মাইগ্রেন একটি দীর্ঘস্থায়ী স্নায়ুর রোগ। যা সারা বিশ্বে ১০ কোটিরও বেশি মানুষ মাইগ্রেনে ভোগেন। মাইগ্রেনে ভুগে বহু মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত। মাইগ্রেন নাকি ওষুধ সারে না, এমন ধারণা অনেকের। কিন্তু ঠিক সময়ে নিউরোলজিস্টের কাছে গেলে সারতে পারে মাইগ্রেন। রেহাই মিলতে পারে দীর্ঘ মেয়াদী স্নায়ুর অসুখ থেকে।
“ যদি কারও ঘন ঘন মাথাব্যথা হয়, তাহলে দোকান থেকে পেন কিলার কিনে না খেয়ে , নিউরোলজিস্টের সাহায্য নেওয়া প্রয়োজন '' , বলছেন চিকিৎসকরা।
- গৃহবধূরা অনেক সময়ই মাথা ব্যথাকে নিয়মিত গৃহস্থালীর চাপে মাথাব্যথা হিসেবে ভেবে নেন।
- ওয়ার্কিং উওম্যান-রা মনে করেন কাজের চাপের জন্যই তাঁদের নিত্যদিন মাথাব্যথা।
- চিকিৎসকরা মনে করেন, সচেতনতার অভাবেই মাইগ্রেন সারে না। রোগ নির্ণয় হয় দেরিতে , তাই চিকিৎসার হারও কম।
- প্রায় অর্ধেক রোগী তখনই আসেন, যখন তারা সত্যিই বড় সমস্যায় পড়েন, বলেছেন ডা. প্রশান্ত মাখিজা, ( কনসালট্যান্ট নিউরোলজিস্ট, ওয়াকহার্ট হাসপাতালে, মুম্বই সেন্ট্রাল)। তিনি মনে করছেন মাইগ্রেন নিয়ে বেশ কিছু ভুল ধারণা রয়েছে যা কাটিয়ে ফেলা দরকার।
মিথ # 1: মানুষ বিশ্বাস করেন, মাইগ্রেনের কোনও চিকিত্সা নেই
সত্যি: উন্নত থেরাপি এবং জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে, মাইগ্রেন ভালভাবে সারিয়ে তোলা যায়। মাইগ্রেনে আক্রান্ত ব্যক্তিরা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে।
মিথ # 2: মহিলাদের অনেকেই মনে করেন মাইগ্রেন স্বাভাবিক জীবনের একটি অংশ এবং প্রত্যেকেরই মাথাব্যথা হয়।
সত্যি : ২০ - ৪০ বছর বয়সী মহিলাদের মধ্যে মাত্র ১০-১৫% মাইগ্রেন আছে। মাইগ্রেন একটি নির্দিষ্ট অসুখ, এবং এর জন্য অবিলম্বে চিকিৎসার প্রয়োজন।
মিথ #3: মাথাব্যথা সাধারণত চোখের দৃষ্টি সংক্রান্ত সমস্যার সঙ্গে যুক্ত।
সত্যি : অনেকে মাথাব্যথার সমস্যাকে তুচ্ছ মনে করেন। ওভার দ্য কাউন্টার ওষুধ কিনে সাময়িক রেহাই মেলে। কিন্তু চিকিৎসা ছাড়া মাইগ্রেন সারে না।
মিথ # 4: মাথাব্যথার সঙ্গে পরিবেশের কোনও যোগ নেই।
সত্যি : বারবার মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব? বেশি আলো আর চ্যাঁচামেচিতে দ্বিগুণ হয় যন্ত্রণা? এগুলিই মাইগ্রেনের উপসর্গ, তাতেই বুঝতে হবে আমনার মাথার যন্ত্রণা সাময়িক নয়, মাইগ্রেন হতে পারে। আর এর চিকিৎসা করতে পারেন নিউরোলজিস্টরা।
মিথ #5: মাইগ্রেনের সাথে জিনের কোনও সম্পর্ক নেই।
সত্য: মাইগ্রেন জিনগত কারণেও পেয়ে থাকেন। মা-ঠাকুমা বা পূর্বসূরিদের কারও মাইগ্রেন থাকলে আপনাকে বাড়তি সতর্কতা নিতেই হবে।
ডা. জয়দীপ রায় চৌধুরীর ( কনসালট্যান্ট নিউরোফিজিশিয়ান, যশোদা হসপিটালস, হায়দরাবাদ) মতে, “ অনেকেই মাইগ্রেন সম্পর্কে সঠিক জানেন না। ৫% রোগীর তো cervical spondylitis বা মস্তিষ্কে ইনফেকশন হিসাবে ভুল চিকিৎসা হয়। এর জন্য আরো সচেতন হতে হবে। 8 ঘণ্টা পর্যাপ্ত ঘুম, সময়মতো খাবার খাওয়া এবং মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকার মতো সাধারণ জীবনধারার পরিবর্তনের মাধ্যমে মাইগ্রেন নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।”