কলকাতা: আগে তেমন একটা দেখতে পাওয়া যেত না এই ফল। তবে অন্তত কয়েক বছর ধরেই বাজারে-দোকানে প্রায়শই দেখা যায় সবজে এই ফলটিকে। নাম কিউই (Kiwi)। যতদিন যাচ্ছে, বাঙালির ঘরে পরিচিতি পাচ্ছে ফলটি। শুধু দেখতে সুন্দর বলে নয়, এর পুষ্টিগুণও নজরে পড়ার মতো।


সবজে রঙা এই ফল শাঁসালো, টকজাতীয়। ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্য অরুণাচলে বহু পরিমাণে এর চাষ হয়। বিভিন্ন উপাদেয় রান্নাতেও ব্যবহার হয় এই ফল। এই ফলে Actinidin নামক উৎসেচক রয়েছে যা মাংস নরম করতেও সাহায্য করে। কোনও কোনও বিশেষজ্ঞ বহু পোষকপদার্থের সমাহার থাকার জন্য কিউইকে সুপারফুডও বলে থাকেন।


ভিটামিনে ভরপুর:
কিউইতে একাধিক ভিটামিন রয়েছে। মূলত ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই-তে সমৃদ্ধ কিউই। এই দুটিই রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়ক। এতে একাধিক অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস রয়েছে, যা শরীরের দূষিত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে। Nutrition and Cancer-জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছিল যে কিউই-এর ক্যান্সারবিরোধী গুণও রয়েছে।


ফাইবার সমৃদ্ধ:
পেট ভাল রাখতেও ব্যবহার হয় কিউই। এই ফলে ফাইবার রয়েছে, রয়েছে একাধিক হজম সহযোগী এনজাইম। যা আদতে পেট ভাল রাখে। কিউইতে Soluble এবং Insoluble -দুই রকমেরই ফাইবার রয়েছে। এছাড়া অন্ত্রে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যায় ভারসাম্য রাখতেও সাহায্য করে কিউই। প্রোটিন বিশ্লেষণে সাহায্য করে Actinidin- যা কিউই-তে রয়েছে।


অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের উৎস:
শরীরের দূষিত পদার্থ বের করতে পারে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। প্রদাহ রুখতেও সাহায্য করে। এই ফলে একাধিক কার্টেনয়েডন (Cartenoids) রয়েছে। যেমন lutein, Zeaxanthin- এগুলি চোখ, মস্তিষ্ক, লিভার বা যকৃৎ এবং ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয়।


রক্ত তঞ্চনে সাহায্য:
কিউইতে ভিটামিন কে (Vitamin K) রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। যা শরীরে রক্ততঞ্চনের স্বাভাবিক হার বজায় রাখতে সাহায্য করে। রক্ত জমাটের হার অতিরিক্ত হওয়া বা অস্বাভাবিক কমে যাওয়া দুটিই ক্ষতিকর। ফলে এই হার স্বাভাবিক থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।


একাধিক খনিজে ভরপুর:
মানবদেহের শারীরবৃত্তীয় কাজ ঠিকমতো চালাতে একাধিক খনিজের উপস্থিতি প্রয়োজন। যার মধ্যে অন্যতম ২টো হল পটাশিয়াম ও কপার। এই দুটিই রয়েছে কিউই-তে। শরীর জলের পরিমাণ ঠিক রাখতে সাহায্য করে পটাশিয়াম। যাতে কোষে জলের পরিমাণ কমে না যায়। রক্তচাপও স্বাভাবিক থাকে এতে। পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় থাকা এবং রক্তকোষ সুস্থ থাকার জন্য তামার প্রয়োজন রয়েছে।  


এছাড়া হার্ট ভাল রাখতেও কাজ করে কিউই। এই ফলে উচ্চমাত্রায় সেরোটোনিন (Serotonin) রয়েছে। যা ভা ঘুমের সহায়ক। 


সাধারণ ফলের মতোই খাওয়া যায় কিউই। পাশাপাশি বিভিন্ন স্যালাডে, রান্নায়, স্মুদিতে ব্যবহার হয় কিউই। European Journal of Nutrition-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে জানানো হয়েছে, কিউই-এর খোসাতেও বহু পরিমাণে পুষ্টিগুণ রয়েছে। তার জন্য় খোসা-সহ খাওয়া উচিত কিউই।


ডিসক্লেইমার : কপিতে উল্লেখিত দাবি, পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাপদ্ধতি/ডায়েট ফলো করার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ / চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন ও সেইমতো নিয়ম মেনে চলুন। 


আরও পড়ুন: আর্থিক সঙ্কট ? লবঙ্গর এই প্রতিকারে মিলতে পারে সুফল