নয়াদিল্লি : পরিবেশ রক্ষার্থে যতই প্লাস্টিক বর্জনের ডাক দেওয়া হোক না কেন, মানুষের ব্যবহৃত জিনিসের অধিকাংশতেই আছে প্লাস্টিক। খাবার রাখার ব্যাগ, কন্টেনার থেকে জলের বোতল, সবেতেই আছে প্লাস্টিক। খাবার গরম করার পাত্র থেকে বাচ্চার খেলনা, সবেতেই প্লাস্টি। কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে নানা খাবারেও প্লাস্টিকের অস্তিত্ব।  সেই প্লাস্টিকের কণা শরীরে প্রবেশ করে ও বাসা বেঁধে ফেলে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অর্গ্যানে। গবেষণায় আগেই উঠে এসেছিল এমন তথ্য। মস্তিষ্কেও পাওয়া যাচ্ছে প্লাস্টিকের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণা। আর এর ফলে কঠিন কঠিন রোগের প্রকোপ বাড়ছে। শরীরে প্লাস্টিক জমা হওয়ার  কুপ্রভাব পড়তে পারে ভ্রুণেও। এমনটাই বলছে সাম্প্রতিক গবেষণা। 


মাইক্রোপ্লাস্টিক (Microplastics) যদি গর্ভবতী মায়ের শরীরে থেকে থাকে , তাহলে তাঁর শরীরে তৈরি হওয়া  ভ্রূণও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। Rutgers University র একটি গবেষণায় এই তথ্য সামনে এসেছে। প্রাথমিক ভাবে পরীক্ষাটি করা হয়েছে ইঁদুরের উপর। তাতে দেখা গিয়েছে সদ্যোজাত ইঁদুরের মস্তিষ্কে , লিভারে, কিডনিতে ও হার্টে প্লাস্টিকের টুকরো পাওয়া যায়। এই রিসার্চের মাধ্যমেই দেখা যায়, গর্ভধারণের সময় মাইক্রোপ্লাস্টিক প্লাসেন্টার মধ্য দিয়ে প্রবেশ করতে পারে ভ্রূণে। আর সদ্যোজাতর মস্তিষ্ক, হৃদপিণ্ডর মতো অর্গানে যদি এমন ক্ষতিকারক প্লাস্টিক জড়ো হয়, তাহলে কিন্তু শরীর রোগের ডিপো হতে পারে। ভবিষ্যতে বাসা বাঁধতে পারে মারণ রোগও। 


Rutgers Health study র স্টাডি অনুসারে, গবেষকরা দীর্ঘদিন ধরে পরীক্ষা করে বুঝতে পেরেছেন,  মাইক্রো আর ন্যানোপ্লাস্টিকের কণা পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ে অক্সিডেশনের মাধ্যমে। এছাড়া নানা প্লাস্টিকের জিনিসের ব্যবহার থেকে। এরপর তা শ্বাসপ্রশ্বাস ও খাবার - দাবারের মাধ্যমে ঢুকে পড়ে শরীরে। তারপর এইসব মারাত্মক জিনিস প্লাসেন্টার দেওয়াল ভেদ করে ভ্রূণের তন্তুতে ঢুকে পড়ে। তবে একটা জিনিস তখনও ভাবাচ্ছিল বিজ্ঞানীদের, সন্তান জন্ম হয়ে যাওয়ার বহু পরেও কি এই প্লাস্টিকের কণাগুলো এভাবেই বহাল তবিয়তে থেকে যায় শরীরে? তবে দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা নজর রেখে দেখেছেন, অন্তত ইঁদুরের ক্ষেত্রে তো এসব ক্ষতিকর জিনিস পাকাপাকি ভাবে শরীরেই থেকে যায়। জন্মের দুই সপ্তাহ পর, দুটি নবজাতক ইঁদুরের শরীরে মাইক্রো এবং ন্যানোপ্লাস্টিক পাওয়া গিয়েছিল। উভয় ক্ষেত্রেই, গর্ভাবস্থায় তাদের মায়েরা এই  ধরনের প্লাস্টিক-কণা শ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করেছিল।  তা গর্ভস্থ ইঁদুরদের ফুসফুস, লিভার, কিডনি, হার্ট এবং মস্তিষ্কের টিস্যুতে ঢুকে পড়ে। আর যেসব মায়েরা এমন কিছু শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে পায়নি, তাদের বাচ্চাদের শরীরেও এমন কিছুই পাওয়া যায়নি। 


এবার এই তথ্যের উপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে গবেষণা চালানো হবে মানুষের উপর।  


আরও পড়ুন : 


এদিনই মরা ছেলেকে পুকুরে স্নান করিয়ে ফিরে পেয়েছিলেন সওদাগর ! তারাপীঠে আজ মা-তারার আবির্ভাব তিথি