কলকাতা : কথাতেই আছে, বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। অর্থাৎ, সারা বছর কোনও কোনও আচার-অনুষ্ঠান-উৎসব লেগেই রয়েছে বাঙালির। তারই অন্যতম জামাইষষ্ঠী। ফি বছর বাংলার জ্যৈষ্ঠ মাসে দিনটি পালন করা হয়। এবারও সেইমতোই শ্বশুরবাড়িতে পাত পেড়ে ভূরিভোজ করবেন আদরের জামাইরা।
কিন্তু, কবে রয়েছে জামাইষষ্ঠী ?
এবার জামাইষষ্ঠী রয়েছে আগামী বৃহস্পতিবার। অর্থাৎ, ১০ জ্যৈষ্ঠ (১৪৩০), ২৫ মে । আগের দিন রাত ৩ টে ২৮ মিনিটে ষষ্ঠী শুরু হয়ে থাকছে বিকাল ৪টা ৪১ মিনিট পর্যন্ত। আর ষষ্ঠীর দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার শুভকর্মের সময় দুপুর ২টো ৫৩ মিনিট পর্যন্ত। কালবেলাদি শুরু হয়ে যাচ্ছে ২ টো ৫৩ মিনিটে, থাকবে সন্ধ্যা ৬টা ১২ মিনিট পর্যন্ত। অর্থাৎ, উপাচার পালনের উপযুক্ত সময় ২ টো ৫৩ মিনিটের মধ্যে। পরের দিন অর্থাৎ ১১ তারিখে বিকাল ৫টা ২৬ মিনিটে শেষ হবে।
জামাইষষ্ঠীর ইতিহাস-
কথিত আছে, এক লোভী মহিলা ছিলেন। তিনি নাকি হাতের কাছে যা-ই পেতেন, তা-ই খেয়ে নিতেন। তারপর যাবতীয় দোষ চাপিয়ে দিতেন বিড়ালের উপর। দোষ না করেও দোষী হওয়ায় এনিয়ে মা ষষ্ঠীর কাছে অনুযোগ জানায় বিড়াল। তখন মা ষষ্ঠী ওই মহিলাকে তাঁর কৃতকর্মের জন্য শাস্তি দেন। তাঁর সন্তানদের নিয়ে যাওয়া হয়। তখন ওই মহিলা অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তিনি দেবীর কাছে দয়া ভিক্ষা করেন। তখন তাঁকে বলা হয়, সন্তানদের ফিরে পেতে গেলে জ্যৈষ্ঠ মাসের ষষ্ঠ দিনে কিছু উপাচার পালন করতে। তার পর থেকেই নাকি বাঙালির জামাইষষ্ঠী পালন শুরু। এই দিনে বাঙালি মহিলারা তাঁদের সন্তানদের দীর্ঘায়ু কামনা করে ষষ্ঠীর পুজো করেন।
এই দিনে শাশুড়িরা মেয়ে-জামাইয়ের সুখ-সমৃদ্ধির জন্য মা ষষ্ঠীর পুজো করেন। পুজোর মাধ্যমে জামাইকে স্বাগত জানানো হয়। দেওয়া হয় উপহার। শ্বশুরবাড়ির তরফে যেমন জামাইকে উপহার দেওয়া হয়, তেমনই পাল্টা জামাইও শাশুড়ির জন্য় উপহার নিয়ে যান।
খাদ্যতালিকা-
আবার খাবার-দাবার ? বাঙালির কোনও অনুষ্ঠাই ভূরিভোজ ছাড়া সম্পন্ন হয় না। জামাইষষ্ঠীর দিনে লুচি-পুরি-আলুর দম দিয়ে শুরু হয় ভোজন। পাতে পড়ে আম-লিচুর মতো গরমের ফল। দুপুরের খাবার -ভাত, মাছ, খাঁসির মাংস, সুগন্ধি ডাল, পোস্তর বড়া, বেগুন-পটল ভাজা- মিষ্টি দই, নানা রকমের মিষ্ট-সহ নানা পদ।
আরও পড়ুন ; জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে অর্ধদিবস ছুটি ঘোষণা রাজ্যের