কলকাতা: কংক্রিটের জঙ্গলে থাকতে থাকতে হাঁফিয়ে ওঠেন অনেকেই। সামান্য সবুজের খোঁজে অনেকেই ছুটি পেলে যান প্রকৃতির কোলে। অনেকেই চেষ্টা করেন বাগান তৈরি করতে। কিন্তু জনবহুল শহরে সেই জায়গাই বা কোথায়। গাছ রাখলেও তার পরিচর্যা করার জন্য় সময়ও চাই। উপায় আছে। সবদিক বিচার করে বেছে নেওয়া যায় ইনডোর প্ল্যান্ট। ঘরের কোণে বা ছোট্ট ফ্ল্যাটের এক কোণায় সহজেই এঁটে যায়। পাশাপাশি যত্নআত্তিও বিশেষ করতে হয় এমন না। 


শুধু মাত্র ঘরের শোভা বাড়ানোই হয়। অনেকে বলে থাকেন, বাড়িতে ইনডোর প্ল্যান্ট রাখলে ঘরের বাতাসের মানও নাকি ভাল থাকে।


কী কী সুবিধে?
১. গাছ কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে বাতাসে অক্সিজেন ছাড়ে। অর্কিড, সাকুল্যান্ট গোত্রের কিছু কিছু গাছ রাতেও এই প্রক্রিয়া বজায় রাখে। ফলে ঘরে গাছ রাখলে ভাল রাখা যাবে বাতাসের মান।


২. ঘরে গাছ থাকলে বাড়ির ভিতরের পরিবেশে ঠান্ডা থাকে। অ্যালোভেরা, ফিকাস ট্রি-জাতীয় কিছু কিছু গাছ শুষ্ক মরসুমে ঘর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।


৩. ঘরের বাতাস শুদ্ধ করতেও সাহায্য করে বিভিন্ন ধরনের ইনডোর প্ল্যান্ট। বাতাস থেকে বিভিন্ন ধরনের ভোলাটাইল অর্গানিক কম্পাউন্ড (Volatile organic compounds) শুষে নেয় এই ধরনের গাছ।    
 
ঘরের জন্য ইনডোর প্ল্যান্ট বেছে নেওয়াও সহজ কাজ নয়। কতটা সময় দেওয়া যাবে, ঘরে কতটা জায়গা রয়েছে তার উপর ভিত্তি করেই বেছে নেওয়া যায় ইনডোর প্ল্যান্ট। একবার দেখে নেওয়া যাক, কোন কোন গাছের কথা ভেবে দেখা যায়। 


মানিপ্ল্যান্ট
এয়ার পিউরিফায়ার (air purifier) হিসেবে পরিচিত এই গাছ। মানিপ্ল্যান্টের একাধিক প্রজাতি রয়েছে। ঘরের মাঝে, টেবিলের উপরে, বারান্দা, পড়ার টেবিলের পাশে রাখা যায় এই গাছ। 


এরিকা পাম (areca palm)
এটিও অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি ইনডোর প্ল্যান্ট। বাতাস থেকে ক্ষতিকারক পদার্থ শুষে ফেলতে এর জুড়ি নেই। জানলার পাশে এই গাছ লাগানো যায়। বারান্দা থাকলে, সেখানে এরিকা পাম দিয়ে সাজানো যায়। ছত্রাক আক্রমণের লক্ষ্মণ দেখা যায় এই গাছে, ফলে নির্দিষ্ট সময় অন্তর খেয়াল রাখা প্রয়োজন।


অ্যালোভেরা (aloe vera)
ওষধিগুণ সম্পন্ন এই গাছটি ঘরের মধ্যেও রাখা যায়। ঘরে ছোট আকারের অ্যালোভেরা গাছ রাখলে দেখতে ভাল লাগে। ঘরের দুর্গন্ধ দূর করতেও সাহায্য করবে অ্যালোভেরা। বেশি জল লাগে না। অ্যালোভেরা পরিচর্যা করতেও বেশি সময় প্রয়োজন হয় না।


স্পাইডার প্ল্যান্ট (spider plant)
ইনডোর প্ল্যান্ট হিসেবে এর জুড়ি নেই। গাছের পাতার আকারের জন্য এটির এমন নাম হয়েছে। ঘর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য় করে স্পাইডার প্ল্যান্ট। পরিচর্যার জন্য খুবই কম সময় লাগে। সরাসরি সূর্যের আলো যায় না, এমন জায়গায় রাখা উচিত এই গাছ।


স্নেক প্ল্যান্ট (snake plant)
লম্বা, ঘন সবুজ রঙের পাতা দেখে এই গাছ চেনা যায়। এয়ার পিউরিফায়ার হিসেবে এর বেশ নামডাক রয়েছে। স্নেক প্ল্যান্টের খুব বেশি যত্নআত্তির দরকার হয় না। শুধু ঘরই না, স্নানের ঘরেও এই গাছ রাখা যায়। 


চাইনিজ ব্যাম্বু
বাঁশ গাছের মতোই দেখতে, তবে একেবারেই ছোট আকারের। ইনডোর প্ল্যান্ট হিসেবে এই গাছের জনপ্রিয়তাও ক্রমশ বাড়ছে। ফেংশুই মতে এই গাছ ঘরে রাখলে সৌভাগ্য আনে। এই কারণে এর আরেক নাম লাকি ব্যাম্বু (lucky bamboo) ছোট একটি পাত্রে অল্প জলের মধ্যে এই গাছ রাখা যায়।     


এছাড়াও আরও একাধিক ইনডোর প্ল্যান্ট প্রজাতিও রয়েছে হাতের কাছেই। পছন্দমতো বেছে নিয়ে সাজিয়ে ফেলা যায় ঘরের কোণ। 


আরও পড়ুন: যে অভ্যাসগুলির কারণে অল্প বয়সেই বুড়িয়ে যাচ্ছেন