কলকাতা: বাংলায় যখন মকর সংক্রান্তি (Makar Sankranti) পালন করা হচ্ছে, তখনই অসমে উদযাপন করা হচ্ছে মাঘ বিহু উৎসবের। পূরাণ মতো জানা যায়, পৌষ ও মাঘ মাসের সংক্রান্তির দিন থেকে শুরু হয় মাঘ বিহু উৎসবের (Magh Bihu 2022)। এই উৎসব দুদিন ব্যাপি উদযাপন করা হয়। কথিত রয়েছে, বিহু উৎসবে ফসল কাটার উৎসব হিসেবে পালিত হয়। এই সময়ে সেখানকার মানুষ বাঁশ ও পাতা দিয়ে কুঁড়েঘর তৈরি করে। এই উৎসবের প্রথমদিনটিকে বলা হয় উরুকা। এই উরুকা উদযাপনে মানুষ এই বাঁশ ও পাতা দিয়ে তৈরি অস্থায়ী ঘরে দিন যাপন করেন। রাতও কাটান সেখানে। এই সময়ে মাছ ধরারও রীতি রয়েছে। 


মাঘ বিহু উৎসবে মাঠে আগুন জ্বালিয়ে উৎসব পালনের রীতি রয়েছে অসমে। অসমের জনপ্রিয় বিহু নাচ ও গানে উৎসবে মেতে ওঠেন সেখানকার মানুষ। নাচ ও গানের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উৎসবের শেষে মিষ্টি ও বিভিন্ন রকমের খাবার আশেপাশের মানুষের মধ্যে বিতরণেরও রীতি রয়েছে। মকর সংক্রান্তি কিংবা পৌষ পার্বণ উপলক্ষে যেমন এই সময়ে বাংলার মানুষ বাড়িতে পিঠে পুলি তৈরি করেন, তেমনই মাঘ বিগু উৎসবে অসমের মানুষও বিভিন্ন রকমের পিঠে তৈরি করেন বাড়িতে। নাড়ু, তিলের তৈরি পিঠে, নারকেলের পিঠে তৈরি করেন। পিঠের সঙ্গে সেখানকার মানুষ পাড়া প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে খৈ, মুড়ি, সন্দেশ, চিড়ে প্রভৃতিও বিলি করেন। 


আরও পড়ুন - Pongal 2022: পোঙ্গল কথার মানে কি? কীভাবে এই উৎসব পালন করা হয়?


জানা যায়, মাঘ বিহু উৎসবের সময় এলাকার যুবকরা অন্যের বাড়ি থেকে শস্য, ক্ষেত থেকে ফলও চুরি করেন। এই সময়ে অন্যের বাড়ি থেকে শস্য কিংবা ফসল চুরির রেওয়াজ বহু বছর ধরে চলে আসছে। উৎসবের প্রথম দিন পুকুর, খাল, বিল কিংবা যেকোনও জলাশয় থেকে সবাই একসঙ্গে মাছ ধরার প্রচলন রয়েছে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সমস্ত মানুষ এই মাঘ বিহু উৎসবে একসঙ্গে মেতে ওঠেন। কথিত আছে, বহু বছর আগে এই মাঘ বিহু উৎসবের সময় মোরগের লড়াই এবং মহিষের লড়াইয়ের প্রচলন ছিল। কিন্তু কালক্রমে মহিষ কিংবা মোরগের লড়াইয়ের রীতি কিছুটা ম্লান হলেও উৎসব উদযাপনের অন্যান্য রীতি এতটুকুও কমেনি। এই উৎসবে তিলের তৈরি পিঠেই প্রধান বলে মনে করা হয়। একে অপরের সঙ্গে নতুন ফসলের তৈরি খাবার তৈরি করে, নাচ, গানের মাধ্যমে উৎসবে মেতে ওঠেন।