কলকাতা: গোটা শরীরটাই একটি ধাতব সিলিন্ডারের মধ্যে। একঝলকে যা দেখলে একটু চমকে উঠতে হয়। কিন্তু ওই সিলিন্ডারটি নিয়েই টানা ৭০ টা বছর কাটিয়েছেন পল। পল আলেক্সান্ডার। পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি দিন কাটিয়ে যাওয়া পোলিং সারভাইভার। পোলিং রোগের কবলে পড়লেও বাঁচতে চেয়েছিলেন পল। বেঁচেও ছিলেন, দৃপ্ত সেই বাঁচা। কারণ এই লোহার সিলিন্ডারের শরীর নিয়েও জীবনের সম্পূর্ণ আস্বাদ নিয়েছিলেন পল। সেই জীবন অবশ্য থামল এবার ৭৮ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন পল আলেক্সান্ডার। কোভিডের পর থেকেই শরীর ভাল ঠেকছিল না পলের। গত কয়েক সপ্তাহে শরীর অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়ে। আমেরিকার ডালাস হাসপাতালে ভর্তি করা হয় পলকে সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক পোলিং সারভাইভার।


ছয় বছর থেকে তাঁর নাম ‘পোলিং পল’


মাত্র ছয় বছর বয়সে তিনি পোলিং আক্রান্ত হন। সেই সময়ই তাঁকে রোগের সঙ্গে লড়াই করতে চেয়েছিলেন পল। কিন্তু শ্বাস নেওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলেন পল। ফুসফুস অকেজো হয়ে যায় তাঁর। সেই সময় তাঁকে বাঁচাতে ধাতব ফুসফুসের ব্যবস্থা করা হয়। একটি ধাতব সিলিন্ডার তৈরি হয়। যার মধ্যে পলকে থাকতে হত। ছিলেন টানা ৭০ বছর। ‘পোলিং পল’ বিশেষভাবে সক্ষম হলেও জীবনের সব চ্যালেঞ্জই সামলেছেন সাফল্যের সঙ্গে। পড়াশোনার পর তিনি কলেজে ভর্তি হন। সেখানে গিয়ে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন পল আলেক্সান্ডার। এর পর আইন নিয়ে প্র্যাকটিসও শুরু করেছিলেন পল। 


গিনিস বুকে ম্যান ইন দ্য আয়রন লাং


যথার্থ অ্যাখ্যাই পেয়েছিলেন পল। ম্যান উইথ আয়রন লাং অ্যাখ্যা দেওয়া হয়েছিল পলকে। হবে নাই বা কেন। পলের ফুসফুস আদতেই ছিল ধাতব। একটি ধাতুর সিলিন্ডারের মধ্যেই ছিল তাঁর গোটা শরীর। শুধু মাথাটি ছিল বাইরে। ওই ধাতব সিলিন্ডারের ওজন ছিল প্রায় ৩০০ কেজি। পরে অবশ্য আরও উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্র বাজারে এসেছিল। চিকিৎসকরা তাঁকে যন্ত্র পাল্টে নেওয়ার কথাও বলেন। কিন্তু রাজি হননি পল। গিনিস বুকের নিরিখে পলের এই জীবন একটি রেকর্ড ছিল। সেই রেকর্ড অর্জন করে নেন ম্যান ইন দ্য আয়রন লাং। 


কী বলছেন তাঁর ভাই


পলের ভাইয়ের কথায়, সারা জীবন অন্যের সাহায্য করেছেন পল। লিখেছেন একটি বইও। ১৫৫ পৃষ্ঠার বইটি একটি আত্মজীবনীও লেখেন পল। সেখানে তাঁর জীবনের নানা কাহিনি ফুটে উঠেছে। সেই বইটিই পাঠকেদের জন্য রেখে চলে গেলেন পল আলেক্সান্ডার।


আরও পড়ুন - Health Tips: ছোটদের মধ্যেও এখন ঘন ঘন কিডনির সমস্যা, কেন ?