ক পরা বাধ্য করতে প্রসাশন যথার্থ দৃঢ় সদর্থক পদক্ষেপ নিক।



৪। স্বাস্থ্য বিধি পালন করার জন্য রাজ্য প্রসাশন সর্বস্তরে ব্যবস্থা গ্ৰহণ করুক।



৫। কোভিড পরীক্ষার সংখ্যা দ্রুত বাড়িয়ে রোগী চিহ্নিতকরণ ও সংক্রমিত স্থানগুলিকে প্রয়োজন অনুযায়ী বিচ্ছিন্ন করার কাজকে দ্রুত বাস্তবায়িত করে দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলা করার প্রস্তুতি এখনি শুরু না করলে অবিলম্বে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। আমরা আর সহকর্মীদের ও সহনাগরিকদের বিচ্ছেদের সাক্ষী হতে চাই  না।


 ডাঃ হীরালাল কোঙার
, ডাঃ পুণ্যব্রত গুণ, 
যুগ্ম-আহ্বায়ক 
জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গল
(অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস, ডক্টরস ফর ডেমোক্রাসি, হেলথ সার্ভিস এসোশিয়েসন, শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগ, ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম)




দোল খেলতে যাওয়ার আগে লক্ষ্য রাখুন এই বিষয়গুলির উপর—


১. শারীরিক দুর্বলতা, সর্দি বা হালকা জ্বরের মতো লক্ষণ থাকলে, হোলি না খেলাই ভাল ৷ এমনকী বাইরে বেরোনরই প্রয়োজন নেই ৷


২. হোলির রঙ ও জল বেশিক্ষণ পর্যন্ত নিজের শরীরে লেগে থাকতে দেবেন না। 


৩. দোল খেলার কিছুক্ষণের মধ্যেই রঙ পরিষ্কার করে নিন।


৩. রঙে অ্যালার্জি থাকলে দোল না খেলাই ভালো।


৪. মাটি বা ডিমের মতো জিনিস দিয়ে দোল খেলা এড়িয়ে চলুন। 


৫. বাজার থেকে কেমিক্যাল যুক্ত রং কেনার পরিবর্তে বাড়িতেই অর্গ্যানিক বা ভেষজ রং তৈরি করুন।


৬. দোল এ বছর না খেলাই ভাল ৷ একান্ত খেললেও পরিবারের লোকজনদের সঙ্গেই খেলুন ৷ খুব ভিড় যেখানে হয়, সেই স্থানগুলি এড়িয়ে চলুন ৷


৬. ছোটো বাচ্চারা যাতে দোল খেলার সময়ে প্রচুর জল না ঘাটে, সেদিকে নজর রাখুন ৷


৭. বাড়িতে কেউ দোল খেলতে হলে স্যানিটাইজ করা এবং অন্যান্য কোভিড বিধিগুলি মেনে চলুন ৷


৮. জিনিসটা কিছুটা কঠিন হলেও দোল খেলার সময় মাস্ক পরে খেলতে পারলে সবচেয়ে ভাল ৷ ং


৯. দোল খেলার সময় বাড়িতে তৈরি জিনিসই খান ৷