কলকাতা : দড়ি টানাটানি। ছোটবেলায় খেলার সূত্রে এই খেলা সবারই জানা। পাড়ার বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান হোক বা স্কুলের খেলার অনুষ্ঠান। দড়ি টানাটানির খেলা দেখেননি এমন লোক পাওয়া কঠিন। নিজেও হয়তো খেলেছেন। ঘরোয়া নাম দড়ি টানাটানি হলেও, এর একটি গালভরা পোশাকি নাম হয়েছে। টাগ অফ ওয়ার (tug of war)। আজ ১৯ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক টাগ অফ ওয়ার ডে (international tug of war day)। 


খেলার পদ্ধতি-
দুটি দলের ভাগ করে এই খেলা হয়ে থাকে। ২টি দলেই সমান সংখ্যক প্রতিযোগী থাকেন। একটি দড়ির দুটি প্রান্ত ধরে দাঁড়ায় দুটি দল। নিজেদের দিকে দড়ি টেনে যে দলটি অন্য দলটিকে ফেলে দিতে পারবে, এই খেলায় তারাই বিজয়ী। দুটি দলের মধ্যে হলেও অনেক সময় দুই ব্যক্তির মধ্যেও হতেই পারে এই খেলা।


ইতিহাসের খোঁজে-
খুবই পুরনো এই খেলা ঠিক কবে শুরু হয়েছিল তা অবশ্য স্পষ্ট করে জানা যায় না। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বিশ্বের প্রায় সব প্রাচীন সংস্কৃতিতেই এই খেলাটির উল্লেখ পাওয়া যায়। ফলে মনে করা হয় দড়ি টানাটানি খেলা খুবই প্রাচীন। ভাইকিংদের মধ্যেও এর প্রচলন ছিল। কথিত রয়েছে, একটি আগুনের কুণ্ডকে মাঝে রেখে দুটি দল এই খেলা খেলত। দড়ি টেনে পরাজিত দলকে ওই আগুনের কুণ্ডে ফেলে দেওয়া ছিল মূল লক্ষ্য। পরে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি বিনোদনমূলক খেলায় পরিণত হয়েছে।  ইদানীং অনেক জায়গায় ছোট ডোবা বা একটি কাদাভর্তি জায়গা মাঝে রেখে এই খেলা হয়। 


অলিম্পিক্সের অংশ-
এখন আর অলিম্পিক্সে টাগ অফ ওয়ার নেই। তবে একসময় অলিম্পিক্সের অংশ ছিল এই খেলাটি। ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯২০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এই খেলাটি অলিম্পিক্সের অংশ হিসেবে খেলা হয়েছে। ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দে প্যারিস অলিম্পিক্সে প্রথম টাগ অফ ওয়ার খেলা হয়। ১৯২০ সালের পর আর অলিম্পিক্সের অংশ হয়নি এই খেলা। তবে একেবারে হারিয়েও যায়নি। আন্তর্জাতিক স্তরে একটি সংগঠন হয়েছে। যার নাম টাগ অফ ওয়ার ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশান (Tug of War International Federation)। বর্তমানে আইওসি-র(international olympic committee)পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতি চার বছরে আন্তর্জাতিক স্তরে টাগ ওফ ওয়ার (tug of war) ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হয়। এখন প্রতিযোগীদের ওজনের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন বিভাগে খেলা হয়ে থাকে।


সুযোগ রয়েছে ভারতেও-
আমাদের দেশেও এই খেলা নিয়ে উদ্যোগ রয়েছে। ১৯৫৮ সালে ভারতে তৈরি হয়েছিল টাগ অফ ওয়ার ফেডারেশান অফ ইন্ডিয়া। ১৯৭৮ সালে  টাগ অফ ওয়ার ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশান থেকে স্বীকৃতি পায় তারা। ভারতের এই সংগঠনের তরফে প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়ে থাকে। 


স্কুল-কলেজে মজার ছলে এই খেলা তো কতই খেলেছেন। এবার পেশাদারিভাবে খেলতে চান নাকি? সুযোগ কিন্তু হাতের কাছেই।


আরও পড়ুন- মাঝ আকাশে রোমাঞ্চের স্বাদ, চেখে দেখবেন নাকি?