কলকাতা: ব্লাড সুগার বেড়ে যাওয়া নিয়ে অনেক আলোচনা হয়। প্রয়োজনের থেকে রক্তে বেশি মাত্রায় শর্করা থাকলে কীভাবে চলতে হবে, কী বিপদ আসতে পারে। তা নিয়ে অনেকেই সচেতন। কিন্তু সুগার বা শর্করা এমন একটি প্রয়োজনীয় পদার্থ, যেটি প্রয়োজনের তুলনায় কমে গেলেও বিপদ হতে পারে, মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে কোনও ব্যক্তি।
বিষয়টি ঠিক কী?
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মানবদেহে রক্তে যতটা পরিমাণ শর্করার প্রয়োজন। তার চেয়ে কমে গেলে এই সমস্যা হয়। এই রোগটিকে হাইপোগ্লাইসেমিয়া (Hypoglycemia) বলা হয়ে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা থাকলে এবং তার ঠিক চিকিৎসা না করানো হলে আরও নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা তৈরি হতে পারে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, যাঁদের সুগার লেভেল পড়ে যাওয়ার সমস্যা রয়েছে। তাঁরা পোর্টেবল গ্লুকোজ মনিটর ব্যবহার করতে পারেন। যাতে কোনও লক্ষ্ণণ দেখলেই পরীক্ষা করে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
কোন লক্ষ্মণ দেখলেই সতর্কতা?
হাত-পা কাঁপতে পারে। ঘাম হতে পারে। ঝিমুনি বা এই ধরনের কোনও অস্বস্তি হতে পারে। হৃৎস্পন্দন বেড়ে গিয়েছে এমন অনুভব হতে পারে। মাথাব্যথা হতে পারে। হঠাৎ করে দুর্বল লাগতে পারে। ঘুমন্ত অবস্থাতেও এমন হতে পারে, সেক্ষেত্রে ঘুমের মধ্যেই অস্বাভাবিক ভাবে ঘেমে যাওয়া। ঘুম ভাঙার পরে অস্বাভাবিক ক্লান্তির মতো সমস্যা দেখা দেয়। এমন নানা ধরনের উপসর্গ দেখা যায়, যাঁদের হাইপোগ্লাইসেমিয়া রয়েছে। তবে ব্যক্তিভেদে উপসর্গ আলাদা আলাদাও হতে পারে।
কী করতে হবে?
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, একটুও সময় নষ্ট না করে ওই ব্যক্তিকে মিষ্টিজাতীয় কিছু খাওয়াতে হবে। চিনি, গুড় বা মধু খাওয়াতে হবে। গ্লুকোজ ট্যাবলেট, লজেন্স বা চকোলেট বার খাওয়ানো যায়। মিষ্টি কোনও পানীয় বা চিনি দেওয়া সরবত একটু একটু করে খাওয়ানো যায়। সন্দেশ, রসগোল্লার মতো মিষ্টিও কাজে আসবে। কিছুক্ষণ পরে যদি সমস্যা না মেটে, তাহলে ফের মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে। পোর্টেবল গ্লুকোজ মিটারে মেপে নেওয়া যায়। যদি রোগী ঘুমন্ত অবস্থায় থাকে, বা খাওয়ানোর মতো অবস্থায় না থাকে। তাহলে দ্রুত কোনও চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে।
আগে থেকে সতর্কতা:
সচেতন হলেই এই সমস্যা অনেকটা এড়িয়ে চলা সম্ভব হবে। কী কী উপসর্গ হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যাতে সহজেই সমস্যা চিনে ফেলা যায়। সঙ্গে লজেন্স, চকোলেট রেখে দেওয়া প্রয়োজন। যাতে ওই ব্যক্তি যেখানেই থাকুক, সমস্যা হলেই যাতে সঙ্গে সঙ্গে মিষ্টি জাতীয় কিছু মুখে দিতে পারেন। এছাড়াও, এমন সমস্যা থাকলে বেশিক্ষণ খালি পেটে থাকা যাবে না। নির্দিষ্ট সময় অন্তর খেয়ে নিতে হবে। চিকিৎসক যা ওষুধ দেবেন, শুধুমাত্র সেটিই নির্দিষ্ট পরিমাণে খেতে হবে। মদ্যপান এড়াতে হবে। অতিরিক্ত শরীরচর্চাও করা উচিত নয়। যাঁরা ইতিমধ্যেই কোনও জটিল রোগে আক্রান্ত, তাঁরা সবসময় ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলুন।
ডিসক্লেইমার : কপিতে উল্লেখিত দাবি, পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাপদ্ধতি/ডায়েট ফলো করার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ / চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন ও সেইমতো নিয়ম মেনে চলুন।
আরও পড়ুন: কতটা পরিমাণের বেশি নুন খেলেই রক্তচাপ থেকে স্ট্রেস বাড়তে পারে?