কলকাতা: গত ৩০ বছরে অনেকটা পাল্টে গিয়েছে স্বাস্থ্যের ছবি। আগেকার সময় যে যে রোগে মৃত্যুর হার ছিল, সেই রোগগুলির বেশ কিছু এখন তালিকায় পিছিয়ে গিয়েছে। পিছিয়ে গিয়েছে অন্য কয়েকটি রোগের কাছে। সেগুলির মধ্যেই রয়েছে স্নায়ুর রোগ। স্নায়ুবৈকল্যের কারণে বেশ কিছু রোগ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এই রোগগুলির হার বর্তমানে বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি ল্যানসেট নিউরোলজি জার্নালের একটি গবেষণায় তেমনটাই বলা হয়েছে। ২০২১ সালের একটি পরিসংখ্যান পেশ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, সারা বিশ্বে ৩.৪ বিলিয়ন মানুষ নিউরোলজিকাল ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। অর্থাৎ স্নায়ুজনিত রোগে ভুগছিলেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, সেই রোগেই মৃত্যুর সংখ্যাও ছিল বেশি। এবার এই নিয়েই সতর্কবার্তা দিতে চাইল ল্যানসেট নিউরোলজির ওই জার্নাল।
কোন কোন রোগের হার বাড়ছে ?
চিকিৎসকের কথায়, নিউরোলজিকাল ডিসঅর্ডারগুলির মধ্যে রয়েছে ডিমেনশিয়া, স্ট্রোক, মেনিনজাইটিসের মতো সমস্যাগুলি। কেন এই রোগগুলির হার বড়ছে, তার কারণও জানিয়েছেন গবেষকরা। গত কয়েক দশকে বিশ্বের জনসংখ্যা বিপুল হারে বেড়েছে। এর পাশাপাশি বেড়েছে পরিবেশের দূষণ, জীবনযাপনের নানা সমস্যা।
কতটা বেড়েছে এই ধরনের রোগের হার ?
গবেষকরা জানাচ্ছেন, ১৯৯০ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মোট ৩০ বছরের একটি পরিসংখ্যানের কথা। এই ৩১ বছরের সময়কালে ১৮ শতাংশ বেড়েছে নানা ধরনের স্নায়ুজনিত রোগের হার। পাশাপাশি কমেছে মানুষের আয়ুও। আগে ১৯৯০ সালে ৩৭৫ মিলিয়ন বছর আয়ু কমত। বর্তমানে তা ৪৪৩ মিলিয়ন বছরে এসে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ আগের তুলনায় আরও কমছে মানুষের আয়ু।
কোভিডও দায়ী !
গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ,ইনজুরিস অ্যান্ড রিস্ক ফ্যাক্টর স্টাডিজ ২০২১ সালের পরিসংখ্যান অনুসারে জনসংখ্যার মধ্যে বেশি বয়সের মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। যার ফলে মোট আয়ুও কমতির পথে। স্নায়বিক স্বাস্থ্যহানির পিছনে বেশ কিছু রোগের বড় ভূমিকা রয়েছে বলে জানান গবেষকরা। রোগের তালিকায় রয়েছে স্ট্রোক, নিওন্যাটাল এনসেফালোপ্যাথি (ব্রেন ইনজুরি), মাইগ্রেন, অ্যালজাইমার্স রোগ, ডিমেনশিয়া, ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি, মেনিনজাইটিস, এপিলেপ্সি অর্থাৎ খিঁচুনি। অন্যদিকে বিভিন্ন জন্মগত রোগের নাম রয়েছে এই তালিকায়। যেমন প্রিটার্ম বার্থ, অটিজম স্প্রেকট্রাম ডিসঅর্ডার, নার্ভাস সিস্টেম ক্যানসার ইত্যাদি। প্রসঙ্গত, এর পিছনে কোভিডও দায়ী। কোভিডের জেরে স্নায়ুর রোগের হার কিছুটা হলেও বেড়েছে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের।
আরও পড়ুন - Health News: ধূমপান না করলেও রয়েছে স্ট্রোকের ঝুঁকি, কেন ?